হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০২৫

পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মার পানি প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে। রোববার (১৭ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১২ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার। আর মাত্র এক মিটার অর্থাৎ ১৩ দশমিক ৮০ উচ্চতা হলে পদ্মার পানি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।
উপজেলার ধাপাড়ি, আরামবাড়িয়া, ইসলামপুরসহ নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোর নদী রক্ষা বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশের উপক্রম হয়েছে। এদিকে, উপজেলার নদী তীরবর্তী ফসলি জমিতে পানি উঠে গেছে। উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে শতশত একর জমির কলাবাগান এখন পানির নিচে। এখানকার শাকসবজির জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। ফলে এখানকার ফসল নষ্ট হতে শুরু করেছে। চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। চরে গো-খাদ্যের অভাবে গবাদিপশু নিয়েও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। চরের গরু-মহিষের বাথান ভেঙে গরু-মহিষ নিয়ে সবাই চলে আসছেন।
রোববার সকালে সরেজমিনে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সরেজমিনে দেখা যায়, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি গার্ডারের মধ্যে ১৪টি পানির নিচে। আরেকটি গার্ডারের কাছে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বাড়ার গতি এভাবে অব্যাহত থাকলে রাতের মধ্যে ১৫ নং গার্ডারের কাছে পানি পৌঁছে যাবে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা খাবার দোকান, ফলমূল ও খেলনার দোকানপাটে পানি উঠতে শুরু করেছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি দোকান ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান সরিয়ে নিয়েছেন। ব্রিজের নিচে ওয়াক্তিয়া মসজিদের চারপাশে পানি উঠে গেছে। নদীর তীর ঘেষে নির্মিত মসজিদের দুই একদিনের মধ্যে পানিতে তলিয়ে যেতে পারে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে ফুচকা বিক্রেতারা বলেন, যেখানে আমার ফুচকার দোকান ছিল সেখানে পানি উঠে গেছে। এজন্য দোকান সরিয়ে নিয়েছি। যারা ব্রিজের নিচে বেড়াতে আসত তারা এখন আসতে পারছে না।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (রিডার) হারিফুন নাঈম ইবনে সালাম বলেন, শনিবার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পানির উচ্চতা ছিল ১২ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার। আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত পানির উচ্চতা ছিল ১২ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার। গতকাল থেকে আজকে ভোর ৬টা পর্যন্ত পানির উচ্চতার পরিমাপ একই ছিল।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ পয়েন্টে পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১২ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার। বিপৎসীমা থেকে এক মিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মমিন বলেন, পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। এখানকার কলাবাগানগুলোতে পানি উঠেছে। ফলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন