নাঈমের বাদ পড়া এবং সোহান-সাইফ যে কারণে স্কোয়াডে
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট, ২০২৫

প্রায় তিন বছর পর জাতীয় দলের টি-টুয়েন্টি স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। ২০২৩ সালে এশিয়ান গেমসের পর জাতীয় দলের জার্সিতে আর টি-টুয়েন্টিতে খেলা হয়নি সাইফ হাসানের। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজ এবং এশিয়া কাপের দলে জায়গা পেয়েছেন দুজন। তবে বাদ পড়েছেন সবশেষ শ্রীলঙ্কা সিরিজে খেলা টপঅর্ডার ব্যাটার মোহাম্মদ নাঈম শেখ।
শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন সিরিজ ও এশিয়া কাপের দল নিয়ে কথা বলেছেন বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ লিপু। সেখানে সোহান ও সাইফকে দলে নেয়া এবং নাঈমের বাদ পড়ার বিষয়টি খোলাসা করেছেন তিনি।
নুরুল ও সাইফ দুজনই এখন টপএন্ড টি-টুয়েন্টিতে খেলতে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া সফরে আছেন। খুব একটা যে ভালো করছেন তা কিন্তু না। সাইফ হাসান ৬ ম্যাচে ১২১.১০ স্ট্রাইক রেটে ১৩২ রান করেছেন। পঞ্চাশের বেশি রান করেছেন একবার (৫৭)। সোহান ৬ ম্যাচে ১১৩.৮৬ স্ট্রাইকরেটে ১১৫ রান করেছেন, সর্বোচ্চ ইনিংস ৩৫ রান। সেখানে দুজনের এশিয়া কাপের স্কোয়াডে ডাক পাওয়া কিছুটা হলে প্রশ্নবোধক। তবে গাজী আশরাফের মতে বিকল্প না থাকাতেই দুজনের ডাক পাওয়া।
নুরুল হাসানকে মূলত লোয়ার মিডলঅর্ডারে জাকের আলি অনিকের বিকল্প হিসেবে দেখছে বোর্ড। কোনো কারণে জাকের না খেললে যেন সোহানকে খেলানো যায়। গাজী আশরাফ বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমাদের লাইক টু লাইক বদলির জায়গায় অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ, কিংবা পারফরমার নাই। আমাদের আত্মবিশ্বাসের যে জায়গাটা, তার খেলার অ্যাপ্রোচ এবং প্যাটার্ন । বিশেষ করে পাঁচ-ছয়ে আমাদের একটা ভালো চয়েজ। যেমন জাকের আলী আঘাত পেয়েছিল শ্রীলংকা সিরিজে। সেই হিসেবে ব্যাক আপের জায়গায় আমরা তাকে সেরা মনে করছি।’
একই ভাবনা সাইফ হাসানকে নিয়েও। এক থেকে পাঁচ, সবকটি পজিশনেই ব্যাট করতে পারেন সাইফ এমনকি বলও করতে পারেন। সুতারং নির্বাচকদের চোখে ভালো বিকল্প তিনি। গাজী আশরাফ বলেছেন, ‘এই নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের কিছুটা গভীর চিন্তা করতে হয়েছে। সাইফকে দলে নেয়ার বিষয়টি অনেকেই আলোচনায় এনেছেন। কোচ-ক্যাপ্টেন-নির্বাচক যারা আছি, আলোচনা করেছি। ওপরের দিকে একটা বোলারের দরকার ছিল, সেটা তিনি করে দিতে পারবেন। তিন-চার নম্বরে এবং যদি ওপেনার দরকার হয়, সে আলোকে সাইফের দিকে চোখ ছিল। এবার তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেছি।’
‘চার নম্বরে ব্যাট করার মতো যোগ্য ব্যাটার এবং প্রয়োজনে যদি কোনো পরিস্থিতির তৈরি হয় দলের জন্য ওপেন করার সক্ষমতা রাখেন। আমরা এ রকম বিভিন্ন জায়গায় অবদান রাখতে পারে এমন খেলোয়াড় খুঁজছি। দলে তাদের প্রয়োজন অনেক বেশি।’
গত জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে দলে ফেরেন নাঈম শেখ। সিরিজে এক ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ২৯ বলে ৩২ রান করেন। পরে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ১৩ রান করেন। তাতে ছিটকে গেছেন এশিয়া কাপ ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজের স্কোয়াড থেকে।
তাকে বাদ দেয়ার বিষয়ে প্রধান নির্বাচক লিখেছেন, ‘কাউকে দল থেকে বাদ দেয়ার আগে অনেক কিছুই চিন্তা করতে হয়- তিনি সামর্থ্যের কতটুকু করতে পারলেন বা তাকে যতটুকু সুযোগটুকু দেয়া হলো, সেটা যথেষ্ট কি না। আমাদের কাছে মনে হয়েছে নাঈম কঠোর পরিশ্রম করেছে, তিনি যে প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছেন, আমরা অনেক আশাবাদী ছিলাম তিনি তার জায়গাটা ধরে রাখতে পারবেন।’
‘সেটা তার ও দলের জন্য ভালো হতো। দুর্ভাগ্যবশত সেটা হয়নি। আরেকটু কম চ্যালেঞ্জে টপএন্ড ক্রিকেটে সেখানেও তিনি ভালো করতে পারেননি। আমার বিশ্বাস নাঈম শেখ এখন জানে তাকে এই জায়গাটা পুনরুদ্ধার করতে হলে আরও উন্নতি করতে হবে।’
আগামী ৩০ আগস্ট সিলেটে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। ১ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় এবং ৩ সেপ্টেম্বর খেলবে বাকি দুটি ম্যাচ। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাতে গড়াতে চলা এশিয়া কাপে ১১ সেপ্টেম্বর হংকংয়ের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। গ্রুপপর্বে টাইগারদের বাকি দুটি ম্যাচ ১৩ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ১৬ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে।