ঘরে ঢুকে ইসলামী ঐক্যজোট নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ভোলায় ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আমিনুল ইসলাম হককে (নোমানী হুজুর) ঘরে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাতে সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশার চরনোয়াবাদে নিহত আমিনুল ইসলাম জাতীয় ইমাম সমিতির ভোলা জেলা শাখার সহসভাপতি ও ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার সানি মুহাদ্দিস (সহযোগী অধ্যাপক) ছিলেন। তার বাবার নাম মাওলানা এনামুল হক। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া আজ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এশার নামাজ শেষে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাসায় ফেরেন আমিনুল ইসলাম। সেখানে আগে থেকে ওতপেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ভোলা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আমিনুল হকের মৃত্যুর খবরে বিভিন্ন ইসলামিক দলের নেতারা ও এলাকাবাসী হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তারা রাত ১১টার দিকে ভোলা সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল করে শহরের সদর রোডের কে-জাহান মার্কেটের সামনে এসে তারা সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা করেন। সভায় বক্তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
এদিকে এ হত্যার বিচার দাবিতে আজ সোমবার জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তৌহিদি জনতার ব্যানারে সর্বদলীয় ঐক্যজোটের পক্ষে এ ঘোষণা দিয়েছেন আলীয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম।
পুলিশের তিনটি টিম ঘটনার অনুসন্ধান ও ঘাতকদের চিহ্নিত করতে মাঠে নেমেছে বলে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক। ওসি সাহাদাত হোসেন হাসনাইন আহমেদ পারভেজ জানান, রাতেই তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পাশাপাশি ঘাতকদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছেন। তবে রোববার বিকাল পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু উদ্ঘাটন করা যায়নি।
এদিকে রোববার দুপুরে ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাওলানা আমিনুল ইসলামের জানাজায় অংশ নেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. রাইসুল আলম, জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা জাকির হোসেন, নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারি তরিকুল ইসলাম তারেক, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছীনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ মোবাশ্বিরুল হক নাঈমসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ। এ সময় হত্যাকারীদের গ্রেফতারে তারা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ঘাতকরা গ্রেফতার না হলে জেলাব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে বলেও জানান দেন নেতারা। এর আগে সকাল ১১ টায় আলীয়া মাদ্রাসা চত্বরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিতিতে প্রথম প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন