প্রকাশ: ২১ আগস্ট, ২০২৫

সরকারি মালিকানাধীন তেল পরিশোধন কোম্পানি ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ক্ষমতা দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যার জন্য সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা। ইতিমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব বা ডিপিপি তৈরি করেছে বিপিসি। সম্প্রতি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো ডিপিপি অনুমোদন হয়নি। দ্বিতীয় এই ইউনিটটি নির্মাণ করা হলে ইআরএলের পরিশোধন ক্ষমতা আরও ৩০ লাখ টন বাড়বে। সব মিলিয়ে তখন প্রতিষ্ঠানটি বছরে ৪৫ লাখ টন তেল পরিশোধন করতে পারবে।
দেশের একমাত্র সরকারি জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর প্রতিবছর দেশে তেলের চাহিদা বাড়লেও ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ক্ষমতা বাড়েনি। এ কারণে প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫৭ বছর পর এসে পতেঙ্গায় নিজস্ব জায়গাতেই ইআরএলের দ্বিতীয় তেল পরিশোধন ইউনিট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। ইআরএল বিপিসির একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিপিসির মাধ্যমে আনা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধন করে ইআরএল। পরে পরিশোধিত ১৪ রকমের জ্বালানি তেল ইআরএল থেকে নিয়ে সরকারি পরিচালনাধীন তেল কোম্পানি পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, যমুনা অয়েল ও স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েলের মাধ্যমে দেশজুড়ে ভোক্তাদের কাছে সরবরাহ করা হয়।
এ বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে। প্রকল্পের ব্যয় বিপিসি ও সরকারের পক্ষ থেকে মেটানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিপিপি অনুমোদন পাওয়া গেলে প্রকল্পের নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’
বিপিসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, জ্বালানি তেল পরিশোধন ক্ষমতা বাড়াতে ‘ইনস্টলেশন অব ইআরএল-২’ নামের প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১২ সালে। এরপর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অন্তত ১১ বার সংশোধন করা হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। বিপিসি সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬৮ লাখ টনের কাছাকাছি তেল সরবরাহ করা হয়েছে।
বিপিসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিটে তেল পরিশোধন শুরু হলে বছরে দেশের ২০ থেকে ২৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হবে।
বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে জ্বালানি তেলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ডিজেল। এর পরিমাণ বছরে গড়ে ৪৬ লাখ টন। অপরিশোধিত তেল এনে দেশে পরিশোধনের মাধ্যমে ডিজেল উৎপাদন করা হলে ১ ব্যারেলে (১৫৮ দশমিক ৯৯ লিটার) সাশ্রয় করা যায় ১০ থেকে ১১ ডলার। তার মানে ডলারের বর্তমান আনুষ্ঠানিক বিনিময় হার (১২২ টাকা) ধরে হিসাব করলে প্রতি লিটার ডিজেলে সাশ্রয় হয় ৮ টাকা ৪৪ পয়সা।
জানতে চাইলে ইআরএলের এমডি মো. শরীফ হাসনাত বলেন, দ্বিতীয় ইউনিট চালু করা গেলে দেশে জ্বালানি খাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। পরিশোধন সক্ষমতার সঙ্গে মজুত ক্ষমতাও বেড়ে যাবে।
আরও পড়ুন