Advertisement

তরুণদের সর্বনাশা লিগ!

কালবেলা

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

তরুণদের সর্বনাশা লিগ!
তরুণদের সর্বনাশা লিগ!

বিভিন্ন দেশের শীর্ষ স্তরের লিগের পরের ধাপগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়, যাতে তরুণ প্রতিভা উঠে আসার পথ উন্মুক্ত থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কি উল্টো তরুণদের উঠে আসার পথে রুখে দাঁড়ানো হচ্ছে!

নতুন মৌসুমের জন্য সিনিয়র ডিভিশন লিগের বাইলজ কিন্তু সে আশঙ্কাই সামনে আনছে—প্রিমিয়ার ও চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলা ফুটবলারদের জন্য দেশের পেশাদার ফুটবল কাঠামোর তৃতীয় স্তরের এ লিগ এখন উন্মুক্ত। ঘরোয়া শীর্ষ লিগে খেলার অভিজ্ঞতাপুষ্ট ফুটবলারদের বিগত কয়েক মৌসুম সিনিয়র ডিভিশন লিগে খেলার সুযোগ ছিল না। নতুন মৌসুমের আগে সে বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলো এমন খেলোয়াড়দের দিকে বেশি ঝুঁকছে, যাদের শীর্ষ স্তারের লিগে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাতে উপেক্ষিত হচ্ছেন অনেক তরুণ ফুটবলার।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কম্পিটিশন্স বিভাগ থেকে কালবেলাকে জানানো হয়েছে, খসড়া বাইলজ অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোতে পাঠানো হয়েছিল ক্লাব প্রতিনিধিদের মতামতের জন্য। ক্লাব প্রতিনিধিরা তাদের মতামত দিয়েছেন। তা ছাড়া, বিশ্বের অনেক দেশেই কিন্তু লিগ উন্মুক্ত। সিনিয়র ডিভিশন লিগে অংশগ্রহণের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত একাধিক ক্লাব প্রতিনিধি অভিযোগ করেছেন, বাইলজের অসংগতি দূর করার জন্য ক্লাব প্রতিনিধিদের সঙ্গে আয়োজকদের যোগাযোগের ঘাটতি ছিল। এ কারণে কিছু অসংগতি রেখেই বাইলজ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সিনিয়র ডিভিশন লিগের অন্যতম ক্লাব স্বাধীনতা ক্রীড়া সংসদের কোচ আশরাফুল হক আপেল কালবেলাকে বলেছেন, ‘দেশের তৃতীয় স্তরের একটা লিগের ডিজাইন উদীয়মান খেলোয়াড়দের ঘিরেই করা উচিত। কিন্তু সিনিয়র ডিভিশন লিগের খেলোয়াড় নিবন্ধনে প্রিমিয়ার ও চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের খেলোয়াড়দের উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তাহলে উদীয়মান খেলোয়াড়রা যাবেন কোথায়!’

স্বল্প সুযোগ-সুবিধায় গড়ে তোলা বিভিন্ন একাডেমি দেশের ফুটবলে নিয়মিত তরুণ প্রতিভাবান ফুটবলার সরবরাহ করে আসছে। অধিকাংশ একাডেমির লক্ষ্য থাকে পাইওনিয়ার ও নিচু স্তরের লিগগুলো। শীর্ষ স্তরের লিগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ফুটবলারদের সুযোগ দেওয়ার বিষয়কে অসংগতিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করলেন তৃণমূলে কাজ করা বিভিন্ন একাডেমির সঙ্গে যুক্ত সংগঠকরা। এ প্রসঙ্গে লাইজু কিডস ফুটবল একাডেমির সহসভাপতি শাহাদাত হোসেন জুবায়ের বলছিলেন, ‘শীর্ষ লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে—এমন ফুটবলারদের আপনি নিচু স্তরের লিগে খেলার সুযোগ দিতেই পারেন। কিন্তু এখানে কোটা নির্ধারিত করে দেওয়া উচিত ছিল। নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ না করার কারণে তরুণ ফুটবলারদের উঠে আসার পথটা বিঘ্নিত হবে, যা খুবই দুঃখজনক।’

এ ইস্যুতে বাফুফের অভ্যন্তরেই নাকি রয়েছে মতবিরোধ! সূত্র জানিয়েছে, কিছু কর্মকর্তা চাচ্ছেন শীর্ষ লিগের খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণের সুযোগ দিলেও কোটা নির্ধারণ করা হোক। কিছু কর্মকর্তা চাচ্ছেন, বিষয়টা উন্মুক্ত থাকুক। এ প্রসঙ্গে বাফুফে কম্পিটিশন্স বিভাগের প্রধান ও সাবেক ফুটবলার গোলাম গাউস বলছিলেন, ‘এ নিয়ে আমরা অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনা করেছি। কিন্তু এখানে ফিফা-এএফসির কিছু গাইডলাইনও আছে। আমাদের সেগুলো অনুসরণ করতে হয়।’ গোলাম গাউস আরও বলেন, ‘লিগের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই যদি চান, তাহলে যে কোনো বিষয় নতুন করে ভেবে দেখা যেতে পারে। সবাই চাইলে সিনিয়র ডিভিশন লিগের বাইলজের বিভিন্ন বিষয়ও নতুন করে ভেবে দেখা যেতে পারে।’

আরও পড়ুন

Lading . . .