প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নির্ধারিত সময়ের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা। সেখানে নির্ধারিত সময়ের পর জমা পড়া কাউন্সিলরের নাম থেকে শুরু করে দেখা গেছে অভিযোগ থাকায় ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরকে সরিয়ে রাখার নজির। এতে কাউন্সিলরশিপ হারাতে বসেছেন বিসিবির বর্তমান পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। তবে আপিলের ব্যবস্থা রেখেই ভূতুড়ে এই খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
গতকাল রাত ৭টা ২৮ মিনিটে নির্বাচন কমিশনের স্বাক্ষরিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে বিসিবি। সেখানে বিভিন্ন জেলার কাউন্সিলর শূন্য দেখা গেছে, আবার বিসিবির বিভিন্ন বিভাগের বেতনভুক্ত কর্মকর্তাদেরও ভোটার হতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে ক্যাটাগরি-২ থেকে ৭৬টি ক্লাবের মধ্যে ভোটার তালিকায় সুযোগ মিলেছে ৬০টি ক্লাবের। যদিও নির্বাচন কমিশন ৬১টি ক্লাবের কথা উল্লেখ করেছে, তবে তালিকা খুঁজে মিলেছে ৬০টির কাউন্সিলরের নাম।
আগামী ৬ অক্টোবর হতে যাচ্ছে বহুকাঙ্ক্ষিত বিসিবি নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে ক্রিকেটাঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। তিনবার কাউন্সিলর তালিকা পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া নিয়ে আছে সমালোচনা। নির্ধারিত সময়ের পরও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশে ব্যর্থ হয়েছে বিসিবি। তারপর প্রকাশিত তালিকার পর চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থাও তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, ১৭ সেপ্টেম্বরের তালিকার সঙ্গে মিল নেই নতুন তালিকার। পছন্দের কাউন্সিলরদের নিয়েই ভোটার তালিকা তৈরি করেছেন প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম বুলবুল। সেখানে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার আড়াই ঘণ্টা পর জমা দেওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের নামও দেখা গেছে। একটি সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের রেফারেন্সেই তার নামটি রেখেছে বোর্ড। সেটা খসড়া তালিকা প্রকাশের সময় বাদ দেয়নি নির্বাচন কমিশনও।
প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় নরসিংদী জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোনো কাউন্সিলরের নাম পাওয়া যায়নি। একই পরিস্থিতি সিলেট, নওগাঁ, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্ষেত্রেও দেখা গেছে। কী কারণে তাদের কাউন্সিলরের নাম নেই, তা আর জানা যায়নি। তবে রাজশাহী বিভাগের একটি জেলা থেকে গতকাল বিকেলে কাউন্সিলরের নাম জমা হয় বলে খবর পাওয়া গেছে, সেক্ষেত্রে সেটা আর গ্রহণ করেনি বোর্ড।
তবে ক্যাটাগরি-২-তে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা গেছে। ঢাকার ৭৬টি ক্লাবের মধ্যে ভোটার তালিকায় নেই ১৬টির কাউন্সিলরের নাম। এর মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পর্যবেক্ষণ থাকায় ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরকে তালিকার বাইরে রাখে নির্বাচন কমিশন। এতে জায়গা হয়নি সর্বশেষ প্রিমিয়ার লিগে খেলা গুলশান ক্রিকেট ক্লাবেরও। দেশের ক্রিকেটের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ক্লাবগুলোকে বিসিবির গঠনতন্ত্রের ৭.২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিসিবি বরাবর দাখিলকৃত আবেদনের কপি এবং তৎসহ দাখিলকৃত সব দলিল, ক্লাবের গঠনতন্ত্র, মালিকানার প্রমাণ, স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানার প্রমাণ জমা দিতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ এর পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিলরশিপ ফিরেও পেতে পারেন তারা।
এ ছাড়াও ক্যাটাগরি-৩-এ দেখা গেছে বিসিবির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার নাম, যারা বোর্ডের বেতনভুক্ত চাকরিজীবী হলেও সাবেক ক্রিকেটার, সাবেক অধিনায়ক কোটায় কাউন্সিলরশিপ পেয়েছেন। আবার তাদের অনেকেই পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাউন্সিলরশিপও। আজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই খসড়া তালিকার ওপর আপত্তি গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন