জবাবদিহির ব্যবস্থা তৈরি করতে নির্বাচন প্রয়োজন: তারেক রহমান
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০২৫

দেশে জবাবদিহির ব্যবস্থা তৈরি করতে নির্বাচন একান্ত প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, এদেশের মালিকানার একমাত্র দাবিদার দেশের নাগরিকরা। এ সত্যটাকে যদি আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই তাহলে মানুষের ভোটাধিকারের প্রশ্নে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, বাকস্বাধীনতার পক্ষে, একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অর্থাৎ, একটি জবাবদিহির পরিবেশ দেশে তৈরি করা একান্ত প্রয়োজন।
রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান কবি-সাহিত্যিকদের উদ্দেশে বলেন, এখানে আপনারা কবি-সাহিত্যিকরা লেখার স্বাধীনতার কথা বলেছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেছেন, আপনারা মতপার্থক্য তুলে ধরার কথা বলেছেন, সমালোচনার কথা বলেছেন। আমরা সেই অধিকারগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি যদি আমরা একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হই। এবং সেটি একমাত্র করা সম্ভব মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে।
তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সব শহীদের রক্তের দায় পরিশোধের সময় এসেছে আজ। এদেশের একজন কৃতজ্ঞ সন্তান হিসেবে আজ এই সুন্দর অনুষ্ঠানে আপনাদের-আমাদের সবার কণ্ঠে ঐক্যের প্রতিধ্বনি উচ্চারিত হোক।
‘আমাদের অবস্থান অভিন্ন’
দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তারেক বলেন, আজকের এই শ্রাবণ দিনে যে বিশ্বাস আর প্রত্যয়ের কথা বহু বক্তা এখানে বলেছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে উচ্চারণ করেছেন আমাদের অবস্থান, আমাদের আদর্শিক অবস্থান- আমি মনে করি এক এবং অভিন্ন। এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতি আপনাদের দৃঢ় অবস্থানের সঙ্গে আমাদের বিন্দুমাত্র পার্থক্য নেই। যে স্বৈরাচারকে বাংলাদেশের মানুষ কিছুদিন আগে বিতাড়িত করেছে সেই স্বৈরাচারের পুনর্জাগরণ প্রতিহত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আপনাদেরই মতো।
তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে হয়তো আপনাদের সবার আদর্শিক অবস্থান এক নাও হতে পারে। পলিটিক্যাল আইডিওলজি এক নাও হতে পারে। কিন্তু এটি কোনো সমস্যার বিষয় নয়। এটিকে কেউ দয়া করে সমস্যা হিসেবে দেখবেন না। বিষয় হচ্ছে যে, এই দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি আমাদের অবিচল আস্থা প্রকাশের জায়গায় কিন্তু আমরা সবাই এক।
‘মৌলবাদের অভয়ারণ্য যেন না হয়’
তারেক বলেন, কিছু বক্তা এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন, আমিও একইভাবে বলতে চাই যে, এই দেশ কোনো চরমপন্থা বা মৌলবাদের অভয়ারণ্যে যেন কোনোদিন পরিণত হতে না পারে। সেটিই আমাদের প্রত্যাশা, সেটিই আমাদের লক্ষ্য।
তারেক রহমান বলেন, কবি সাহিত্যিকরা যুগে যুগে নিজেদের মাত্রাকে এতটা উঁচুতে নিয়ে গেছেন যার ফলে অনেক সময় দেখেছি, তাদের নিজেদের পরিচয়, দেশ এবং জাতির পরিচয় সমার্থক হয়ে উঠেছে। যেমন উইলিয়াম শেক্সপিয়র বা উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ ব্যক্তি পরিচয়ের চেয়ে ইংরেজি সাহিত্যে বড় নাম হয়ে উঠেছেন। একইভাবে আমরা বলতে পারি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে ওঠেন এই মহাদেশের পরিচয়ের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঠিক এমনিভাবে কবিতা ও দেশাত্মবোধক সঙ্গীতকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে একাকার করে দেশ গঠন ও দেশাত্মবোধের প্রেরণা নিয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, জীবন বাংলাদেশ আমার মরণ বাংলাদেশ’ এই গানকে তার দল বিএনপির দলীয় সঙ্গীতে পরিণত করেছেন অনুপ্রেরণার গভীর শ্রদ্ধাবোধ থেকে। শহীদ জিয়ার সেই আদর্শ আজও সমুন্নত জাতীয়তাবাদের আদেশের প্রতিটি নেতার, প্রতিটি কর্মীর মাঝে।
আরও পড়ুন
কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হানের সভাপতিত্বে ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির সঞ্চালনায় এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান কবি নুরুল ইসলাম মনি, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদি আমীন, আমাদের সময়ের সম্পাদক লেখক আবু সাঈদ খান, কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা কবি মতিন বৈরাগী, সাধারণ সম্পাদক কবি রেজাউল উদ্দিন স্ট্যালিন, সহ-সভাপতি কবি অনামিকা হক লিলি, কবি এ বি এম সোহেল রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি শ্যামল জাকারিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক কবি নুরুন্নবী সোহেল, কবি শাহিন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।