প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ি ইউনিয়নের বৃহত্তম বাজার শুটিবাড়িতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) আকস্মিক পরিদর্শনের খবরে অধিকাংশ ফার্মেসি (ওষুধের দোকান) একযোগে বন্ধ হয়ে যায়।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ফার্মেসিগুলো হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে পড়ায় ওষুধ কিনতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। জরুরি ওষুধের জন্য অনেকেই দোকানগুলোর সামনে অপেক্ষা করেও কোনো সাড়া পাননি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইউএনও আসছেন— এমন খবরে বাজারের একাধিক ফার্মেসি দ্রুত সাঁটার নামিয়ে ফেলে। এক সময় গোটা বাজারে যেন ‘ভৌতিক নীরবতা’ নেমে আসে।
রোগীর স্বজন রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমার ছোট ভাইয়ের জ্বর অনেক বেড়ে যাওয়ায় শুটিবাড়ি বাজারে ওষুধ আনতে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি, সব দোকান বন্ধ। একজন দোকানদারকে ফোন করলে তিনি জানান— ‘ইউএনও স্যার বাজারে, পরে আসেন।’ কিন্তু ওষুধ তো এমন জিনিস, যেটা দেরি করলে বিপদ হতে পারে।
আরেক ভুক্তভোগী দিনমজুর আমিরুল হোসেন বলেন, আমার স্ত্রী হার্টের রোগী। প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে ওষুধ খায়। আজ বিকেলে ওষুধ কিনতে এসে দেখি সব বন্ধ। অনেকক্ষণ বসে থেকেও কোনো লাভ হয়নি। এমন হয় কেন?
স্থানীয় গৃহবধূ সালমা খাতুন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা এলেই দোকান বন্ধ! তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় যাব? কাছাকাছি হাসপাতাল নেই, এখন দোকানও বন্ধ!
একজন ফার্মেসি মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাজারে অনেকেই লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ বিক্রি করে। হঠাৎ অভিযান হলে সবাই ভয় পেয়ে যায়। যারা বৈধভাবে ব্যবসা করছে, তারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে সবারই উচিত নিয়ম মেনে চলা ও কাগজপত্র হালনাগাদ রাখা।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, আমরা ওইদিন একটি অসহায় পরিবারকে হুইলচেয়ার দিতে গিয়েছিলাম, কোনো অভিযানে যাইনি। বাজারে ঢোকার আগেই দোকান বন্ধ হয়ে গেছে শুনে আমি নিজেই অবাক হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, অভিযান পরিচালিত হয় জনস্বার্থে। যারা নিয়ম মেনে ব্যবসা করেন, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে কারা অকারণে দোকান বন্ধ করে জনসাধারণের ভোগান্তির কারণ হয়েছেন, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে স্থানীয়দের দাবি, ওষুধের মতো জরুরি সেবাপণ্য বিক্রির দোকান যেন কখনো অকারণে বন্ধ না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকর মনিটর ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ প্রয়োজন।