Advertisement

কোচিংয়ে অস্ত্র-বিস্ফোরক, খায়রুজ্জামান লিটনের ভাইসহ আটক ৩

কালবেলা

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০২৫

খায়রুজ্জামান লিটনের ভাইসহ তিনজনকে আটক করা হয়। ছবি : কালবেলা
খায়রুজ্জামান লিটনের ভাইসহ তিনজনকে আটক করা হয়। ছবি : কালবেলা

রাজশাহী নগরীর একটি কোচিং সেন্টার ঘিরে চালানো সেনাসদস্যদের অভিযানে উদ্ধার হয়েছে অবৈধ অস্ত্র ও বিপুল বিস্ফোরক। সেখান থেকে আটক করা হয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাইসহ তিনজনকে।

শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী সেনা ক্যাম্প, ৪০ ইস্ট বেঙ্গলের (মেকানাইজড) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

এর আগে গতকাল শুক্রবার রাত দেড়টা থেকে নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় ডক্টর ইংলিশ নামের ওই কোচিং সেন্টারে অভিযান শুরু হয়। সেখান থেকে আওয়ামী লীগ নেতা লিটনের চাচাতো ভাই, ডক্টর ইংলিশ কোচিং সেন্টারের মালিক মোন্তাসেবুল আলম অনিন্দ্যসহ তিনজনকে আটক করা হয়।

রাজশাহী সেনা ক্যাম্প থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নগরীর বোয়ালিয়া থানার দরিখরবোনা এলাকায় ৪০ ইস্ট বেঙ্গলের (মেকানাইজড) একটি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। দীর্ঘ এক মাসের গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানে অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটক অন্য দুজন হলেন মো. রবিন ও মো. ফয়সাল। এই দুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে।

শরিবার বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত থাকা এই অভিযানে ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি, সামরিক মানের দুরবিন ও স্নাইপার স্কোপ, ৬টি দেশীয় অস্ত্র, ৭টি বিদেশি ধারালো ডেগার, ৫টি উন্নতমানের ওয়াকিটকি সেট, একটি সামরিক মানের জিপিএস, একটি টিজার গান, বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি কার্টিজ, বিপুলসংখ্যক অব্যবহৃত সিমকার্ড, বিস্ফোরকসহ বোমা বানানোর সরঞ্জামাদি, ৬টি কম্পিউটার সেট, ৭ হাজার ৪৪৫ টাকা ও দেশি-বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া পাওয়া যায় ১১টি নাইট্রোজেন কার্টিজ, যেগুলো বিস্ফোরণের কাজে ব্যবহৃত তাজা সামগ্রী হওয়ায় বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আরও তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযানের কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে। অবৈধ অস্ত্র, বিস্ফোরক কিংবা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও সেনাবাহিনীর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এদিকে শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এসে অভিযানস্থলের পাশে ১১টি বোমা নিষ্ক্রিয় করে। এ ছাড়া পরে একটি ডুবুরি দল গিয়ে ‘ডক্টর ইংলিশের’ সামনের পুকুরে তল্লাশিতে নামে। পুকুরটিতেও অস্ত্র থাকতে পারে— এমন ধারণা থেকেই মূলত সেখানে ডুবুরি দল তল্লাশি চালায়।

এই অভিযানের বিষয়ে গণমাধ্যমে শুধু একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনী কোনো প্রেস ব্রিফিং কিংবা বক্তব্য উপস্থাপন করেনি।

জানতে চাইলে আরএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. গাজিউর রহমান বলেন, ‘যেহেতু এটি সেনাবাহিনীর অভিযান ছিল। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের কাছে এগুলো (উদ্ধার অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ অন্যান্য জিনিসপত্র) এখন পর্যন্ত হ্যান্ডওভার (হস্তান্তর) করেনি। সুতরাং এ নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আপাতত কোনোকিছু বলার নেই। আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে এ নিয়ে গণমাধ্যমের কোনোকিছু জানার থাকলে আমরা কথা বলব।’

রাজশাহীর এই অভিযানের বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও জানানো হয়।

Lading . . .