প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ফাইনালে গ্যালারিতে যথারীতি ছিল তারকাদের ভিড়। সেখানে সবচেয়ে আলোচিত নাম ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউএস ওপেনের ফাইনাল দেখতে আসায় ভেন্যুতে ছিল কড়া নিরাপত্তা। তাতে খেলাও শুরু হয় দেরিতে, আবার খেলা শুরুর সময়ও অনেকগুলো আসন থাকে ফাঁকা। তবে দ্রুতই সব মনোযোগ নিজের দিকে টেনে নেন কার্লোস আলকারাজ। ইতালির ইয়ানিক সিনাররের বিরুদ্ধে দাপুটে পারফর্মেন্সে ৬-২, ৩-৬, ৬-১, ৬-৪ গেমের জয়ে জেতেন শিরোপা। একইসঙ্গে, সিনারকে সরিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানও ফিরে পান এ স্প্যানিশ তারকা।
উইম্বলডনে গত জুলাইয়ের ফাইনালে এই সিনারের কাছে হেরেই শিরোপা হাতছাড়া করেন আলকারাজ। সেটির প্রতিশোধটাও নেয়া হলো দাপটের সঙ্গেই। ফলে হার্ড কোর্টে থামলো সিনারের টানা ২৭ ম্যাচের জয়যাত্রা। আর দুজনের শেষ ৭ লড়াইয়ের ৬টিতেই জয় তুলে নিলেন আলকারাজ। এ জয়ে ২০২৩-এর পর প্রথমবার শীর্ষে ফিরলেন এ ২২ বছর তারকা। এ বয়সেই তার ট্রফি কেসে শোভা পাচ্ছে ৬টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম, যা কি না বিয়ন বোর্গের পর দ্বিতীয় কনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে কীর্তি।
সেমিফাইনালে নোভাক জকোভিচকে হারাতে কিছুটা কষ্টই করতে হয় আলকারাজকে। তবে ফাইনালে সিনারের বিরুদ্ধে দেখা গেল ভিন্ন এক তারকাকে। প্রথম গেমেই দুর্দান্ত সব ফোরহ্যান্ডে সিনারের সার্ভিস ব্রেক করেন আলকারাজ। প্রথম সেটও জিতে নেন দাপটের সঙ্গে। পরে যদিও ঘুরে দাঁড়ান সিনার। টুর্নামেন্টের প্রথম সেট হারেন আলকারাজ। তবে এতে যেন আরো তেঁতে ওঠেন তিনি। পরের দুই সেটে আর পাত্তাই পাননি ২৪ বছর বয়সী সিনার। তৃতীয় সেটে ভুল বাড়তে থাকে ইতালিয়ান তারকার। এক পর্যায়ে র্যা কেট ছুঁড়ে ফেলেন হতাশায়। শেষ সেটে নিজের পুরোটা দিয়ে চেষ্টা করলেন সিনার। তবে শেষ পর্যন্ত সফল হননি। জয় তুলে নিয়ে আলকারাজ র্যাকেট হাতে করলেন সেই ‘গলফ সুইং’ উদযাপন।
ম্যাচশেষে প্রথমেই সিনারের প্রশংসায় আলকারাজ বলেন, ‘ইয়ানিককে দিয়ে শুরু করতে চাই। পুরো মৌসুমে যা করেছো, প্রতিটি আসরে যে পর্যায়ের টেনিস খেলেছো, তা অবিশ্বাস্য। পরিবারের চেয়েও তোমাকে এখন আপন করে দেখি। তোমার সঙ্গে কোর্টে নামা, সবকিছু ভাগাভাগি করতে পারা দারুণ।’ নিজের কোচিং স্টাফদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুললেন না আলকারাজ, ‘আমার আশেপাশে থাকা মানুষগুলোকে নিয়েও আমি গর্বিত। তোমাদের কারণেই আমার প্রতিটি অর্জন। এ শিরোপা তোমাদেরও।’
২০২২-এ ইউএস ওপেনে প্রথম শিরোপা জিতে এটিপি র্যাঙ্কিংয়ে প্রথমবারের মতো শীর্ষস্থানে ওঠেন আলকারাজ। এবারও পুনরাবৃত্তি হলো একই ঘটনার। সে প্রসঙ্গ তুলে উচ্ছ্বস প্রকাশ করে আলকারাজ বলেন, ‘বছরের প্রায় শুরুতেই লক্ষ্য ঠিক করি যে, এক নম্বর হতে চাই। সেটি অর্জন করতে দেখাটা অবিশ্বাস্য। আরেকটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের দিনেই সেটি করতে পারাটা আরও বেশি ভালো।’
চলতি বছরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের পর উইম্বলডনও জেতেন সিনার। তবে ইউএস ওপেন খুইয়ে হতাশ গলায় তিনি বলেন, ‘আমরা দু‘জন এ মৌসুমে অনেক বড় পর্যায়ে ও বড় ম্যাচে লড়েছি। তবে আজ নিজের সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করেছি। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার আর করার ছিল না।’
আরও পড়ুন