Advertisement

‘মৃত্যু এড়ানোর পথ এখনো কেউ খুঁজে পায়নি, ভবিষ্যতেও পাবে না’

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৬ আগস্ট, ২০২৫

‘লিমিটলেস’–এ ক্রিস হেমসওয়ার্থ। ছবি: ডিজনি প্লাস
‘লিমিটলেস’–এ ক্রিস হেমসওয়ার্থ। ছবি: ডিজনি প্লাস

মার্ভেল সিনেমেটিক ইউনিভার্সের ‘থর’ চরিত্রটি বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিশাল হাতুড়ি হাতে এক নরডিক দেবতার ঝড় তোলা অবয়ব। আর এই চরিত্রের প্রাণ অস্ট্রেলীয় অভিনেতা ক্রিস হেমসওয়ার্থ। তবে সুপারহিরো খোলস ছেড়ে এখন তিনি মন দিয়েছেন বিজ্ঞানে। মুখোমুখি হচ্ছেন এমন সব চ্যালেঞ্জের, যা সুপারহিরোর খলনায়কদের চেয়েও ভয়ংকর।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্যচিত্র সিরিজ ‘লিমিটলেস’-এর দ্বিতীয় মৌসুমেও ফিরেছেন হেমসওয়ার্থ। এবারও নতুন চোখে জীবনকে বোঝার চেষ্টা করেছেন ৪১ বছর বয়সী এই তারকা। নিজের ভয়কে জয় করাই তাঁর এবারের মূল লক্ষ্য।

‘প্রথম মৌসুমটা আমাকে প্রায় মেরে ফেলেছিল। তখন ভেবেছিলাম, আর না!’ বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে হাসতে হাসতে বলেন অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা। প্রথম মৌসুমে তিনি যেসব কঠিন চ্যালেঞ্জে অংশ নিয়েছিলেন, তার মধ্যে ছিল ফ্রি-ডাইভিং, উপবাস, স্ট্রেস ট্রেনিং, মাটির ৯০০ ফুট ওপর ক্রেন ধরে হাঁটা—যেগুলোর উদ্দেশ্য ছিল বার্ধক্য প্রতিরোধ।

এমন কঠিন শোতে আবার কেন ফিরলেন? অভিনেতা বলেন, ‘কারণ, আমার মনে আরও প্রশ্ন ছিল; ক্লান্তি ছিল ঠিকই, শেষ পর্যন্ত শান্তি পেয়েছি।’

দ্বিতীয় মৌসুমে শারীরিক চ্যালেঞ্জের বাইরে এবার ছুঁয়ে দেখেছেন সৃজনশীলতা ও সম্পর্কের দিকটি। বন্ধু এড শিরানের সহায়তায় জীবনে প্রথমবারের মতো শিখেছেন বাদ্যযন্ত্র বাজানো। আবার সন্তানদের দুঃসাহসিকতা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে উঠে পড়েছেন ৬০০ ফুট উঁচু আলপাইন বাঁধে। ‘ঝুঁকি বা প্রতিকূলতা আছে, এমন অচেনা পরিবেশেই আপনি বুঝতে পারবেন জীবন কতটা ভঙ্গুর,’ বলছিলেন তিনি।

এই তথ্যচিত্রের প্রথম মৌসুম করতে গিয়ে বড় ধাক্কা খান অভিনেতা। জেনেটিক টেস্টে তাঁর শরীরে দুটি বিশেষ জিনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যা তাঁর আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৮ থেকে ১০ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ‘এই সতর্কসংকেতই আমাকে নিজের শরীরকে আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রেরণা দেয়। এ ছাড়া মনে হলো—আমি যদি রোগটা নিয়ে কথা বলি, অন্যরাও সচেতন হবে।’ বলেন তিনি।

চিরজীবী হওয়া নিয়ে নানা আলোচনা আছে, সেগুলোতে হেমসওয়ার্থ তেমন ভরসা রাখেন না। তাঁর মতে, ‘মৃত্যু এড়ানোর পথ এখনো কেউ খুঁজে পায়নি, ভবিষ্যতেও পাবে না। তাই মৃত্যুকে গ্রহণ করতে হবে। যদি কেউ বলে দেয় তুমি ২০০ বছর বাঁচবে, তাহলে সবাই আরও অসতর্ক হয়ে পড়বে। মৃত্যুর আশঙ্কা আমাদের প্রতিটি মুহূর্তকে গুরুত্ব দিয়ে বাঁচতে শেখায়।’ মৃত্যু নিয়ে কথা বলতে বলতেই চলে আসে পরিবার প্রসঙ্গ। হেমসওয়ার্থ মনে করেন, মানুষ যদি চিরকাল বাঁচত, তাহলে সম্পর্কগুলো আর গুরুত্ব পেত না। অথচ তাঁর নিজের জীবনে পরিবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অভিনেত্রী এলসা পাটাকির সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য জীবন, তাঁদের তিন সন্তান। ‘লিমিটলেস’-এর নতুন মৌসুমে দেখা যাবে, কীভাবে তাঁর বেছে নেওয়া পথ শুধু তাঁকেই নয়, চারপাশের মানুষদের জীবনেও প্রভাব ফেলেছে।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ডিজনি প্লাস ও হুলুতে ১৫ আগস্ট মুক্তি পাবে ‘লিমিটলেস ২’।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Lading . . .