দৌড়ে প্রথম নাহিদ রানা, শান্ত বললেন ‘তোকে অলিম্পিকে পাঠাব’
প্রকাশ: ১০ আগস্ট, ২০২৫

সূর্য তখন সবেমাত্র উঠেছে। সাতসকালে গুলিস্তানের জাতীয় স্টেডিয়ামে ব্যস্ততা ক্রিকেটারদের। ‘ফুটবলের’ স্টেডিয়ামে ক্রিকেটারদের ব্যস্ততার কারণ ফুটবল পিচের পাশে থাকা অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক। সেখানেই হয়ে গেল জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ফিটনেস টেস্ট।
সেই টেস্টে দৌড়ে প্রথম হয়েছেন নাহিদ রানা। তার সঙ্গে জাতীয় দলের সবারই পার্থক্য ছিল বিশাল। যা দেখে সাবেক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত খানিকটা রসিকতা না করে পারলেন না। যেতে যেতে বললেন, ‘তোকে অলিম্পিকে পাঠাব’।
আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত চলেছে ক্রিকেটারদের এই টেস্ট। বাংলাদেশের এশিয়া কাপের স্কোয়াডে থাকা প্রায় সব ক্রিকেটার তো বটেই, টেস্ট দলে থাকা মুশফিকুর রহিমসহ দলের আশেপাশে থাকা আরও অনেকেই ছিলেন এই টেস্টে। এই তালিকায় ছিল সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, হাসান মুরাদ, তাইজুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন, অমিত হাসান ও পেসার এনামুল হকের নাম।
তবে এই টেস্টে ছিলেন না অধিনায়ক লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়। এছাড়া এশিয়া কাপের স্কোয়াডে থাকা আরও ৪ ক্রিকেটার ছিলেন না এখানে, তারা টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে এখন অবস্থান করছেন অস্ট্রেলিয়ায়।
এর আগে দুই ধাপে ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে ক্রিকেটারদের। সেখানে ট্রেনার নাথান কেলির অধীনে নানা স্কিল উন্নয়ন ড্রিলে নিজেদের ফিটনেসটাকে ঝালিয়ে নিয়েছেন তারা। আজ তারই পরীক্ষা দিয়েছেন সবাই।
দিনের শুরুতে সবাই গা গরমের কাজে লেগে পড়েন। এরপর আসে আসল পরীক্ষা। সবাইকে ১৬০০ মিটার দৌঁড়াতে হয় কোনোপ্রকার বিরাম ছাড়াই। ক্রিকেটারদের ফিটনেসের এই পরীক্ষা দিতে হয়েছে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে ছিলেন ১১ জন খেলোয়াড়। দ্বিতীয় ভাগে ছিলেন ১৫জন।
প্রথম ধাপে নাহিদ রানার সঙ্গে যে সবার দূরত্বটা ছিল যোজন যোজন, তা তো জেনেই গেছেন। দ্বিতীয় ধাপেও প্রথম হয়েছেন একজন পেসার। তিনি তানজিম হাসান সাকিব। অন্যদের সঙ্গে তার পার্থক্যটা নাহিদের মতো না হলেও মন্দ ছিল না।
তবে সব মিলিয়ে যদি হিসেবটা করা হয়, তাহলে নাহিদই এগিয়ে থাকবেন। তিনি তার দৌড় শেষ করেছেন ৫ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে, ওদিকে তানজিম সাকিব তার দৌড় শেষ করতে নিয়েছেন ৫ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
ফিটনেসের এই পরীক্ষার অবশ্য মানদণ্ড আছে। তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় ফলাফল অনুসারে। ১৬০০ মিটারের দৌড় যারা ৫ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের কম সময়ে শেষ করতে পারবেন, তারা হবেন এলিট। ৬ মিনিট ২০ সেকেন্ডের মধ্যে শেষ করলে তিনি হবেন কম্পেটেন্ট। আর তার চেয়ে বেশি সময় লাগলে তিনি যাবেন লিমিটেড ক্যাটাগরিতে।
তবে এই তিন ক্যাটাগরির প্রথমটাতে সবেধন নীলমণি স্রেফ নাহিদ রানাই। তার ধারেকাছেও নেই কেউ। দ্বিতীয় ধাপে প্রথম হওয়া তানজিম সাকিবের অবস্থানও কম্পেটেন্ট ক্যাটাগরিতেই।
জাতীয় দলের জন্য বেঞ্চমার্ক ঠিক করা আছে তিনটি। কেউ যদি ৫ মিনিট ৪০ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করতে পারেন, তাহলে তাঁকে ধরা হয় ‘এলিট’ হিসেবে।
৫ মিনিট ৪০ সেকেন্ড থেকে ৬ মিনিট ২০ সেকেন্ড সময় লাগলে তাঁকে ধরা হয় ‘কম্পিটেন্ট’ বা ‘সন্তোষজনক’। এর চেয়ে বেশি সময় লাগলে তাঁকে ধরা হয় ‘লিমিটেড’ হিসেবে। ওই হিসেবে এবার জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে একমাত্র ‘এলিট’ নাহিদ রানা।
জাতীয় দলে দারুণ পারফর্ম করে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। এবার ফিটনেস টেস্টেও ছিলেন সবার আগে। সে কারণে সতীর্থদের প্রশংসাও বেশ কুড়িয়েছেন তিনি। শান্ত যেমন তাকে অলিম্পিকেই পাঠিয়ে দিতে চাইলেন একেবারে!