এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিলে আদালতে আবেদন
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিলে পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন (পিআইএল) আবেদন করা হয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। পিআইএল জনস্বার্থে করা এমন একটি আইনি প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন সমাজের একটি বড় অংশ বা সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়।
ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আইনের চার শিক্ষার্থী এই পিটিশন করেছেন, যাঁদের নেতৃত্বে আছেন উর্বশী জৈন। পিটিশনে দাবি করা হয়, গত এপ্রিলে ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার সেই ভয়াবহ ঘটনা ও ‘অপারেশন সিঁদুর’–এর পর ক্রিকেট মাঠে ভারত-পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়াটা একটু দ্রুতই হয়ে যায়। আর তাতে জাতীয় মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এবং ভারতের সাধারণ নাগরিক থেকে সৈন্যদের আত্মদানকেও উপেক্ষা করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনুরোধ করে পিটিশনে বলা হয়, ‘সৈন্যদের আত্মদান, নাগরিকদের জীবন এবং জাতীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে হতে পারে না ক্রিকেট।’ ভবিষ্যতে এমন সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ‘ন্যাশনাল স্পোর্টস গভর্নেন্স অ্যাক্ট ২০২৫’ দ্রুত কার্যকরের অনুরোধ করেছেন পিটিশনকারীরা। টাইমস অব ইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে, এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হওয়ার আগে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। দুবাইয়ে আগামী রোববার গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে ভারত।
দুবাইয়ে গতকাল আরব আমিরাতকে ৯ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপে দারুণ শুরু করেছে সূর্যকুমার যাদবের ভারত। আমিরাতকে মাত্র ৫৭ রানে অলআউট করার পথে ৭ রানে ৪ উইকেট নেন কুলদীপ যাদব।
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ ভারতের বর্জন করা উচিত বলে গত মাসে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছিলেন সাবেক স্পিনার হরভজন সিং। ভারতের আরেক সাবেক ক্রিকেটার কেদার যাদবও গত মাসে বলেছিলেন, তিনি নিশ্চিত পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারত ম্যাচটি খেলবে না। কিন্তু এশিয়া কাপে ভারতীয় দলের শিবির থেকে তেমন কিছু শোনা যায়নি।
কিন্তু কিছুদিন আগে বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তান ম্যাচ বর্জন না করার ব্যাখ্যা দেন, ‘ক্রিকেট কিংবা অন্য যেকোনো খেলায় ভারতীয় দলের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্রীড়া বিভাগ সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন ও নীতিমালা তৈরি করেছে। আমি নিশ্চিত, এই নীতিমালা প্রণয়নের সময় কেন্দ্রীয় সরকার অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে জাতীয় স্তরের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো উপকৃত হয়। এই নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে আমরা যেকোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি।’
সাইকিয়া আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার সবদিক বিবেচনা করেছে—ফেডারেশনগুলোর স্বার্থ থেকে শুরু করে খেলোয়াড়দের উদ্বেগ পর্যন্ত। একটি টুর্নামেন্ট যদি বহুজাতিক হয়, আর সেখানে কোনো দল অংশ না নেয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট সেই ফেডারেশনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এমন পরিস্থিতি নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের ও তাদের ক্যারিয়ারকে বঞ্চিত করবে।’
এবারের এশিয়া কাপের আনুষ্ঠানিক আয়োজক দেশ ছিল ভারত। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরী রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণে গত ফেব্রুয়ারি-মার্চে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নিজেদের ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলার জন্য তিন বছরের সমঝোতা চুক্তি হয়। এ কারণে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এবারের এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আরব আমিরাতে।