Advertisement

‘অদৃশ্য শিক্ষক’- নেই ক্লাসরুমে, আছেন বেতনের খাতায়

কালবেলা

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট, ২০২৫

অভিযুক্ত ডা. মাহফুজুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত
অভিযুক্ত ডা. মাহফুজুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) ডেন্টাল ইউনিটের প্রভাষক ডা. মাহফুজুর রহমান। শিক্ষার্থীরা শুনেছেন—তাদের বিভাগে একজন প্রভাষক আছেন। কিন্তু সেই শিক্ষককে কেউ কখনো ক্লাসরুমে দেখেননি, লেকচারও শোনেননি। অথচ সরকারি রেকর্ডে তিনি নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন, আর প্রতি মাসেই তুলছেন বেতন-ভাতা।

জানা গেছে, পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট বিভাগের প্রভাষক ডা. মাহফুজুর রহমান। অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কলেজে অনুপস্থিত থেকেও সরকারি ভাতা ভোগ করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজে যান। হাজিরা দেওয়ার জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানারে আঙুল রাখেন। তারপর আর ক্লাসে না গিয়ে সরাসরি চলে যান রাজশাহীর ফায়ার সার্ভিস মোড়ের পাশে তার ব্যক্তিগত চেম্বার ‘ডেন্টাল এইড’-এ।

সন্ধ্যা নামার আগে আবার কলেজে ফিরে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে ‘অফিস ত্যাগ’ দেখান। ফলে সরকারি উপস্থিতি খাতায় প্রতিদিনই তার নাম পাওয়া যায়- কিন্তু বাস্তবে ক্লাসরুমে তিনি নেই।

ইন্টার্ন চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান বলেন, ডা. মাহফুজুর রহমান নামে একজন স্যার আমাদের এখানে আছেন শুনেছি। কিন্তু কোনোদিন চোখে দেখিনি। তিনি আমাদের একটিও ক্লাস নেননি, পরীক্ষা নেননি। আমরা তাকে চিনিই না।

রামেক ডেন্টাল ইউনিট প্রধান ডা. আবুল হোসেন জানান, তিনি অসুস্থ মানুষ। লিভারে সিরোসিস, হার্টে বাইপাস হয়েছে। তিনি নিয়মিত ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেন। তবে পরে কোথায় যান, সেটা বিভাগ বলতে পারবে।

অধ্যক্ষ ডা. খন্দকার মো. ফয়সল আলম বলেন, তিনি এভাবে ক্লাস না নিয়ে বেতন নিচ্ছেন—এটা আমি আপনার কাছ থেকেই জানলাম! যদি আগে জানতাম, মেডিকেল বোর্ড করে তাকে অবসরে পাঠাতাম। তবে তার চাকরির বয়স এখন শেষ হয়ে এসেছে, তাই আমরা আর বিষয়টি টেনে নিতে চাইনি।

তিনি আরও বলেন, দশ বছর ধরে তিনি কাজ করছেন না—এটা তো অজানা ছিল। ডেন্টাল ইউনিট থেকেও আমাদের জানানো হয়নি। অকাজের লোক রেখে তো আমাদের কোনো লাভ নেই।

ডা. মাহফুজুর রহমান দাবি করেন— তিনি অসুস্থ। তাই প্রতিদিন হাজিরা দিয়ে তিনি বাড়ি যান। তবে তিনি চেম্বারে রোগী দেখেন না বলেও দাবি তার। এমন ছুটি নেওয়া যায় কিনা, এ বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে নিয়মে তো যায় না। তবে অসুস্থ বলে চলে যাই।

Lading . . .