Advertisement
  • হোম
  • খেলা
  • তামিম ইকবালকে সামনে রেখে সন্ত্রাসী কার্যক্রম হচ্ছে...

তামিম ইকবালকে সামনে রেখে সন্ত্রাসী কার্যক্রম হচ্ছে দাবি ক্রীড়া উপদেষ্টার

মানবজমিন

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

আগামী ৬ই অক্টোবর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই নির্বাচনই নির্ধারণ করবে আগামী দিনে কারা দেশের ক্রিকেটকে নেতৃত্ব দেবেন। কিন্তু নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই উত্তাপ ছড়াচ্ছে ক্রিকেটাঙ্গন। মাঠের বাইরের এই খেলায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, আইনি লড়াই এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। স্পষ্টতই দুটি পক্ষ এখন মুখোমুখি অবস্থানে, যা বিসিবি নির্বাচনকে এক জমজমাট নাটকে পরিণত করেছে। এই নাটকের আগুনে নতুন করে ঘি ঢালেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সম্ভাব্য সভাপতি প্রার্থী তামিম ইকবাল। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগের আঙুল তোলেন সরাসরি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দিকে। তার মতে, বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে আবারও পদে বসানোর জন্য ক্রীড়া পরিষদ নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে। তামিমের এই বিস্ফোরক অভিযোগের পর বসে থাকেননি ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তার দাবি, তামিমকে সামনে রেখে একটি রাজনৈতিক দল বিসিবি’র ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘তামিম ভাইয়ের পক্ষে লোকজন গিয়ে মানুষজনকে অপহরণ করছে ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ দখল করার জন্য। তারপর তামিম ভাইয়ের পক্ষে বুলবুল ভাইকে ফোন দিয়ে বলা হলো, আপনি নির্বাচন থেকে সরে যান, আপনাকে আমরা সিইও বানাই। এগুলোকে তাহলে কী বলবেন? এগুলো তো সন্ত্রাসী কার্যক্রম।’

এছাড়াও তামিমের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে সরকারের কার্যক্রমকে ‘রুটিন কাজ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। আসিফ মাহমুদ বলেন, সরকারের এখতিয়ারের মধ্যে থেকেই ক্রীড়া পরিষদ কাজ করছে। যদি এর বাইরে কিছু করা হয়, তাহলে তামিম আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন অথবা আইসিসি’র কাছে নালিশ করতে পারেন। যদিও তামিমের এই অভিযোগের পর ক্রিকেটপাড়ায় নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। তামিম একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, ফলাফল যা-ই হোক, তিনি মেনে নেবেন, কিন্তু প্রক্রিয়াটি হতে হবে নিরপেক্ষ এবং প্রভাবমুক্ত। তামিমের সঙ্গে থাকা জেলা, বিভাগ ও ক্লাব সংগঠকদের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়, সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নানা ধরনের চিঠি দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।

আসিফ মাহমুদের মতে, তামিম ইকবালের মতো একজন সম্মানিত ক্রিকেটারকে ব্যানার হিসেবে ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, বিভিন্ন জেলার ডিসিদের কাছে বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা ফোন করে পছন্দের ব্যক্তিকে কাউন্সিলর বানানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন, যা নির্বাচনের পরিবেশকে আরও ঘোলাটে করে তুলেছে। তামিমের বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘তামিম যদি ক্রিকেটার এবং সমর্থকদের প্রতিনিধি হয়ে নির্বাচন করতেন, তাহলে তিনি বেশি খুশি হতেন, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে নয়। এই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ গড়িয়েছে আদালতে। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের একটি চিঠির ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে চেম্বার জজ আদালত সেই আদেশ স্থগিত করে দেন। এই আইনি লড়াই প্রমাণ করে যে বিসিবি নির্বাচন নিয়ে পর্দার আড়ালের খেলা কতটা শক্তিশালী। গতকাল পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি।

সব মিলিয়ে বিসিবি নির্বাচন এখন আর নিছক সংগঠকদের ভোটযুদ্ধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি ক্ষমতা, রাজনীতি এবং ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণের এক জটিল সমীকরণে পরিণত হয়েছে। একদিকে তামিম ইকবালের স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি, অন্যদিকে তার বিপক্ষে আনা অপহরণ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মতো মারাত্মক অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না হয়, তাহলে কী হবে? বাংলাদেশ ক্রিকেট কি আরও একবার অনিশ্চয়তার পথে হাঁটবে? এই প্রশ্নগুলোই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের ক্রিকেট মহলে। ৬ই অক্টোবরের আগে এই নাটকের আরও কোন কোন পর্ব বাকি আছে, তা দেখার জন্যই এখন অপেক্ষা।

আরও পড়ুন

Lading . . .