রংপুরে পর্যাপ্ত সার সংরক্ষণ করতে পারছে না বিএডিসি
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট, ২০২৫

রংপুর অঞ্চলের কৃষকের সারের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সার মজুত রাখতে পারছে না বিএডিসি। গুদামে স্থান সংকুলান না হওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী চলতি মৌসুমে আপৎকালীন সারের মজুত গড়ে তোলা যাচ্ছে না। ভরা মৌসুমে সারের সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিএডিসি রংপুর অফিস সূত্র জানায়, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে নন-ইউরিয়া সার সংরক্ষণে রংপুরে প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্টিল গুদাম নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। সংকট মোকাবিলার লক্ষ্যে সার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ জন্য ঠিদাকারি প্রতিষ্ঠানকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সময়মতো ওই গুদাম ঘরটি নির্মাণে ব্যর্থ হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এআর কনসোর্টিয়াম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর নগরীর আলমনগর লালবাগ এলাকায় ৪ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বিএডিসির টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি সার রাখার জন্য গুদাম রয়েছে। গুদাম সংকটের কারণে সেখানে গাদাগাদি করে ১৭ হাজার মেট্রিক টন সার সংরক্ষণ করা হচ্ছে। অথচ রংপুরের জন্য টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি সারের চাহিদা রয়েছে সাড়ে ২০ হাজার মেট্রিক টন। আপৎকালীন সময়ে যেন কৃষক সার সংকটে না পড়েন, সে জন্য ওই গুদামের পাশে ৭৪ শতাংশ জমিতে ৩২ হাজার বর্গফুট আয়তনের ৩ হাজার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজের ধীর গতির কারণে নির্মাণ কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা অনিশ্চিত। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বিএডিসির বিদ্যমান সার গুদামগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন ও নতুন গুদাম নির্মাণের মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায়ের অধীন গুদাম নির্মাণে ২০২২ সালের নভেম্বরে দরপত্র আহ্বান করে প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর। ৮ কোটি ৬৯ লাখ ৮৭ হাজার ১৫৯ টাকা চুক্তিমূল্যে রংপুরের আলমনগরে নতুন গুদাম নির্মাণ কাজ পায় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এআর কনসোর্টিয়াম। এক বছর সময় বেঁধে দিয়ে কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল। ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর সাইট হস্তান্তর করা হয়। তবে চলতি বছরের ২৪ আগস্ট চূড়ান্ত সময় বেঁধে দেওয়া থাকলেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ জানিয়েছেন, গুদামের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। উপকরণ সংগ্রহ করতে সময় লাগছে। নির্মাণ কাজের সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করা হয়েছে।
বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, গত বছর রংপুর জেলায় নন-ইউরিয়া (টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি) সারের চাহিদা ছিল ২০ হাজার ৫২৬ টন। রংপুর জেলায় বর্তমানে নন-ইউরিয়া সার রাখার গুদাম রয়েছে তিনটি। এগুলোর ধারণক্ষমতা ৬ হাজার মেট্রিক টন। গুদামের অভাবে আপৎকালীন সার রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে সার বিক্রয় ও বিতরণের সঙ্গে সম্পৃক্তদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কৃষকরা চাহিদা মতো সারের সরবরাহ পাচ্ছেন না। ফলে ভরা মৌসুমে সারের আরও সংকট তীব্র হওয়ার আশংকা রয়েছে।