Advertisement
  • হোম
  • খেলা
  • রিয়ালের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডারের নাম নিয়ে বিব্রত স...

রিয়ালের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডারের নাম নিয়ে বিব্রত স্পেনের ফ্যাসিবাদ–বিরোধীরা

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২১ আগস্ট, ২০২৫

রিয়াল মাদ্রিদের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনোএএফপি
রিয়াল মাদ্রিদের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনোএএফপি

রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে গত পরশু রাতে অভিষেক হয়েছে ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনোর। ওসাসুনার বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ের সে ম্যাচে ৬৮ মিনিটে বদলি হয়ে মাঠে নামেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার। তবে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’ জানিয়েছে, এই ম্যাচের পর মাস্তানতুয়োনোকে ঘিরে স্পেনে একটি বিতর্ক শুরু হয়েছে। কি নামে ডাকা হবে তাঁকে, ফ্রাঙ্কো না মাস্তানতুয়োনো?

১৮ বছর বয়সী এ আর্জেন্টাইনের নামের প্রথম অংশ ঐতিহাসিকভাবে স্প্যানিশদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। ১৯৩৬ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত স্পেনের একনায়কতান্ত্রিক শাসক ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোকে মনে করিয়ে দেয় মাস্তানতুয়োনোর নামের প্রথম অংশ। ফ্রাঙ্কোর শাসনামলে স্পেনকে অনানুষ্ঠানিকভাবে ‘ফ্যাসিস্ট স্পেন’ও বলা হতো। ফ্রাঙ্কোর শাসনামলে শুধু ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যেই অন্তত ১ লাখ ১৪ হাজার মানুষ ‘নিখোঁজ’ হয়েছিলেন।

ভক্তরা তাঁকে কী নামে ডাকবে, নামের প্রথম অংশ নাকি শেষ অংশ—ওসাসুনা ও রিয়ালের মধ্যে ম্যাচের পর স্পেনে এই আলোচনা তোলা হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘এল চিরিনগিতো’য়। এরপর প্রশ্নটি ছড়িয়ে পড়েছে।

স্পেনের সাবেক স্বৈরশাসক ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর নামের শেষ অংশ মাস্তানতুয়োনোর নামের প্রথম অংশ। হাজারো মৃত্যুর দায় কাঁধে নিয়ে ১৯৭৫ সালে মারা যাওয়া ফ্রাঙ্কোর সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের যোগসূত্র আছে বলেও মনে করেন অনেকে। স্পেনের ক্রীড়াঙ্গনে ‘বেঞ্চমার্ক’ হিসেবে পরিচিত এ অনুষ্ঠানে অতিথিরা ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনোর বিষয়টি তুলে আলোচনা করেন। তখন এই ‘মিথ’ নিয়েও আলোচনা হয় যে স্পেনের সাবেক স্বৈরশাসক ফ্রাঙ্কো রিয়ালের সমর্থক ছিলেন এবং তিনি ক্লাবটিকে সাহায্য করেছেন।

এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন সাবেক আর্জেন্টাইন ফুটবলার ও কোচ হোর্হে ডি’আলেহান্দ্রো ও আল আইনে খেলা আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার মাতিয়াস পালাসিওস। তাঁরা যুক্তি দিয়ে বোঝান, রিয়ালে যোগ দেওয়া মিডফিল্ডারকে ‘মাস্তানতুয়োনো’ বলেই ডাকা উচিত। আর্জেন্টিনায় তাঁকে এই নামেই ডাকা হয় এবং সেখানে নামের শেষ অংশ ধরে ডাকাটা প্রথা।

কিন্তু স্পেনে ঐতিহাসিকভাবে ফুটবলারদের নামের প্রথম অংশ ডাকা হয়। যেমন জাভি হার্নান্দেজ, জাবি আলোনসো, রাউল গঞ্জালেস। রেফারিরাও ফ্রাঙ্কোর শাসনামলে দুটি উপাধি বা পদবি ব্যবহার করতেন। কেন? ধরুন আনহেল ফ্রাঙ্কো নামের রেফারি ম্যাচ পরিচালনা করছেন। পরদিন সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতে পারে ‘ফ্রাঙ্কো খুব খারাপ’ কিংবা ‘ফ্রাঙ্কো ম্যাচটি নষ্ট করেছেন’, যা স্বৈরশাসকের নামের প্রতি অসম্মানজনক। এ কারণে ফ্রাঙ্কোর শাসনামলে রেফারিরা দুটি উপাধি বা পদবি ব্যবহার করতেন। দীর্ঘ ৫৫ বছর পর আবারও স্পেনের রেফারিদের নামের প্রথম ও শেষাংশ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় কিছুদিন আগে।

টিওয়াইসি স্পোর্টস জানিয়েছে, স্পেনের সাবেক স্বৈরশাসকের সমর্থন পেয়েছে রিয়াল, এমন দাবি প্রচলিত থাকলেও বাস্তবে ঘটেছে উল্টোটা। রিয়াল সে সময় ছয়বার ইউরোপিয়ান কাপ জিতলেও ক্লাবটির সমর্থকদের দাবি, ফ্রাঙ্কো নিজের শাসনামলের প্রচার বাড়াতে রিয়ালকে ব্যবহার করেছেন। বার্সাও তাঁর শাসনামলে সাফল্য পেয়েছে।

ক্যাম্প ন্যুর উদ্বোধন ফ্রাঙ্কোর মন্ত্রী জেনারেল হোসে সোলিস রুইজকে অতিথি করে এনেছিল বার্সা। ফ্রাঙ্কোকে সোনার ব্যাজও উপহার দিয়েছিল ক্লাবটি। বার্সা এ সময় তিনবার দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে এবং আটবার স্পেনের শীর্ষ লিগ জিতেছে। ফ্রাঙ্কোর শাসনের প্রথম ১৫ বছর শিরোপা জিততে পারেনি রিয়াল। ১৯৩৯ সালের মে থেকে ১৯৭৫ সালের মে পর্যন্ত মোট ৮২টি শিরোপা লড়াইয়ের মধ্যে ২১টি জিতেছে রিয়াল ও বার্সা।

Lading . . .