Advertisement

আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে দেশকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে: ফখরুল

জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট, ২০২৫

আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে দেশকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে: ফখরুল
আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে দেশকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে: ফখরুল

আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে এই দেশকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে এক আলোচনা সভায় দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে এই মন্তব্য করেন তিনি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জ্বল হোসেন মানিক মিয়া হলে অপর্ণা আলোক সংঘ সংগঠনের উদ্যোগে সামাজিক সুরক্ষা কতটা সুরক্ষিত? শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

আওয়ামী লীগ ভূমিধস ঘটিয়েছে
মির্জা ফখরুল বলেন, সব কিছু নির্ভর করছে যারা ক্ষমতায় যাচ্ছে তারা কীভাবে দেশ পরিচালনা করছে তার ওপর। আওয়ামী লীগ যেনতেন ভোট দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে এই দেশকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে। একেবারে বলা যায় যে ভূমিধস করে দিয়েছে। সেই জায়গায় এক-দেড় বছরে সব কিছু ঠিক করবে এটা মনে করার কারণ নেই। তবে কাজ শুরু করতে হবে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামনে আগাতে হবে।

দুর্নীতি মুক্ত হতে হবে
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে অর্থাৎ দুর্নীতির ঊর্ধ্বে উঠে ভবিষ্যৎ তৈরি করার জন্য কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ সব পারে। বাংলাদেশের মানুষ ’৬৯ এ পেরেছে, ’৭০ এ পেরেছে, ’৭১ পেরেছে। না পারার কোনো কারণ নেই। আর সবশেষে যেটা ’২৪ পেরেছে এটা তো অভাবনীয়, অসাধারণ।

সেই ক্ষেত্রে আমার মনে হয় যে, আমরা পারবো। আমাদের সামনের দিকে ধৈর্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে। এখন আমাদের যে সুযোগ এসেছে তাকে যদি কাজে লাগাতে পারি, কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি তাহলে আমাদের যে অভ্যুত্থান হলো সেই অভ্যুত্থানের কিছুটা মূল্যায়িত হবে এবং ছেলেরা যে প্রাণ দিল তারও কিছু মূল্যায়ন হবে।

সমাধানের পথ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বের সরকার
তিনি বলেন, সংকট সমাধানের পথ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বের সরকার। এই যে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে সমাধানের পথ কী? এটা আমার সিস্টেমের ওপর নির্ভর করবে। আমি যদি একটা জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন করতে পারি, আমি যদি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারি, সুষ্ু নির্বাচন করে আমি যদি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পার্লামেন্ট গঠন করতে পারি তাহলে সেখানে আমি জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে পারবো।

সচিবালয়ে উপদেষ্টারা অসহায়
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শেষ করে দেওয়া হয়েছে, স্বাস্থ্য শেষ হয়ে গেছে। এগুলোকে আবার নতুন করে গড়ে তোলার জন্য তো মানুষ লাগবে। সেই মানুষগুলো তৈরি করতে হবে। আজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আপনি সেক্রেটারিয়েটে যাবেন সেখানে গেলে ওই যে আমলারা বসে আছেন… তারাই সবকিছু নির্ধারণ করেন।

আমাদের উপদেষ্টা যারা দায়িত্ব পালন করছেন এখন… অনেক ক্ষেত্রেই তারা অসহায়। তারপরও আমরা আশা করি যে, তারা (উপদেষ্টারা) এতদিন যে চেষ্টা করেছেন সে চেষ্টাটা নিয়ে, যারা সংস্কারের যেসব কমিশনগুলো আছে তারাসহ আমরা সবাই মিলে একটা শুরু করতে পারি, যে শুরুটা দিয়ে আমরা একটা ভবিষ্যৎ একটা বাংলাদেশ যেটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের দিকে আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

তিনি বলেন, গ্রামের একজন স্কুলশিক্ষককে সমস্যা সমাধান করতে হলে তাকে ঢাকায় আসতে হবে কেনো? যেটার প্রয়োজন নাই সেটা জেলাতেই যথেষ্ট। কিন্তু ওই যে সিস্টেম। ওই সিস্টেমে যদি সেন্ট্রালে না আসে তাহলে ঘুষটা আসবে কোত্থেকে। এটাই বাস্তবতা… শুনতে খারাপ লাগবে বাট দ্যাট দা ট্রুথ।

ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক নিয়োগ হয় ঘুষ দিয়ে, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হয় ঘুষ দিয়ে, নার্সদের নিয়োগ হয় ঘুষ দিয়ে। তাহলে যেই ব্যবস্থাতে অনিয়ম চলতে থাকে, যে ধরনের বৈষম্য চলতে থাকে সেখানে রাতারাতি কিছু করে ফেলতে পারবে না এটা খুব ডিফিকাল্ট। আমাদের কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে যেতে হলে এমন সিস্টেমের মধ্যে যেতে হবে যাতে আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা অন্তত মিনিমাম যে ন্যায় বিচার সেই ন্যায় বিচারটা নিশ্চিত করবেন জনগণের।

সিস্টেম বদলাতে হবে
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কাঠামোগত সংস্কার দরকার। এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যে, আমাকে আগে আমার কাঠামোটাকে বদলাতে হবে এবং সেই কাঠামোতে আমাদের এই বিষয় গুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচার করতে হবে।

হতাশা যেখানে
মির্জা ফখরুল বলেন, গণ অভ্যুত্থানের পর যখনই আমরা নতুন করে রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তনের জন্য সংস্কার শুরু করেছি; তখনই তো বিবাদ শুরু হয়েছে, তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়েছে। গণতন্ত্রে যেতে হলে তর্ক-বিতর্ক হবেই। কিন্তু এমন জায়গায় যাচ্ছি মাঝে মাঝে যে জায়গায় গিয়ে হতাশা এসে যায়।

সংগঠনের প্রধান বীথিকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, সাবেক সাংসদ রেহানা আক্তার রানু, অর্থনীতিবিদ এম মাসরুর রিয়াজসহ স্থানীয় পর্যায়ের কয়েকজন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

Lading . . .