প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

পাকিস্তানের নারী ক্রিকেটারদের বেতন বেড়েছে ৫০ শতাংশ। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) গতকাল ২০২৫-২৬ মৌসুমের জন্য নারী ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা প্রকাশ করেছে।
নতুন চুক্তিতে এমন সুখবর পেয়েছেন চুক্তিতে থাকা পাকিস্তানের ২০ জন শীর্ষ নারী ক্রিকেটার। নতুন চুক্তি কার্যকর হয়েছে গত ১ জুলাই থেকে। এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ৩০ জুন।
নতুন চুক্তিতে সবচেয়ে বড় লাভ হয়েছে সাদিয়া ইকবালের। নারী টি-টোয়েন্টি বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে এক নম্বরে থাকা এই বাঁহাতি স্পিনার এবার পেয়েছেন ‘এ’ ক্যাটাগরির চুক্তি। তাঁর সঙ্গে এই ক্যাটাগরিতে আছেন ফাতিমা সানা, মুনিবা আলী এবং সিদরা আমিন।
‘বি’ ক্যাটাগরিতে জায়গা পেয়েছেন অলরাউন্ডার আলিয়া রিয়াজ, যিনি গত মৌসুমের চুক্তিতে ছিলেন না। এখানে তাঁর সঙ্গী হয়েছেন ডায়ানা বেগ ও নাশরা সান্ধু। ডায়ানাকে ‘সি’ থেকে উন্নীত করা হয়েছে।
এদিকে অফ স্পিনার রামিন শামীম ‘ডি’ থেকে উঠে এসেছেন ‘সি’ ক্যাটাগরিতে। তিনি এই ক্যাটাগরিতে একমাত্র ক্রিকেটার। নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তিনজন—নাটালিয়া পারভেজ, সিদরা নেওয়াজ ও ওয়াহিদা আখতার। তাঁরা সবাই জায়গা পেয়েছেন ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে। গত এপ্রিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্রিকেট থেকে বিরতিতে যাওয়া নিদা দারকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রাখা হয়নি।
পিসিবি নতুনভাবে চালু করেছে ‘ই’ ক্যাটাগরি। উদীয়মান ক্রিকেটারদের জন্য এই ক্যাটাগরি করা হয়েছে, যেখানে সুযোগ পেয়েছেন দুই তরুণী ক্রিকেটার—এইমান ফাতিমা ও শাওয়াল জুলফিকার। দুজনেই খেলেছেন ২০২৩ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে এবং আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান সিরিজের দলে আছেন।
এর আগে গত মার্চে পিসিবি ২০২৪-২৫ মৌসুমের জন্য ৯০ জন নারী ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি ঘরোয়া চুক্তির তালিকা প্রকাশ করেছিল। এই তালিকায় ছিলেন ১০ জন অভিজ্ঞ (আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা) পাকিস্তানি ক্রিকেটার, ৬২ জন উদীয়মান খেলোয়াড় এবং ১৮ জন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার।
ঘরোয়া নারী ক্রিকেটারদের মাসিক ভাতা নিয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছিল তখন থেকে। সমস্যাটা শুধু কম বেতনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, খেলার সুযোগের অভাবও একটি বড় উদ্বেগের কারণ ছিল। পিসিবি যে তিনটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট নারী ক্রিকেটারদের জন্য আয়োজন করে, সেগুলোতে অংশ নিয়ে কেউ যদি প্রতিটি ম্যাচের একাদশে থাকেন এবং প্রতিটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছান, তবু এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৩১ দিন খেলার সুযোগ পান একজন নারী ক্রিকেটার।
ক্রিকবাজ তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, এই হিসেবে একজন খেলোয়াড় সর্বোচ্চ যা আয় করতে পারেন—বেতন ও ম্যাচ ফি মিলিয়ে তা দাঁড়ায় মৌসুমে ১০ লাখ ৪০ হাজার পাকিস্তানি রুপি (৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা)। কিন্তু কেউ যদি একাদশে না থাকেন, সে ক্ষেত্রে ম্যাচ ফি নেমে আসে মাত্র ১০ হাজার পাকিস্তানি রুপিতে (৪ হাজার ২৮৬ টাকা)।
এই আয় দিয়েই একজন পেশাদার ক্রিকেটারকে ব্যক্তিগত ট্রেইনার রাখতে হয়, পরিকল্পিত ডায়েট ও অন্যান্য ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট খরচ চালাতে হয়। বছরে এই খরচ প্রায় ৬ লাখ পাকিস্তানি রুপি (প্রায় ২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা) পর্যন্ত হতে পারে। নারী ক্রিকেটারদের বেতন নিয়ে এমন সমালোচনার মুখে পিসিবি কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের বেতন বাড়াল।
তবে বেতন বৃদ্ধির সুখবরের দিনে পাকিস্তানের মেয়েরা ভালো করতে পারেনি। ডাবলিনে কাল রাতে প্রথম টি–টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের কাছে ১১ রানে হেরে গেছে ফাতিমা সানার দল।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিসিবির সভায় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দেরও বেতন বাড়ানো হয়।