নেপালকে হারিয়েও নানা হিসাব নিকাশের সামনে বাংলাদেশ
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট, ২০২৫

হারলে শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে যেতে হবে, আর জিতলে ‘যদি’ ‘কিন্তুর’ ওপর ভর করে টিকে থাকবে আশা। এমন সমীকরণ সামনে রেখে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে গতকাল শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ৪-১ গোলে জিতে মাঠ ছাড়ে অর্পিতা বিশ্বাস-আলপি আক্তাররা। হ্যাটট্রিক করেছেন সৌরভী আকন্দ। অন্য গোলটি থুইনু মারমার। এ জয়ে চার ম্যাচের বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ পয়েন্ট।
এদিন থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে সাদামাটা ফুটবলই খেলেছে বাংলাদেশ। ৩৮ মিনিটে প্রতিপক্ষের তিন খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে নেপাল গোলরক্ষককে ফাঁকি দেন থুইনু মারমা। তার গোলে এগিয়ে যায় মাহবুবুর রহমান লিটুর শিষ্যরা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মামনি চাকমার বাড়ানো বল বক্সের মধ্যে থেকে বাঁ পায়ের শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সৌরভী। দুই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যেতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে উল্টো গোল হজম করে মেয়েরা। রক্ষণে ৬ জন খেলোয়াড় থাকার পরও কেউ গোল আটকাতে পারেননি। নেপালের এক ফুটবলারের শট বাংলাদেশের ডিফেন্ডারের শরীরে লেগে দিক বদলায়। ফাঁকায় পেয়ে ফিরতি শটে জাল কাঁপান নেপালের অধিনায়ক ভূমিকা। বিরতির পর ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টায় আক্রমণের ধার বাড়ায় বাংলাদেশ। ৭০ মিনিট পর্যন্ত প্রতিপক্ষের গোলমুখে সুযোগ নষ্ট, লক্ষ্যে শট না রাখা, এমনকি বারবার বলের দখল হারিয়ে হতাশই হতে হয়েছে। ৬৯তম মিনিটে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে একা পেয়েও ঠিকমতো শট নিতে পারেননি পূর্ণিমা মারমা। ৭১ মিনিটে আর ভুল হয়নি। মামনি চাকমার কর্নার থেকে আলতো টোকায় স্কোরলাইন ৩-১ করেন সৌরভী। ৮৬ মিনিটে পূর্ণিমা মারমার ক্রস থেকে নিজের হ্যাটট্রিক ও দলের চতুর্থ গোল পূর্ণ করেন সৌরভী। এই ম্যাচে নেপালকে হারিয়েও স্বস্তি থাকার কথা নয় বাংলাদেশের। নিজেদের চার ম্যাচের তিনটি জিতে ৯ পয়েন্ট তুলেছে তারা। শিরোপা লড়াইটা চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে পরের দুটি ম্যাচও জিততে হবে বাংলাদেশকে। চার দেশের টুর্নামেন্টে খেলা হচ্ছে ডাবল লীগ পদ্ধতিতে। সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পাওয়া দল হবে চ্যাম্পিয়ন। পয়েন্ট সমান হলে দেখা হবে মুখোমুখি লড়াইয়ের ফল, তারপর গোল পার্থক্য। চার ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে দশবার বল পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। বিপরীতে গোল হজম করেছেন চারটি। যে কারণে গোল ব্যবধান +৬। অন্যদিকে তিন ম্যাচ খেলা ভারত এখনো গোল হজম করেনি। তারা গোল করেছে ১৭টি, গোল ব্যবধান +১৭। এবারের টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী, শেষ ম্যাচটি যদি শীর্ষ দুই দল খেলে এবং পয়েন্ট সমান হয়ে যায়, তাহলে গোল ব্যবধান বিবেচনায় নেয়া হবে না। সেক্ষেত্রে ম্যাচ চলে যাবে সরাসরি টাইব্রেকারে। বাংলাদেশ যদি আর কোনো ম্যাচ না হারে এবং ভারত তাদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরে যায়, তাহলে দুই দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। এই হিসাবে টুর্নামেন্টের শেষ রাউন্ডে যেহেতু শীর্ষ দুই দল ভারত ও বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে, বাংলাদেশ জিতলেই ম্যাচ গড়াবে টাইব্রেকারে। প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে যাওয়া বাংলাদেশের তাই হিসাব এখন একটাই, শেষ দুই ম্যাচ জিততে হবে! তারপর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়াবে এবং বেঁচে থাকবে শিরোপা জয়ের আশা।
আরও পড়ুন