Advertisement

‘হাসিনার পালানোর ঘটনা থেকে রাজনীতিবিদদের শিক্ষা নিতে হবে’

কালবেলা

প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

খুলনায় বিএনপির র‌্যালি। ছবি : কালবেলা
খুলনায় বিএনপির র‌্যালি। ছবি : কালবেলা

খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, হাসিনা এই দেশ থেকে পালিয়ে বেঁচেছে এমনকি পরিবারকে বাঁচিয়েছে। কিন্তু তার কর্মীদের রেখে গেছে দেশের মানুষের তোপের মুখে। এটাই হচ্ছে জুলাইয়ের শিক্ষা। এই ঘটনা থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের শিক্ষা নিতে হবে। এই পরিণতি যেন আর কারো না হয়। ছাত্রদের যে স্বপ্ন সেই তা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।

৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পৃথক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার (৬ আগস্ট) খুলনা নগরীর তেতুলতলা মোড়ে এ সমাবেশের আয়োজন করে মঞ্জু সমর্থকরা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) খুলনা’র ব্যানারে এই সমাবেশ এর আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, সর্বপ্রথম এই আন্দোলন ছিল ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন। সেই আন্দোলন থেকে এক দফার আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। ছাত্রদের নেতৃত্বে দেশের সাধারণ মানুষ হাসিনাকে এই দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্বৈরশাসকরা পালিয়ে বেঁচেছে।

নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গত বছর বিজয়ের পর পাঁচ আগস্টে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছেন। দেশনেতা তারেক রহমানোর তার ভাষণে বলেছেন, শিক্ষা, সততা ও দেশপ্রেমই হবে আগামী দিনের বাংলাদেশ। দুর্নীতি, লুটপাট, স্বজনপ্রীতি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের কারণেই হাসিনার পতন হয়েছে। আমরা যেন সেই শিক্ষা গ্রহণ করি। আমরা কোন লুটপাটের রাজনীতিতে জড়াবো না। আমরা শিক্ষা সততা ও দেশপ্রেমই উজ্জীবিত হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে তারেক রহমানকে সহযোগিতা করব।

আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের কথা বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা ঐক্যবদ্ধ বিএনপি গঠন করব। আমরা যারা আজকে এখানে মিলিত হয়েছি আমাদের মনে রাখতে হবে আমরাই বিএনপির ত্যাগী রাজনৈতিক কর্মী। আমরা লুটপাট করি নাই, সম্পর্ক ছিন্ন করি নাই। আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া আবর্জনা আমরা ভক্ষণ করি নাই। এ কারণেই দল আমাদের মূল্যায়ন করছে। যারা বলেছিল আমরা বিএনপি নই তারা এসে দেখে যান আমরা কারা। আমরা সততা নিষ্ঠা ও দেশপ্রেম নিয়ে রাজনীতি করবো আমরা থাকবো জনগণের পাশে। জনগণের সুখ-দুঃখের ভাগীদার হিসেবে আমরা যে যাত্রা শুরু করেছিলাম ইনশাল্লাহ আগামী নির্বাচনে বিজয়ের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করে জনগণের পাশে দাঁড়াবো।

সমাবেশে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান মনি বলেন, এক বছর হয়ে গেল ফ্যাসিবাদ থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। কিন্তু তারা যাওয়ার আগে আমাদের সন্তানকে-দেশবাসীকে নির্বিচারে মেরে গেছে। আজ আমরা এই ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে বিজয় মিছিল করব। বিগত ১৬ বছর আপনারা যখনই মিছিলে অংশগ্রহ করেছেন পুলিশ হামলা করেছে মামলা দিয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে সাধারণ একজন রিক্সাওয়ালাও মামলা থেকে মুক্তি পাইনি। সেই ফ্যাসিবাদী শাসন উৎখাত হয়েছে বাংলাদেশের মানুষের রক্তের বিনিময়ে।

বক্তারা আরও বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী অধ্যায়। এই অভ্যুত্থান প্রমাণ করে, ছাত্র ও জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনই পারে স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে সফল প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। সেই চেতনা ধারণ করেই বর্তমান সময়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সমাবেশ শেষে নাগরিক তেতুলতলা মোড়স্থ বিএনপি অফিসের সামনে থেকে বিশাল এক র‌্যালি বের করে মঞ্জু সমর্থকরা। র‌্যালিটি ময়লাপোতা হয়ে রয়েল মোড় থেকে আবার বিএনপি অফিসে এসে শেষ হয়। র‌্যালিটিতে প্রায় ২ সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুজ্জামান অপু, খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।

Lading . . .