মেডিকেল রিপোর্ট না দেওয়ায় বার্সার সঙ্গে দ্বন্দ্বে টের স্টেগেন!
প্রকাশ: ৬ আগস্ট, ২০২৫

বার্সেলোনার প্রথম চয়েজ গোলকিপার মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন ও কাতালান ক্লাবের মধ্যে সম্পর্ক এখন উত্তপ্ত। স্প্যানিশ গণমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, ক্লাব কর্তৃপক্ষ গোলরক্ষকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এর পেছনের কারণ? টের স্টেগেন ক্লাবকে তার ইনজুরি ও অস্ত্রোপচারের সংক্রান্ত মেডিকেল রিপোর্ট লা লিগার মেডিকেল কমিশনে পাঠাতে সম্মতি দেননি। অথচ এই কমিশনের অনুমোদন ছাড়া বার্সেলোনা তার বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ (৫০% বা ৮০%) ব্যবহার করে বিকল্প খেলোয়াড় রেজিস্টার করতে পারে না।
বার্সার আইনি বিভাগ ইতোমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। দলীয় বোর্ড অনুমোদন দিলে গোলরক্ষকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
লা লিগা ও স্প্যানিশ ফুটবলার্স অ্যাসোসিয়েশন (AFE)-এর মধ্যকার বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী, দলীয় নিয়ম ভঙ্গ বা ক্লাবের ক্ষতি করে এমন অমান্যতাকে "অত্যন্ত গুরুতর" অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। এই অপরাধের জন্য ১১ থেকে ৩০ দিনের বেতনবিহীন বরখাস্ত, বড় অংকের জরিমানা কিংবা চরম অবস্থায় চুক্তি বাতিল পর্যন্ত হতে পারে।
টের স্টেগেনের ক্ষেত্রে, যদি তার মাসিক আয় ১ লাখ ইউরোর বেশি হয়, তাহলে সর্বোচ্চ জরিমানার অঙ্ক দাঁড়াতে পারে প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার ইউরো পর্যন্ত।
তবে বিষয়টি এখানেই থেমে নেই। স্পেনের অর্গানিক ডেটা প্রোটেকশন অ্যান্ড ডিজিটাল রাইটস গ্যারান্টি আইন অনুযায়ী, টের স্টেগেন তার ব্যক্তিগত মেডিকেল তথ্য গোপন রাখার পূর্ণ অধিকার রাখেন। এর আওতায় তিনি চাইলে নিজের তথ্য ব্যবহারে আপত্তি জানাতে পারেন, তথ্য সংশোধন বা মুছে ফেলার অনুরোধও করতে পারেন।
এ কারণেই এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে আইনি টানাপোড়েন। AFE পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে খেলোয়াড়ের পক্ষে হস্তক্ষেপ করবে বলেও জানিয়েছে।
এক সময় বার্সেলোনার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠা টের স্টেগেনের সঙ্গে এমন সম্পর্কের টানাপোড়েন ক্লাবের জন্য বড় ধাক্কা। একদিকে যেমন ক্লাব নতুন খেলোয়াড় রেজিস্ট্রেশন নিয়ে সমস্যায় পড়েছে, অন্যদিকে তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের সঙ্গে সম্পর্ক ক্রমেই বিষাক্ত হয়ে উঠছে।
ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসে টের স্টেগেনের সঙ্গে ক্লাবের এই বিবাদ যেন বার্সেলোনার সংকট আরও ঘনীভূত করছে। সামনে কী অপেক্ষা করছে—তীব্র আইনি লড়াই, নাকি সমঝোতার পথ? সময়ই বলে দেবে।