একজন মাইগ্রেন রোগীর যন্ত্রণাময় অভিজ্ঞতা, যা আপনাকে নতুন করে ভাবাবে
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট, ২০২৫

২০০৯ সাল থেকে আমার মাইগ্রেন। মারাত্মক পর্যায়ের মাইগ্রেন। এর মধ্যে একটা দিনও মাইগ্রেনের ওষুধ ছাড়া ছিলাম না। মাইগ্রেনের সরাসরি কোনো ওষুধ নেই। অনেকে টাফনিলের মতো মাথাব্যথার ওধুধ খান। আমি শুরু থেকে খেয়ে এসেছি স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি কিংবা ডিপ্রেশনের ওষুধ।
যাঁদের মাইগ্রেন নাই, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন। ‘আমার মাইগ্রেন আছে’—কথাটা শুনলে মনে হয় ‘ফ্লেক্স নিচ্ছে’ (ভাব দেখানো)। কিন্তু বিশ্বাস করেন, তাঁদের মতো নরকযন্ত্রণা আর কারও হয় না।
মাইগ্রেনের রোগীদের ঘুম খুব জরুরি। ‘আইরনি’ হলো, অনেক মাইগ্রেন রোগী স্লিপ ডিজঅর্ডারে ভোগেন। বিশ্বাস করবেন কি না জানি না, গত ৪ মাসে আমার ৬ কেজি ওজন কমে গেছে। কেবল এই সময়ে মাইগ্রেন তীব্রভাবে আবার ফিরে এসেছে বলে।
মাইগ্রেনের ব্যথা উঠলে আলো ভালো লাগে না। অনেকে অন্ধকারে স্বস্তি পান। আমার অন্ধকারও ভালো লাগে না। একটু স্ট্রং—এমন কোনো গন্ধই সহ্য হয় না।
আগে নিয়মিত হাত-পা ঘামত। একদম ঠান্ডা হয়ে আসত। এখন হঠাৎ হঠাৎ এমন হয়। আমার বাবারা তিন ভাই-ই যেহেতু স্ট্রোক করেছেন, এই ভয়টা সে সময় বেশি করে অ্যাটাক করে। বমি হতে থাকে। মোশন সিকনেস হয়। যাঁরা বাসে চড়তে পারেন না, তাঁরা এই যন্ত্রণার সঙ্গে ‘রিলেট’ করতে পারবেন।
এই যন্ত্রণা নিয়ে অফিস করি। মিটিং করি। যেহেতু আমার কাজ ‘ক্রিয়েটিভিটি ডিমান্ড’ করে, তীব্র মাথাব্যথা নিয়েই গল্প ভাবতে থাকি। মাইগ্রেনে ‘মুড সুইং’ও হয় প্রচুর। আগে সহকর্মীদের ওপর একটুতেই খুব রেগে যেতাম। গত ৬ বছর নিজে নিজে চেষ্টা করে রাগ নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি।
মাইগ্রেনের কারণে ভ্রমণ করতে পারি না। সিঙ্গাপুর কিংবা বালিতে গিয়ে রুমে শুয়ে ছিলাম, এমন ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। মাইগ্রেনের যেসব ওষুধ এত দিন খেয়ে এসেছি বা খেতে হচ্ছে, এর প্রতিটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এটার পরিণতি ভয়াবহও হতে পারে।
মাইগ্রেন রোগটা সম্পর্কে অনেকের স্পষ্ট ধারণা নেই। কেউ কেউ কৌতুকও করেন। আপনার আশপাশে যদি কোনো মাইগ্রেনে ভুগতে থাকা কাউকে দেখেন, দয়া করে তাঁর প্রতি একটু সহানুভূতি দেখাবেন।