Advertisement
  • হোম
  • খেলা
  • কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ নেপাল দ্বিতীয় ম্যাচ বাতিল

কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ নেপাল দ্বিতীয় ম্যাচ বাতিল

মানবজমিন

প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

বেশকিছু দিন ধরেই নেপাল সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিল দেশটির তরুণরা। সম্প্রতি নেপালে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরকারের আদেশে নিষিদ্ধ হওয়ায় ফুঁসে উঠে তারা। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল কাঠমান্ডুর বানেশ্বর এলাকায় প্রথম বিক্ষোভ শুরু করে দেশটির জেন জি প্রজন্ম। অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে কাঠমান্ডুর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। একযোগে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পরে পুরো দেশ জুড়ে। যে কারণে বাংলাদেশ ফুটবল দলের নির্ধারিত অনুশীলন বাতিল করে অল নেপাল ফুটবল ফেডারেশন (আনফা)। বাতিল করা হয় নেপাল ফুটবল দলের অনুশীলন। সন্ধ্যায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে সভা করে ম্যাচই বাতিল করে অল নেপাল ফুটবল ফেডারেশন।

বাংলাদেশ দলের জন্য দশরথ রঙ্গশালায় অনুশীলনের সময় নির্ধারিত ছিল বেলা ৩টায়। টিম মিটিং সেরে দুপুর সোয়া ২টায় সকল ফুটবলার প্রস্তুতি নিয়ে নেমে এসেছিলেন হোটেল ক্রাউন ইম্পেরিয়ালের লবিতে। প্রস্তুত ছিল তাদের বহনকারী বাস। তবে বাসে ওঠার আগ মুহূর্তে নেপাল ফুটবল ফেডারেশন থেকে জানানো হয়, হোটেল থেকে বের হওয়া নিরাপদ নয়। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার আমের খান বলেন, ‘আমরা দুপুর গড়ানোর পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের খবর পেতে শুরু করি। তারপরও নির্ধারিত সময়ে আমরা অনুশীলনের জন্য বের হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। তবে লবিতে এসে যখন দেখলাম দলকে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়নি, তখন নেপাল ফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলি। তারাও জানান, এ মুহূর্তে বের হওয়া ঠিক হবে না। আমাদের কাছে দলের নিরাপত্তার সবার ওপরে। পরে নিরাপত্তার কারণে দু’দলের অনুশীলনই বাতিল করা হয়।’ নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র সুরেশ শাহ অনুশীলন বাতিলের খবর নিশ্চিত করে বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতির আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দুদলের নির্ধারিত অনুশীলন বাতিল করেছি। আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে সভা করার চেষ্টা করছি। সভা শেষে আগামীকালের (আজ) ম্যাচের ভবিষ্যৎ নিয়ে বলতে পারবো।’ পরে আনফার ওই কর্মকর্তা বাংলাদেশ নেপালের মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচটি বাতিল বলে জানান। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আনফা জানায়, সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে এবং দু’দলের ফুটবলারদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরকার ম্যাচটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে। যে কারণে আগামীকাল দশরথ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার দ্বিতীয় ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।

নেপাল সরকারের দুর্নীতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। সেটা রুখতে ফেসবুক, টিকটক, হোয়াটসঅ্যাপসহ প্রায় ২৬টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেয় সরকার। এতেই ফুঁসে ওঠে ছাত্র সমাজ। যার বিস্ফোরণ ঘটে গতকাল। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী নেপালের সংসদ ভবনে অনুপ্রবেশ করে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রত্যাহারের দাবিতে। বিক্ষোভকারীদের রুখতে কঠোর অবস্থানে গিয়ে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। স্থানীয় সাংবাদিকের বরাতে জানা যায় বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৬ জন নিহত। আহতের সংখ্যা শতাধিক। যার মধ্যে সাত থেকে আটজন সাংবাদিক রয়েছে। এই আন্দোলন মূলত গত বছর ঢাকাসহ সারা দেশে জুলাই-আগস্টের ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এদিকে বাইরে আন্দোলন চললেও হোটেল ক্রাউন ইম্পিরিয়ালে নিরাপদেই ছিল বাংলাদেশ দল। বুধবার নির্ধারিত ফ্লাইটে বাংলাদেশ দলের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

এর আগে রোববার দশরথ স্টেডিয়ামে দু’দলের প্রথম ম্যাচটি গোলশূন্য ড্রতে শেষ হয়। এখন পর্যন্ত নেপালের বিপক্ষে সব মিলিয়ে ২৯ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে ১৪ ম্যাচ জিতলেও নেপালের মাটিতে সবশেষটি জয়টি এসেছে প্রায় এক যুগ আগে। ২০১৩ সালের ৪ঠা মার্চ। চ্যালেঞ্জ কাপে ওই ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতেছিল ২-০ গোলে। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবশেষ জয়ও প্রায় পাঁচ বছর আগে।

আরও পড়ুন

Lading . . .