আমরা হাসিনার বিচার না করলে কারা করবে : গয়েশ্বর
প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘এখন বিচারের কথা উঠছে। সামনে আরও বেশি উঠবে। আগে সংস্কার, আগে বিচার তারপরে নির্বাচন। মাইর তো আমরা খাইছি, সন্তান তো আমরা হারাইছি। আমরা হাসিনার বিচার না করলে কারা করবে।’
বুধবার (০৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রংপুর নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপির বিজয় শোভাযাত্রা শুরুর আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা চাই তাদের বিচার হবে এবং বিচারের রায়ের পরে জনগণের মধ্যে সংশয় আসবে না যে তারা ন্যায়বিচার পায়নি। দেশের প্রচলিত আইনে দোষ নির্ধারিত হয়ে তাদের বিচার হবে, আমাদের ইশারায় না। বিচারক তাদের বিচার করবেন বিবেক ও আইনের দিকে থেকে অপরাধ নির্ধারণ করবেন- সেটা তাদের দায়িত্ব।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বিচার দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিচারটা ওদের হবে কেন ওদের দোসরদের হবে না? একটা জোট ছিল না ১৪টা দলের। তো ১৪ দিনের ওরা কী ফেরত পেয়ে গেছিল ৫ আগস্টের পর? ওদের বিচার হবে না? বিচার হবে বিচারের মতো, নিয়মের মধ্যে প্রশাসন ও আদালতের মাধ্যমে। সুতরাং নির্বাচন হলে বিচার করাটা আরও সহজ হয়ে যাবে। ওরা দেশে আসুক বা না আসুক অপরাধীর বিচার করতে তো কোনো অসুবিধা নেই।’
জাতীয় পার্টিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এখানে একটা ভাইরাস আছে কিন্ত আপনারা তো মুখে বলতেছেন কিছু নেই। আগামী নির্বাচনটাও রংপুরের জন্য একটা পরীক্ষা। করোনার জন্য সর্দি, কাশি ও জ্বর হলে পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলে করোনা না কিন্তু পজিটিভ আসলে করোনা। সুতরাং ভাইরাস নেই আগামী নির্বাচনে আপনাদের প্রমাণ করতে হবে বিশেষ মার্কার ভাইরাস মুক্ত এলাকা হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রংপুরবাসীর জন্য আজকে বড় চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্রের উত্তরণে ধানের শীষের ভোট ও সমর্থনে জনগণকে উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে ভুল ভাঙানোর জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করতে হবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আপনাদের আত্মীয়-স্বজন কেউ জাতীয় পার্টি বা নৌকা মার্কা থাকতে পারে। তারা কিন্তু আপনাদের ১৬ বছর রক্ষা করেনি। আপনাদের মারতে, নির্যাতন করতে কিন্তু দ্বিধাবোধ করেনি। রংপুরের অনেক মানুষ এলাকায় থাকতে না পেরে ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালিয়েছে। এজন্য তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করলে কিন্তু জনক্ষোভ থাকবে। আমি বলছি না তাদের ধরে মারেন। আপনাদের হাতে কারও বিচার করবেন না। আইনের হাতে সোপর্দ করবেন, নিয়মমাফিক তাদের বিচার হবে ।
জুলাই ঘোষণা প্রসঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়েছে, সেখানে আমাদের মতামত রয়েছে। সব মতের সঙ্গে আমরা একমত নই, তবে বিএনপির অবস্থানের কারণেই তারা ঘোষণাপত্র দিতে পারেনি- এমন একটি আওয়াজ তোলা হয়েছিল। তা বন্ধ করতে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সহনশীল ভূমিকা পালন করেছি। অনেক মতপার্থক্য থাকলেও আমরা জোরাজুরি করিনি, বরং সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি।’
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন দিবস উপলক্ষে গ্র্যান্ড হোটেল মোড় থেকে বিএনপির একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়, যা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
শোভাযাত্রায় রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
আরও পড়ুন