বাগেরহাটে-৪ সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে বিক্ষোভ, কাল থেকে ২ দিনের হরতাল
প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। এ সময় পূর্বঘোষিত আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার জেলাজুড়ে ডাকা সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি পালন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের দশানী ট্রাফিক মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেন বিক্ষোভকারীরা। এতে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম, নায়েবে আমির আবদুল ওয়াদুদ, সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ ইউনুস, বিএনপির নেতা সৈয়দ নাসির উদ্দিন মালেক প্রমুখ।
এ সময় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মোজাফফর রহমান আলম, বিএনপির নেতা খান মনিরুল ইসলাম, জামায়াত নেতা আবদুল ওয়াদুদ, মঞ্জুরুল হক, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা ফারুক হোসাইনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে জনগণের প্রত্যাশা উপেক্ষা করেছে। এতে জেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাঁরা চারটি আসন বহাল রাখার দাবি জানিয়ে বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন ছিল। গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নতুন সীমানা প্রস্তাব করে, যেখানে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার কথা বলা হয়। এর বিরুদ্ধে স্থানীয় রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিকেরা আন্দোলনে নামেন। নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেন জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে ৪ সেপ্টেম্বর কমিশন চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে, যেখানে তিনটি আসন বহাল রাখা হয়।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, জেলার জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক বিস্তৃতি বিবেচনায় চারটি আসন বহাল রাখা জরুরি। একটি আসন কমে গেলে একাধিক উপজেলা একই আসনের আওতায় পড়বে, ফলে জনপ্রতিনিধিদের জন্য কার্যকরভাবে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। তখনকার সীমানা ছিল—বাগেরহাট-১: ফকিরহাট-মোল্লাহাট-চিতলমারী; বাগেরহাট-২: বাগেরহাট সদর-কচুয়া; বাগেরহাট-৩: রামপাল-মোংলা এবং বাগেরহাট-৪: মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা।
নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বর্তমান আসনের সীমানা হলো—বাগেরহাট-১: বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট; বাগেরহাট-২: ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা এবং বাগেরহাট-৩: কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা।