Advertisement

কেবল যৌনতাই সম্বল এ সিনেমার

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট, ২০২৫

‘ফল ফর মি’ সিনেমার দৃশ্য। নেটফ্লিক্স
‘ফল ফর মি’ সিনেমার দৃশ্য। নেটফ্লিক্স

প্রেম, প্রতারণার চেনা গল্প; সঙ্গে যৌনতা—ওটিটি প্ল্যাটফর্মে হিট হতে আর কী চাই। মুক্তির পর তাই নেটফ্লিক্সের অ-ইংরেজিভাষী সিনেমার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে জার্মান ইরোটিক থ্রিলার ‘ফল ফর মি’। কিন্তু গ্রীষ্মের ইউরোপে চোখজুড়ানো এক দ্বীপে চিত্রায়িত সিনেমাটি দর্শকপ্রিয়তা পেলেও সিনেমা হিসেবে কতটা জমল?

একনজরে
সিনেমা : ‘ফল ফর মি’
ধরন: ইরোটিক থ্রিলার
পরিচালক: শেরি হরম্যান
অভিনয়ে: সভেনজা জুং, তিজান মারেই, ভিক্টর মেতুলেত, থিও ট্রেবস
স্ট্রিমিং: নেটফ্লিক্স
দৈর্ঘ্য: ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট

গল্প কী নিয়ে
সিনেমার ছাঁচ হালকা রোমান্টিক ছবির মতো। কিন্তু পর্দায় যা ফুটে ওঠে জটিল ও অদ্ভুত সম্পর্কের সমীকরণ। স্প্যানিশ রিয়েল এস্টেট ব্যবসা, দুই বোনের সম্পত্তি নিয়ে টানাপোড়েন, আর যৌনতার মোড়কে রোমাঞ্চকর গল্প বুনতে চেয়েছেন পরিচালক শেরি হরম্যান। গল্পের প্রেক্ষাপট স্পেনের মায়োর্কার রৌদ্রস্নাত সমুদ্রসৈকত।

গল্পের কেন্দ্রে জার্মান তরুণী লিলি (সভেনজা জুং)। তিনি কর অডিটর, কিন্তু এ ছবিতে তাঁকে বারবার দেখা যায় অডিট টেবিলের চেয়ে ড্যান্সফ্লোরে কিংবা বাগানে। লিলি বেড়াতে আসেন তাঁর বোন ভ্যালেরিয়ার (তিজান মারেই) কাছে, যে কিনা প্রেমিক মানুর (ভিক্টর মেতুলেত) সঙ্গে মায়োর্কায় একটি বিশাল সম্পত্তি কিনে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে চায়।

কিন্তু লিলির মনে হয় মানু অতটা সহজ-সরল নয়, যতটা ভ্যালেরিয়া ভাবছে।
কাহিনি দ্রুত জটিল হয় যখন আবির্ভাব ঘটে রহস্যময় বারটেন্ডার টমের (থিও ট্রেবস)। পরে জানা যায়, টম ও এক রিয়েল এস্টেট এজেন্ট আসলে প্রতারণার ফাঁদ পাতছে দুই বোনকে ঘিরে। কী হবে শেষ পর্যন্ত?

যৌনতাই সম্বল
ছবিটি দেখতে গিয়ে মনে হয়, এটি যেন থ্রিলারের চেয়ে ‘ইরোটিক’ বেশি, গল্প আর চিত্রনাট্যের চেয়ে নির্মাতা কেবল যৌনতাকেই সম্বল করেছেন। ক্যামেরা বারবার খুঁজে ফিরেছে মায়োর্কার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর পাত্র–পাত্রীদের অন্তরঙ্গতা। দুনিয়ার নানা প্রান্তে এ ধরনের এন্তার সিনেমা তৈরি হয়েছে; কিন্তু ইরোটিক থ্রিলার হিসেবে দাগ কাটতে পেরেছে কম সিনেমাই। ‘ফল ফর মি’ও সম্ভবত ভুলে যাওয়া সিনেমা হিসেবেই থেকে যাবে।

গল্পেও গতি নেই। অতি ধীরগতির গল্পটি হঠাৎই শেষ হয়। গল্প সাধারণ যুক্তিও মেনে চলে না। লিলি একজন পেশাদার অডিটর হলেও সদ্য পরিচিত একজনের পরামর্শ যেভাবে এককথায় মেনে নেয়; সেটা অবিশ্বাস্য। এর মধ্যেও পরিচালক কিছু ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেছেন।

যেমন প্রতারণার গল্পটিকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া অথবা দুই বোনের মধ্যে আবেগঘন দ্বন্দ্ব। কিন্তু সমস্যা হলো, চরিত্রগুলো যতটা রঙিন পোশাক পরে, তাদের ভেতরের জীবন ততটাই ফাঁপা। কে নায়ক আর কে খলনায়ক, সেটা যখন দ্রুতই স্পষ্ট হয়ে যায়, তখন রোমাঞ্চের আর কী বাকি থাকে। সবচেয়ে বাজে ক্লাইম্যাক্সের দৃশ্যটি, বাজে সম্পাদনা আর ক্লিশে ঘটনার পুনরাবৃত্তি বলা যায় সিনেমাটির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছে!

সভেনজা জুংয়ের অভিনয় মন্দ নয়, বিশেষ করে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের দৃশ্যগুলোতে তাঁর অভিব্যক্তি ছুঁয়ে যায়। তবে বাকি অভিনেতাদের তেমন কিছু করার ছিল না; কারণ, কোনো চরিত্রেরই গভীরতা নেই। দারুণ লোকেশন চোখের আরাম দিলেও ‘ফল ফর মি’ তাই হয়ে রইল এক আক্ষেপের নাম।

Lading . . .