Advertisement

মাগুরায় জিপিএ–৫ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসে উচ্ছ্বসিত কৃতী শিক্ষার্থীরা

প্রথম আলো

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট, ২০২৫

অনুষ্ঠানে অনলাইন কুইজ বিজয়ী শিক্ষার্থীদের বই উপহার দেওয়া হয়। আজ সোমবার সকালে মাগুরা জেলা মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো
অনুষ্ঠানে অনলাইন কুইজ বিজয়ী শিক্ষার্থীদের বই উপহার দেওয়া হয়। আজ সোমবার সকালে মাগুরা জেলা মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

সমস্যাবিহীন কোনো সফলতা আসে না। সমস্যা এলে তা মোকাবিলা করতে হবে। হার মানা বা এড়িয়ে যাওয়া চলবে না। আর কখনো কোনো পরিস্থিতিতে মা–বাবাকে কষ্ট দেওয়া যাবে না। পরীক্ষায় ভালো ফল করা যেমন জরুরি, সেই সঙ্গে সহনশীল, মানবিক ও ভালো মানুষ হওয়া জরুরি। তাহলেই পরিবার, সমাজ ও দেশ ভালো থাকবে।

আজ সোমবার সকালে মাগুরা জেলা মিলনায়তনে শিখো–প্রথম আলো আয়োজিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ও গুণীজনেরা এ কথা বলেন।

‘স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো’ স্লোগানে শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম শিখোর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথম আলোর আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেয় মাগুরার চার উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থী। তাদের অনেকের সঙ্গে ছিলেন অভিভাবকেরা। আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই কনকা–গ্রি এবং সহযোগিতায় কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, কোয়ালিটি গ্রুপ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, আকিজ টেলিকম লিমিটেড, আম্বার আইটি লিমিটেড, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।

সকাল ৯টা থেকে শহরের নোমানী ময়দানে জেলা মিলনায়তনের সামনে জড়ো হতে থাকে কৃতী শিক্ষার্থীরা। তাদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে মিলনায়তন চত্বর। সংবর্ধনায় নিবন্ধনের আমন্ত্রণ কার্ড হাতে নিয়ে সারিবদ্ধভাবে কৃতী শিক্ষার্থীরা সংগ্রহ করে ক্রেস্ট ও স্ন্যাকস। সবার চোখেমুখে উচ্ছ্বাস। কেউ কেউ বন্ধুদের সঙ্গে সেলফি তুলছিল। পাশাপাশি চলছিল কুশল বিনিময়।

সকাল ১০টার দিকে বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আয়োজন। জাতীয় সংগীত শেষে সম্প্রতি উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথিরা। এরপর মাগুরা বন্ধুসভার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারহানা সুলতানা পম্পার সঞ্চালনায় শুরু হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বক্তব্য পাঠ করেন প্রথম আলোর মাগুরা প্রতিনিধি কাজী আশিক রহমান।

এরপর অতিথি ও শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে চলে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা। অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ২০২১ সালে আইপিডিসি প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা পুরস্কার পাওয়া শালিখা থানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীবাস চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘সূর্যের তাপ যেমন তোমাদের সহ্য করতে হবে, তেমনি বাবা–মায়ের যেকোনো আচরণ তোমাদের সহ্য করতে হবে। তাঁদের সঙ্গে কখনো খারাপ আচরণ করা চলবে না। কারণ, তাঁরা তোমাদের বড় করে তুলতে অনেক পরিশ্রম করেন।’

আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন ভালো কাজের হোটেল, ডেইলি টেন স্কুল ও ইয়ুথ ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি পঞ্চম শ্রেণিতে একটা নাটক দেখে ভালো কাজে উৎসাহিত হই। ভালো কাজ একটা নেশার মতো। এটা মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। ছোট থেকেই বড় উদ্যোগের সৃষ্টি হয়। তাই তোমরা এখন থেকেই প্রতিদিন অন্তত একটা ভালো কাজ করার চেষ্টা করবে।’

প্রথম আলোর নানা ইতিবাচক উদ্যোগ তুলে ধরে বক্তব্য দেন ঝিনাইদহের নিজস্ব প্রতিবেদক আজাদ রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রথম আলো বিশেষ করে তরুণ পাঠকদের কথা বিবেচনায় সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। তোমরাই সামনে দেশের নেতৃত্ব দেবে। তাই আমরা চাই, তোমরা ভালো মানুষ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করো।’

অনুষ্ঠানে মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর বিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ–৫ পাওয়া শিক্ষার্থী রাফসান ইসলাম বলে, ‘যেকোনো ভালো কাজের স্বীকৃতি আরও ভালো কাজে অনুপ্রেরণা জোগায়। আজকের এই সংবর্ধনার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। শিখো ও প্রথম আলোসহ যারা এ আয়োজন করেছে, তাদের ধন্যবাদ জানাই আমাদের মূল্যায়ন করার জন্য।’

কানুটিয়া আব্দুল আলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফসা শারমিন বলে, ‘প্রথম আলো নানাভাবে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকে। আশা করি, সামনেও তারা শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’

মিথ্যা, মুখস্থ বিদ্যা ও মাদকের বিরুদ্ধে শপথ পাঠসহ অনুষ্ঠানে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে চলে অনলাইন কুইজ। কুইজ বিজয়ী ১০ শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার হিসেবে বই তুলে দেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন মাগুরা বন্ধুসভার সভাপতি শিহাব উদ্দিন।

Lading . . .