‘সবাই খালি ছবি তুলি নিয়্যা যায়, কেউ সাহায্য দেয় না’
প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫

‘সবাই খালি ছবি তুলি নিয়্যা যায়, কেউ সাহায্য দেয় না। হামরা গরিব মানুষ, তিস্তাত ঘর ভাঙ্গিল, এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাইনো না’। তিস্তা নদীর ভাঙনের খবর সংগ্রহকালে ক্ষতিগ্রস্ত গোলেজা বেগম (৪৫) এভাবেই চরম আক্ষেপের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন।
তিনি বলেন, ‘এ যাবৎ তিস্তার ভাঙনে ৬-৭ বার বাড়ি ভাঙা নাগছে। গাছপালা, জমিজমা সব নদীত চলি গেইছে। হামরা নিঃস্ব হয়া গেইছি। এইব্যার মানষ্যার জায়গাত ঘর তুলি আছি। কোনো সরকারি সহযোগিতা অ্যালাও পাইনো না।’
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে রংপুরের পীরগাছার ছাওলা ইউনিয়নের পানিয়ালঘাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শুধু গোলেজা বেগম নয় তার মতো ওই এলাকার প্রায় ৭০-৮০টি পরিবার গত ১০-১৫ দিনে তিস্তার ভাঙনে বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কেউ কেউ হয়েছেন নিঃস্ব। সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৫৫টি পরিবারকে ইতোমধ্যে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা জানা গেলেও অনেকেই সেই সাহায্য পাননি।
কিছু ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, ৩০ কেজি চাল দিয়ে কী হয়? সরকার যদি বাড়িঘর সরানো বা মেরামতের খরচ দিত, তাহলে উপকার হতো।
নদীপাড়ের বাসিন্দা আনছার আলী জানান, জীবনে বহুবার নদীভাঙনের কারণে বাড়িঘর সরাতে হয়েছে। তিনি এর স্থায়ী সমাধান চান। তার অভিযোগ, এখন নদী ভাঙছে, আর এখনই জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এগুলো যদি শুকনো মৌসুমে দেওয়া হতো, তাহলে এই সময়ে ভাঙত না। এখন এগুলো সব পানিতে চলে যাবে, কোনো কাজ হবে না।
এ বিষয়ে ছাওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, ভাঙন রোধে পাউবো থেকে ৬ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ৫৫টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। কিছু পরিবার বাদ পড়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করে শিগগিরই সহায়তা দেওয়া হবে। নগদ অর্থ সাহায্যের বিষয়েও কথা হয়েছে, বরাদ্দ পেলে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল জানান, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারিভাবে যা বরাদ্দ ছিল তা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে এবং বরাদ্দ পেলে তা বিতরণ করা হবে।