প্রকৃতি দিয়েই প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে: বাসস চেয়ারম্যান
প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫

প্রকৃতি দিয়েই প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাসস চেয়ারম্যান ও দৈনিক ইত্তেফাকের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার আলদীন।
খুলনার পাইকগাছার প্রাকৃতিক অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা কপিলমুনির তালতলা ও গোয়ালবাথান এলাকায় বজ্রপাত ও পরিবেশ-প্রতিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিএনপির উদ্যোগে প্রায় তিন হাজার তালগাছের বীজ রোপণ করা হয়েছে।
শুক্রবার এ বৃক্ষরোপণ কর্মযজ্ঞের উদ্বোধন করেন আনোয়ার আলদীন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৫ বছরে ৫০ কোটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অংশ হিসাবে এই তালের বীজ রোপণ করা হয়।
এতে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা শেখ জাকির হোসেন ও শহিদুল ইসলাম হাওলাদার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. আব্দুল মজিদ, বণিক সমিতির আহ্বায়ক শেখ আনারুল ইসলাম, যুবদলের উপজেলা আহ্বায়ক তহিদুজ্জামান মুকুল, বিএনপি নেতা আবুল হোসেন, মাসুদুজ্জামান বাবু, তুষার কান্তি মন্ডল, মানবাধিকার সংগঠক ও সাংবাদিক এস এম পারভেজ, অলিউল ইসলাম, কপিলমুনি প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক এইচ এম শফিউল ইসলাম, জাহিদ আলম, শাহ আলম, মেম্বার রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক খায়রুল ইসলাম প্রমুখসহ স্থানীয়রা।
আনোয়ার আলদীন তালের বীজ রোপন কর্মসূচি উদ্বোধনের পর বলেন, ‘জনগণের সবচেয়ে প্রিয়তম নেতা, দেশের নির্ভরযোগ্য কান্ডারি তারেক রহমান পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য পাঁচ বছরে ৫০ কোটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন । তার লক্ষ্য বাস্তবায়নে সারা দেশের সঙ্গে সবচাইতে পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকি প্রবণ এই অঞ্চলে প্রকৃতিবান্ধব তাল বীজ রোপণ করা হচ্ছে। প্রকৃতি ও আগামী প্রজন্মের জন্য স্বেচ্ছায় এসব বীজ রোপণ ব্যাপকহারে বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। প্রকৃতি দিয়েই প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘উপকূলীয় সুন্দরবন সংলগ্ন পাইকগাছা-কয়রার প্রতিকূল প্রকৃতি ক্রমশ হন্তারক হয়ে উঠছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাবে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, পানির উপরিভাগের উচ্চতা বৃদ্ধি, ভেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকায় পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি, জলাবদ্ধতা, খরা, অতিবৃষ্টির কারণে মাছের ঘের, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বৃক্ষ শূন্য এই অঞ্চলে বজ্রপাত রীতিমতো ভয়ঙ্কর রূপ পরিগ্রহ করেছে । বজ্রপাতের মৌসুম শুরু হলে ঘের, মাছ ধরা, কৃষিসহ উন্মুক্ত স্থানে কাজ করা অনেকটা ভীতিকর হয়ে ওঠে। বজ্রপাতে প্রাণহানি বেড়ে চলেছে আশঙ্কাজনক হারে।’
আনোয়ার আলদীন বলেন, ‘তালগাছ প্রাণী জগতের পরম বন্ধু। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বজ্রপাত থেকে রক্ষার বড় শিখন্ডি তালগাছ। ভূমিক্ষয়, ভূমিধস রোধ, ভূগর্ভস্থ পানির মজুত ও মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অন্যতম ভূমিকা পালন করে তালগাছ।’
আনোয়ার আলদীন উপকূলবর্তী এলাকায় পরিবেশ রক্ষায় তালগাছকে প্ররক্ষক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘তালগাছে কার্বনের স্তর বেশি থাকায় তা বজ্রপাত নিরোধে সহায়তা করে। কারণ, তালগাছের বাকলে পুরু কার্বনের স্তর থাকে। তালগাছের উচ্চতা ও গঠনগত দিক থেকেও বজ্রপাত নিরোধে সহায়ক। তালগাছের উপকারিতা অভাবনীয়। এটি একটি সুপার পাওয়ার বৃক্ষ। কেবল পরিবেশগতভাবেই নয়। এর ফল, রস, পাতা, কাঠ সবই গুরুত্বপূর্ণ। তালগাছ পরিবেশের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়ক। তালের রস থেকে গুড়, পাটালি, মিছরি তৈরি হয়। পাকা তাল ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ একটি ফল, যা স্বাস্থ্যের জন্য অতি উপকারী।’
আনোয়ার আলদীন প্রতিটি গ্রামে স্বেচ্ছায় তালগাছের পাশাপাশি নারকেলগাছ, সুপারিগাছের মতো উচ্চতাসম্পন্ন বজ্রপাত নিরোধে কার্যকরী বৃক্ষ, ফলদ বৃক্ষ রোপণকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন