Advertisement

যশোরে ভ্যানচালক হত্যায় জড়িতদের আড়ালের চেষ্টা করছে পুলিশ, অভিযোগ পরিবারের

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ভ্যানচালক মিন্টুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে যশোর প্রেসক্লাবের সামনেছবি: প্রথম আলো
ভ্যানচালক মিন্টুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে যশোর প্রেসক্লাবের সামনেছবি: প্রথম আলো

যশোরের মনিরামপুরে ভ্যানচালক মিন্টু হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। পরিবারের দাবি, স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্ররোচনায় পুলিশ মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আড়ালের চেষ্টা করছে। সেই সঙ্গে তাঁদের ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ছবি–সংবলিত প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন মিন্টুর স্বজন ও এলাকাবাসী।

পুলিশ, পরিবার ও কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ আগস্ট সন্ধ্যায় যশোরের মনিরামপুর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়–সংলগ্ন একটি দোকানে মিন্টুর তিন ভাইয়ের সঙ্গে পৌর বিএনপির বহিষ্কৃত শ্রমবিষয়ক সম্পাদক সাব্বিরসহ পাঁচ-ছয়জনের কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মিন্টু ও তাঁর দুই ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিন্টুর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করলে সাব্বিরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের অভিযোগ, ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না দেওয়ায় সাব্বির হোসেনের নেতৃত্বে মিন্টুকে হত্যা করা হয়েছে। আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন তাঁর দুই ভাই। এ ঘটনায় মামলার পর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আড়াল করার চেষ্টা করছে পুলিশ ও স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এমনকি ভুক্তভোগী পরিবারের দেওয়া আসামিদের নাম এজাহারে অন্তভুক্ত না করার অভিযোগ আছে। দ্রুত জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

মিন্টুর শ্যালক সুমন হোসেন বলেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ মামলা নিয়ে টালবাহানা করছেন, এজাহারে পুলিশের যা মনে আসছে, সেটি উল্লেখ করেছে। এজাহারে আসামি ও আসামির পরিবারের নাম ভুল দিয়েছেন। রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় পুলিশ এ মামলা ভিন্ন খাতে নিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা আসামিদের পক্ষ নেওয়ায় তাঁরা সাহস করে কিছু বলতে পারছেন না। দুর্বৃত্তরা প্রায়ই বাড়িতে ইটপাথর ছুড়ছে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে যশোরে এসে এ কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ বিষয়ে মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ইতিমধ্যে সাব্বিরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। হত্যাকাণ্ডের পর দলীয় পদ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের আগেই বিএনপি ছেড়ে তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তখন দলীয় কার্যালয় থেকে আমি তাঁকে বের করে দিয়েছিলাম।’

জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক বলেন, ব্যক্তির অপরাধের দায় সংগঠন নিবে না। কোনো সমাজবিরোধী বিএনপির নেতা হতে পারবে না। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে দল থেকে সাব্বিরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে মনিরামপুর থানার ওসি বাবলুর রহমান খান বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ কারও পক্ষ নেয়নি, নিরপেক্ষ তদন্ত চলছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Lading . . .