প্রকাশ: ১৯ আগস্ট, ২০২৫

ইসলামে কসম শুধু আল্লাহর নামেই করতে হয়। আল্লাহ ছাড়া কারও নামে কসম করা হারাম ও ছোট শিরক, যা বড় গুনাহসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহর ছাড়া যে কোনো ব্যক্তি বা বস্তু যেমন ফেরেশতা, নবিজি (সা.), কাবা, আমানত, নামাজ, বাবা-মা বা কোনো দরবেশের নামে কসম করা হারাম।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) ওমর ইবনুল খাত্তাবকে (রা.) বাহনে আরোহণ করা অবস্থায় তার পিতার নামে কসম করতে দেখলেন। তখন তিনি তাকে ডেকে বললেন, সাবধান! আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ কসম করতে চাইলে সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে, নইলে যেন চুপ থাকে। (সহিহ বুখারি: ৬১০৮)
সাঈদ ইবনে আবু উবায়দা (রহ.) বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এক ব্যক্তিকে এভাবে কসম করতে শুনলেন ‘না, এ কাবার কসম!’ তখন ইবনে ওমর (রা.) বললেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সা.) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে কসম করলো, সে শিরক করল। (সুনানে আবু দাউদ: ৩২৫১)
আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে কসম করলে ইসলামে তা কসম গণ্য হয় না। তাই তা রক্ষা করার বাধ্যবাধকতা থাকে না এবং ভঙ্গ করলে কাফফারাও দিতে হয় না। এ রকম কসম যেহেতু শিরক ও হারাম কাজ তাই না জেনে এ রকম কসম করে ফেললে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, কেউ যদি আল্লাহর নামে কোনো কসম করে পরে তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, কসমটি ভেঙে ফেলে, তাহলে সেজন্য কাফফারা দিতে হয়। কসমের কাফফারা হলো দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়ানো অথবা দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। এভাবে কাফফারা আদায় করার সামর্থ্য না থাকলে লাগাতার তিন দিন রোজা রাখতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰهُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ فَکَفَّارَتُهٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَهۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُهُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ
আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা নিজেদের পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান করা, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। যে সামর্থ্য রাখে না, তার জন্য তিন দিন রোজা রাখা। (সুরা মায়েদা: ৮৯)