Advertisement

কোচিং সেন্টারে অস্ত্র-বিস্ফোরক, পরিচালক-সহযোগীদের রিমান্ডে নিতে আবেদন

যুগান্তর

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০২৫

24obnd

রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জ মহল্লার একটি কোচিং সেন্টারে অবৈধ অস্ত্র বিস্ফোরক, সামরিক সরঞ্জাম ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করছে পুলিশ।

শনিবার রাতে বোয়ালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম বাদী হয়ে অস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদক আইনে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে ডক্টরস ইংলিশ নামের কোচিং সেন্টারটির পরিচালক মুনতাসিরুল আলম অনিন্দ্য, তার সহযোগী রবিন ও ফয়সালকে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোতালেব হোসেন রোববার সকালে আসামিদের রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠিয়ে প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছেন।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গণমাধ্যম বিষয়ক মুখপাত্র উপ-কমিশনার (ডিসি) গাজিউর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার প্রধান আসামি মুনতাসিরুল আলম অনিন্দ্য নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকার শফিউল আলম লাটকুর ছেলে। লাটকু রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি। অন্যদিকে অনিন্দ্য রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই। বাকি দুই আসামি ফয়সাল ও রবিন অনিন্দ্যের সহযোগী বলে জানা গেছে। তাদের বাড়িও কাদিরগঞ্জ এলাকায়। মামলায় অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে অভিযান শেষে শনিবার সন্ধ্যার পর সেনাবাহিনী আটককৃতদের আরএমপির বোয়ালিয়া থানায় সোপর্দ করেন।

এদিকে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র ছাড়াও বিস্ফোরক মজুত রাখেন। পাশাপাশি মাদকের কারবারেও জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে সংগৃহীত তথ্যে জানা গেছে। এছাড়া কোচিং সেন্টারের আড়ালে অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত, অস্ত্র তৈরির কাজও গোপনে চালানো হচ্ছিল। এসব অস্ত্র ও বিস্ফোরক রাষ্ট্রবিরোধী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ব্যবহার করা হতো বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

অনিন্দ্য অতীতে রাষ্ট্র ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িয়ে একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিলেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ অভিযান শুরু করা হয় কাদিরগঞ্জের আলোচিত ডক্টরস ইংলিশে। পরিচালক মুনতাসিরুল আলম অনিন্দ্যকে আটকের পর তার অপর দুই সহযোগী রবিন ও ফয়সালকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে কোচিং সেন্টারটির ভেতরে অভিযান চালিয়ে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক ছাড়াও কিছু সামরিক সরঞ্জাম এবং বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় অপারেশন সম্পন্ন ঘোষণা করা হয়।

সেনাবাহিনীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযানে ‘ডক্টরস ইংলিশ’ নামের প্রতিষ্ঠানে থেকে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি, সামরিক মানের দূরবিন ও স্নাইপার স্কোপ, ছয়টি দেশীয় অস্ত্র, সাতটি বিদেশি ধারাল ডেগার, পাঁচটি উন্নতমানের ওয়াকিটকি সেট, একটি সামরিক মানের জিপিএস, একটি টিজার গান, দেশি-বিদেশি কার্টিজ, বিপুল অব্যবহৃত সিমকার্ড, বিস্ফোরক বানানোর সরঞ্জামাদি, ছয়টি কম্পিউটার, বিদেশি মদ, নগদ ৭ হাজার ৪৪৫ টাকা এবং ১১টি নাইট্রোজেন কার্টিজ। নাইট্রোজেন কার্টিজগুলো বিস্ফোরকের কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় সেগুলো এরই মধ্যে বোম ডিসপোজাল ইউনিট নিষ্ক্রিয়করণ করেছে বলেও সেনাবাহিনীর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, রাজশাহী সেনা ক্যাম্প, ৪০ ইস্ট বেঙ্গলের (মেকানাইজড) একটি চৌকস দল অন্যদের সঙ্গে এই বিশেষ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে। বিপুল অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত ও তৈরির অভিযোগে কোচিং পরিচালক অনিন্দ্য এবং সন্দেহভাজন হিসেবে ফয়সাল ও রবিন নামের আরও দুইজনকে আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

Lading . . .