Advertisement

শহীদ মিনারের বেদিতে শুকানো হচ্ছে গোবর, একুশে ফেব্রুয়ারিতেও কেউ দেয়নি ফুল

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

24obnd

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম দাউদপুর। এই গ্রামে একটি বাংলা বর্ণমালা অঙ্কিত শহীদ মিনার রয়েছে। এটি গ্রামের কাঁচা রাস্তার পাশে দাউদপুর নয়া পুকুরপাড় আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে অবস্থিত। আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এই শহীদ মিনারে কেউ শ্রদ্ধা জানাননি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও কেউ শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দেয়নি। উল্টো শহীদ মিনারের বেদিতে দেখা গেল গোবর শুকানো হচ্ছে। গ্রামের কিছু নারী নিত্যদিন ওই বেদিতে গোবর শুকান। শহীদ মিনারের বেদি ছাড়াও বেদির নিচে, উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম পাশেও গোবর শুকাতে দেখা গেছে।

বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারকে অবমাননা করে এভাবে বেদিতে গোবর শুকানোর বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয় ব্যক্তিরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, কয়েক মাস ধরে স্কুলটি বন্ধ আছে। মাঝেমধ্যে কোনো কোনো শিক্ষক আসেন। ছাত্রছাত্রীরা আসে না। দুই সপ্তাহ আগে ওই স্কুলের একজন শিক্ষক পুরাতন কাগজ ব্যবসায়ীর কাছে স্কুলের দুই বস্তা বই বিক্রি করেছেন। পাড়ার নারীরা এখন ওই স্কুলের শহীদ মিনারের ওপর গোবর শুকাতে দেন। নিষেধ করলেও কেউ শোনেন না।

এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেবা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, নন-এমপিও এই বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন ছাত্রছাত্রী আছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিদ্যালয় বন্ধ আছে। বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রী এখন স্কুলে যায় না। স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের আশপাশের লোকজন এখন শহীদ মিনারে গোবর শুকান। সরকার পরিবর্তনের পর থেকে তিনিও স্কুলে যান না। তাই ওখানে কী হয়, তা জানেন না।

বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা কাটলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মাহফুজ সরকার ও তাঁর বাবা উত্তর রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাতাব উদ্দিন। মাহফুজ সরকার বর্তমানে একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হয়ে ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ইউপি সদস্য মাহফুজ সরকার ও তাঁর বাবা মাহাতাব উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাঁরা ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শমসের আলী মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শহীদ মিনারে কেউ যদি গোবর শুকান, তাহলে তো তাঁদের এলাকার লোকজনই নিষেধ করার কথা। আমি আগামীকাল শনিবার বা রোববার ওই বিদ্যালয়ে যাব। সেখানে যদি কোনো শিক্ষকের গাফিলতি দেখি, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা সব ধরনের চেষ্টা করব।’

Lading . . .