উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ
প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে কৃষক সমিতির নামে পাওয়ার স্প্রে মেশিন ও ধান লাগানোর মেশিন দেওয়ার কথা বলে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মেশিন না দিয়ে উল্টো ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে ২নং আমগাঁও ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সুমনের বিরুদ্ধে।
হরিপুর উপজেলাধীন নন্দগাঁও গনাগাছি দানা ফসল কৃষকদল সমিতির সাধারণ সম্পাদক নীল পদ্ম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে আমাদের সমিতি পরিচালনা করে আসছি। ২নং আমগাঁও ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাখাওয়াত হোসেন সুমন একটি ধান লাগানো মেশিন বরাদ্দ দেওয়ার কথা দেন।
তিনি আরও বলেন, গত ৩০ জুলাই সকাল ১১টার দিকে তিনি আমাদের হরিপুর কৃষি অফিসে ডেকে আমাদের ১০০ টাকার ৩টি স্ট্যাম্প কিনতে বলেন। পরে সেই ৩টি স্ট্যাম্পে আমাদের তিন সদস্যের (নীল পদ্ম, বদরুল, ডিজেন্দ্রনাথ) সই নিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন।
সমিতির সদস্য বদরুল বলেন, ওই দিন বুধবার বিকেল ৫টায় জাদুরানী বাজারের হাফিজুলের চায়ের দোকানে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাখাওয়াত হোসেন সুমন আমাদেরকে জানান— ‘মেশিন নিতে হলে তাকে ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে’।
সমিতির অন্য সদস্য দীজেন্দ্রনাথ বলেন, আমরা তাকে চা পান করার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দিতে রাজি হই। কিন্তু তিনি বলেন, ৩০ হাজার টাকার এক টাকার কম হলে সেই মেশিন অন্য সমিতিতে দিয়ে দেব বলে চলে যান।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক নীল পদ্ম জানান, সেদিন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তৌহিদ-ই-খুদা আমাদের স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে বলেন, আমাদের নামে বরাদ্দকৃত পাওয়ার স্প্রে মেশিন অফিসে রেখে ধান লাগানোর মেশিনটি আপনারা পাবেন। কিন্তু আমরা কোনো মেশিনই পাইনি।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তৌহিদ-ই-খুদা বলেন, আমি তখন অফিসে ছিলাম। অনেকগুলো স্ট্যাম্পে সেদিন স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা বলেছিলাম, ইউএনও অফিসের কোনো কাজে পাওয়ার স্প্রে মেশিনটি লাগলে দিতে হবে। আমরা মেশিন রাখতে চাইনি।
অভিযোগের বিষয়ে ২নং আমগাঁও ইউনিয়নের দ্বায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সুমন কালবেলাকে বলেন, আমি ২নং আমগাঁও ইউনিয়নে সুনামের সঙ্গে কাজ করছি। আমার বিরুদ্ধে মেশিন বাবদ যে ঘুষ দাবির বিষয়টি বলা হচ্ছে তা সঠিক নয়।
তিনি আরও বলেন, আমি তাদের বলেছি— সমিতিগুলো ভালো কাজ করছে, তাদের আমি সেই মেশিন দেব। আমি কারও কাছে কোনো টাকা-পয়সা চাইনি। আমি তাদের মেশিন দিয়ে দিয়েছি। আমার কাছে তাদের স্বাক্ষর করা স্ট্যাম্প আছে।
এ বিষয়ে হরিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুবেল হুসেন কালবেলাকে জানান, আমরা উক্ত সমিতিকে মেশিন বিতরণ করেছি। আমাদের কাছে স্বাক্ষর করা স্ট্যাম্প আছে। মেশিনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। আর ঘুষ দাবির বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে দায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মণ কালবেলাকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।