Advertisement

কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকর্মীর মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগ

যুগান্তর

প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

রাজশাহীতে কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকর্মীর বাসায় গিয়ে তার স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের সহকর্মী।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম কামরুল আহসান কাজল। তিনি রাজশাহীর গোদাগাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক। তিনি রাজশাহী শহরে থাকেন। ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা-ও একই কলেজের অন্য বিভাগের প্রভাষক। তিনিও পরিবারের সঙ্গে শহরে থাকেন।

তিনি সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ এবং কলেজের অধ্যক্ষ মাইনুল ইসলামের কাছে প্রভাষক কামরুল আহসান কাজলের বিরুদ্ধে পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে এই শিক্ষক উল্লেখ করেন, গত ৪ আগস্ট সকালে সহকর্মী কামরুল আহসান তার বাসায় যান। ওই সময় তিনি এবং তার স্বামী বাসায় ছিলেন না। বাসায় একাই ছিল সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া তার মেয়ে। কামরুল আহসান তার মেয়ের শ্লীলতাহানি করেন। তার মেয়ে চিৎকার দিতে শুরু করলে একপর্যায়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যান শিক্ষক কামরুল আহসান।

অভিযোগকারী জানান, বাসায় যাওয়ার আগে কামরুল আহসান তাকে এবং তার স্বামীকে ফোন করে নিশ্চিত হন যে তারা বাসায় নেই। এরপরই তিনি বাসায় যান। বিকালে কলেজ থেকে ফিরে বাসায় গেলে তিনি তার মেয়ের কাছে সবকিছু শোনেন। পরে মোবাইল ফোনে কথা হয় কামরুল আহসানের সঙ্গে। ফোনকলটি রেকর্ড করে রাখা হয়েছে। কামরুল আহসান ঘটনার কথা স্বীকার করে হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অডিও রেকর্ড এবং হোয়াটসঅ্যাপের স্ক্রিনশট ইউএনও এবং কলেজের অধ্যক্ষকে দেওয়া হয়েছে।

ফোনকল রেকর্ডটিতে শোনা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার সময় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী তার কাছেই বর্ণনা দিচ্ছে যে তিনি কিভাবে তার শ্লীলতাহানি করছেন। একপর্যায়ে ওই ভুক্তভোগীর মা ‘আমার সব বোঝা হয়ে গেছে’ বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ পাওয়ার পর গোদাগাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মাইনুল ইসলাম মঙ্গলবার একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডেকেছিলেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি তাকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়নি। ‘অনুসারী’ হওয়ায় অধ্যক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে কলেজের অন্য শিক্ষকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মঙ্গলবার অধ্যক্ষ মাইনুল ইসলামকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও গোদাগাড়ীর ইউএনও ফয়সাল আহমেদ জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি দুপক্ষকে ডেকে সবকিছু শুনেছেন। এ বিষয়ে থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি অভিযোগের কপির উপরে লিখে দিয়েছেন।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, অভিযোগের কপিটি ম্যাডাম (ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা) থানায় ডিউটি অফিসারের কাছে দিয়ে গেছেন। কিন্তু ঘটনাস্থল রাজশাহী শহরে। তাই সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগটা করতে হবে। এটা জানিয়ে দিয়েছি।

অভিযোগ অস্বীকার করে প্রভাষক কামরুল আহসান বলেন, ওই পরিবারের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। সেই সূত্রে বাসায় গিয়েছিলাম। আমার সহকর্মীর মেয়েকে আমি মেয়ের মতোই ভালোবাসি। তাই একটু আদর করেছিলাম। শ্লীলতাহানির অভিযোগ সত্য নয়।

আরও পড়ুন

Lading . . .