‘টংঘরে থাকতাম, সবজির ঝুড়ি বাজারে নিয়ে বাবার সঙ্গে বিক্রি করেছি’
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট, ২০২৫

খিলগাঁওয়ে পানির ওপর ছোট্ট টংয়ের মতো ঘরে শৈশব কেটেছে মাবিয়া আক্তার সীমান্তে র। বাবার সঙ্গে সবজির ঝুড়ি মাথায় করে বাজারে যাওয়া, খিলগাঁওয়ের টংঘর থেকে প্রতিদিন নতুন সংগ্রামের গল্প—এসবই যেন তাঁকে তৈরি করেছে ভারোত্তোলনের মঞ্চের জন্য। ২০১৬ ও ২০১৯ সালের এসএ গেমসে দুটি সোনা জেতা এই ক্রীড়াবিদ এখন দেশের মেয়েদের খেলাধুলার অনুপ্রেরণা। মাবিয়ার সাক্ষাৎকর নিয়েছেন মাসুদ আলমপ্রথম আলো :
গত ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে করেছেন। জীবনসঙ্গীও একজন ভারোত্তোলক। কেমন চলছে জীবন?
গত ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে করেছেন। জীবনসঙ্গীও একজন ভারোত্তোলক। কেমন চলছে জীবন?
মাবিয়া: খুব ভালো। পরিবারের প্রতি এখন দায়িত্ববোধ বেড়েছে। তবে শ্বশুরবাড়ির প্রতি যে খুব দায়িত্ব পালন করি, তা নয়। দিনে একবার হলেও অবশ্য তাদের খোঁজ নিই, তারাও আমার খোঁজ নেয়। শ্বশুরবড়ি থেকে অনেকে বলে এবার খেলা ছেড়ে শুধু ঘরসংসার করো। তাদের প্রত্যাশা আমি একটা ঘরোয়া বউ হব। কিন্তু আমার স্বামী চান আমি আরও খেলি। আরও রেকর্ড করি। স্বামীর সমর্থনের কারণে শ্বশুরবাড়ি থেকে খেলা ছাড়ার চাপটা কাটিয়ে চলেছি।
মাবিয়া: খুব ভালো। পরিবারের প্রতি এখন দায়িত্ববোধ বেড়েছে। তবে শ্বশুরবাড়ির প্রতি যে খুব দায়িত্ব পালন করি, তা নয়। দিনে একবার হলেও অবশ্য তাদের খোঁজ নিই, তারাও আমার খোঁজ নেয়। শ্বশুরবড়ি থেকে অনেকে বলে এবার খেলা ছেড়ে শুধু ঘরসংসার করো। তাদের প্রত্যাশা আমি একটা ঘরোয়া বউ হব। কিন্তু আমার স্বামী চান আমি আরও খেলি। আরও রেকর্ড করি। স্বামীর সমর্থনের কারণে শ্বশুরবাড়ি থেকে খেলা ছাড়ার চাপটা কাটিয়ে চলেছি।
প্রথম আলো :বিবাহিত জীবনে কেমন পরিবর্তন এসেছে?
বিবাহিত জীবনে কেমন পরিবর্তন এসেছে?
মাবিয়া: আমার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন প্রান্ত অনেক সহযোগিতা করে। এই ছয় মাসে আমার ওয়েটলিফটিং জীবনে অনেক বদল হয়েছে। আগে নিজে নিজে অনুশীলন করতাম, এখন ভুলত্রুটি ধরার মতো একজন মানুষ পেয়েছি। ভালোমন্দ তার সঙ্গে আলোচনা করি।
মাবিয়া: আমার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন প্রান্ত অনেক সহযোগিতা করে। এই ছয় মাসে আমার ওয়েটলিফটিং জীবনে অনেক বদল হয়েছে। আগে নিজে নিজে অনুশীলন করতাম, এখন ভুলত্রুটি ধরার মতো একজন মানুষ পেয়েছি। ভালোমন্দ তার সঙ্গে আলোচনা করি।
প্রথম আলো :দুই ভারোত্তোলকের সংসারে ঝগড়াঝাঁটি হয়? হলে কী নিয়ে?
দুই ভারোত্তোলকের সংসারে ঝগড়াঝাঁটি হয়? হলে কী নিয়ে?
মাবিয়া: ওয়েটলিফটিং নিয়ে হয়। দুজন দুজনকে একইভাবে বলি...তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। তুমি আজ ঠিকমতো অনুশীলন করোনি। ৫টা লিফটের জায়গায় ৪টা তুলেছ! তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে (হাসি)। তবে ব্যক্তিজীবন নিয়ে ঝগড়া হয় না। ভারোত্তোলনের সুবাদেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ। বুঝতাম তিনি আমাকে পছন্দ করতেন।
মাবিয়া: ওয়েটলিফটিং নিয়ে হয়। দুজন দুজনকে একইভাবে বলি...তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। তুমি আজ ঠিকমতো অনুশীলন করোনি। ৫টা লিফটের জায়গায় ৪টা তুলেছ! তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে (হাসি)। তবে ব্যক্তিজীবন নিয়ে ঝগড়া হয় না। ভারোত্তোলনের সুবাদেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ। বুঝতাম তিনি আমাকে পছন্দ করতেন।
প্রথম আলো :সফল এই জীবনে পেছন ফিরে কী মিস করেন?
সফল এই জীবনে পেছন ফিরে কী মিস করেন?
মবিয়া: ছোটবেলা। তখন শুধু খেলা আর খেলা। খেলেটেলে বাসায় এলে আম্মু খেতে দিত। খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম। উঠে আবার খেলতে যেতাম। অমন টেনশনমুক্ত জীবন ফিরে পেলে ভালো লাগত।
মবিয়া: ছোটবেলা। তখন শুধু খেলা আর খেলা। খেলেটেলে বাসায় এলে আম্মু খেতে দিত। খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম। উঠে আবার খেলতে যেতাম। অমন টেনশনমুক্ত জীবন ফিরে পেলে ভালো লাগত।
প্রথম আলো :আপনার ছোটবেলাটা কেমন ছিল?
আপনার ছোটবেলাটা কেমন ছিল?
মাবিয়া: ঢাকার খিলগাঁওয়ে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। খিলগাঁওয়ের সিপাহিবাগে পানির ওপর তৈরি টিনের টংঘরে থাকতাম। অনেক কষ্ট করেছি, খাবারের কষ্ট ছিল, পোশাকের কষ্ট ছিল, পরিবেশ ভালো ছিল না। সমাজ ও আত্মীয়স্বজনের কাছে গুরুত্ব ছিল না। অনেক লড়াই–সংগ্রাম করে আজকের অবস্থানে এসেছি। ২০১৬ ও ২০১৯ এসএ গেমসে পরপর দুটি সোনা জিতেছি।
মাবিয়া: ঢাকার খিলগাঁওয়ে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। খিলগাঁওয়ের সিপাহিবাগে পানির ওপর তৈরি টিনের টংঘরে থাকতাম। অনেক কষ্ট করেছি, খাবারের কষ্ট ছিল, পোশাকের কষ্ট ছিল, পরিবেশ ভালো ছিল না। সমাজ ও আত্মীয়স্বজনের কাছে গুরুত্ব ছিল না। অনেক লড়াই–সংগ্রাম করে আজকের অবস্থানে এসেছি। ২০১৬ ও ২০১৯ এসএ গেমসে পরপর দুটি সোনা জিতেছি।
প্রথম আলো :প্রথমবার এসএ গেমসে সোনাজয়ী সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শীলা ও শুটার শাকিল আহমেদের সঙ্গে সরকার আপনাকেও ফ্ল্যাট দিয়েছিল। কুঁড়েঘর থেকে এলেন অট্টালিকায়...
প্রথমবার এসএ গেমসে সোনাজয়ী সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শীলা ও শুটার শাকিল আহমেদের সঙ্গে সরকার আপনাকেও ফ্ল্যাট দিয়েছিল। কুঁড়েঘর থেকে এলেন অট্টালিকায়...
মাবিয়া: ২০১৬ সালে ৭ ফেব্রুয়ারি আমার জীবনে বদল শুরু হয়। ওই দিনই গুয়াহাটি এসএ গেমসে সোনা জিতি। জীবনে রাতারাতি পরিবর্তন হয়। পরিচিতি আসে। আমাকে সারা দেশের মানুষ চেনে। একটা পাটাতনের ঘর থেকে বিল্ডিংয়ে এসেছি, এটা এখনো আমার কাছে স্বপ্নের মতো লাগে।
মাবিয়া: ২০১৬ সালে ৭ ফেব্রুয়ারি আমার জীবনে বদল শুরু হয়। ওই দিনই গুয়াহাটি এসএ গেমসে সোনা জিতি। জীবনে রাতারাতি পরিবর্তন হয়। পরিচিতি আসে। আমাকে সারা দেশের মানুষ চেনে। একটা পাটাতনের ঘর থেকে বিল্ডিংয়ে এসেছি, এটা এখনো আমার কাছে স্বপ্নের মতো লাগে।
প্রথম আলো :কখন উঠলেন ফ্ল্যাটে?
কখন উঠলেন ফ্ল্যাটে?
মাবিয়া: ২০১৭ সালে খিলগাঁওয়ে একটা ভাড়া ফ্ল্যাটে উঠে প্রথমেই আমার মনে হয়েছিল, আমি বোধ হয় স্বপ্ন দেখছি। এটা আমার জীবন নয়। হয়তোবা কোনো স্বপ্ন। এখনো মনে হয়, ঘোরের মধ্যে আছি। কোথায় ছিলাম আর কোথায় এসেছি, এটা অনেক বড় স্বপ্ন লাগে।
মাবিয়া: ২০১৭ সালে খিলগাঁওয়ে একটা ভাড়া ফ্ল্যাটে উঠে প্রথমেই আমার মনে হয়েছিল, আমি বোধ হয় স্বপ্ন দেখছি। এটা আমার জীবন নয়। হয়তোবা কোনো স্বপ্ন। এখনো মনে হয়, ঘোরের মধ্যে আছি। কোথায় ছিলাম আর কোথায় এসেছি, এটা অনেক বড় স্বপ্ন লাগে।
প্রথম আলো :ফ্ল্যাটে ওঠার পর প্রথম যে কাজটি করেছিলেন, সেটা কী?
ফ্ল্যাটে ওঠার পর প্রথম যে কাজটি করেছিলেন, সেটা কী?
মাবিয়া: ফ্ল্যাটে ওঠার রাতে আমাদের কারোরই ঘুম হয়নি। বাসায় ছিল মা–বাবা, আমরা দুই বোন আর এক ভাই। আমি টংয়ের বাসায় বড় হয়েছি, সেখান থেকে ফ্ল্যাট–জীবন। প্রথম কাজ ছিল সবকিছু গোছানো।
মাবিয়া: ফ্ল্যাটে ওঠার রাতে আমাদের কারোরই ঘুম হয়নি। বাসায় ছিল মা–বাবা, আমরা দুই বোন আর এক ভাই। আমি টংয়ের বাসায় বড় হয়েছি, সেখান থেকে ফ্ল্যাট–জীবন। প্রথম কাজ ছিল সবকিছু গোছানো।
প্রথম আলো :সরকারের দেওয়া ফ্ল্যাটে থাকেন না কেন?
সরকারের দেওয়া ফ্ল্যাটে থাকেন না কেন?
মাবিয়া: সরকারের দেওয়া ফ্ল্যাটটি মিরপুরে, সেটি বুঝে পাই ২০২১ সালে। ওখান থেকে ঢাকা স্টেডিয়াম চত্বরে এসে অনুশীলন করা আমার জন্য কঠিন। এ কারণে ওটা ভাড়া দিয়ে খিলগাঁওতেই একটা ফ্ল্যাটে আব্বু-আম্মুর সঙ্গে থাকি।
মাবিয়া: সরকারের দেওয়া ফ্ল্যাটটি মিরপুরে, সেটি বুঝে পাই ২০২১ সালে। ওখান থেকে ঢাকা স্টেডিয়াম চত্বরে এসে অনুশীলন করা আমার জন্য কঠিন। এ কারণে ওটা ভাড়া দিয়ে খিলগাঁওতেই একটা ফ্ল্যাটে আব্বু-আম্মুর সঙ্গে থাকি।
প্রথম আলো :বিয়ের পরও আব্বু-আম্মুর সঙ্গে কেন থাকেন?
বিয়ের পরও আব্বু-আম্মুর সঙ্গে কেন থাকেন?
মাবিয়া: বিয়ের পর কুষ্টিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে থাকা কম হয়েছে। মাঝেমধ্যে গেছি। ঢাকায় আমরা আলাদা বাসা নিইনি। জাতীয় দলের ক্যাম্পের কারণে সাখাওয়াত থাকে বাগেরহাটে, আমি ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করি।
মাবিয়া: বিয়ের পর কুষ্টিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে থাকা কম হয়েছে। মাঝেমধ্যে গেছি। ঢাকায় আমরা আলাদা বাসা নিইনি। জাতীয় দলের ক্যাম্পের কারণে সাখাওয়াত থাকে বাগেরহাটে, আমি ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করি।
প্রথম আলো :২০১৬ সালে এসএ গেমসে প্রথমবার সোনা জেতার পর বিজয় মঞ্চে আপনার কান্নার ছবিটা ভাইরাল হয়েছিল। ছবিটা কি ঘরে বাঁধাই করে রেখেছেন?
২০১৬ সালে এসএ গেমসে প্রথমবার সোনা জেতার পর বিজয় মঞ্চে আপনার কান্নার ছবিটা ভাইরাল হয়েছিল। ছবিটা কি ঘরে বাঁধাই করে রেখেছেন?
মাবিয়া: ওটা আমার ড্রয়িংরুমের দেয়ালে যত্ন করে বাঁধাই করা আছে। এটা আমার সবচেয়ে প্রিয় ছবিও। এই ছবি প্রতিদিন আমাকে মনে করিয়ে দেয় আমার জীবনের পরিবর্তনের কথা।
মাবিয়া: ওটা আমার ড্রয়িংরুমের দেয়ালে যত্ন করে বাঁধাই করা আছে। এটা আমার সবচেয়ে প্রিয় ছবিও। এই ছবি প্রতিদিন আমাকে মনে করিয়ে দেয় আমার জীবনের পরিবর্তনের কথা।
প্রথম আলো :ভারোত্তোলন মঞ্চে ওজন তোলেন, জীবনেও তো অনেক ভারী দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়েছে...
ভারোত্তোলন মঞ্চে ওজন তোলেন, জীবনেও তো অনেক ভারী দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়েছে...
মাবিয়া: আমরা যখন পানির ওপর টংঘরে থাকতাম, তখন আমার বাবা সবজি চাষ করতেন। অনেক সময় সবজির ঝুড়ি বাজারে নিয়ে বাবার সঙ্গে বিক্রি করেছি। অনেক শাক মুঠো বেঁধে মাথায় করে নিয়ে গেছি। কলসি দিয়ে পানি এনেছি। ছোটবেলা থেকেই আমি আসলে ভার তুলি।
মাবিয়া: আমরা যখন পানির ওপর টংঘরে থাকতাম, তখন আমার বাবা সবজি চাষ করতেন। অনেক সময় সবজির ঝুড়ি বাজারে নিয়ে বাবার সঙ্গে বিক্রি করেছি। অনেক শাক মুঠো বেঁধে মাথায় করে নিয়ে গেছি। কলসি দিয়ে পানি এনেছি। ছোটবেলা থেকেই আমি আসলে ভার তুলি।
প্রথম আলো :আর কী কী ওজন তুলেছেন?
আর কী কী ওজন তুলেছেন?
মাবিয়া: বাসায় ফার্নিচার বদল বা স্থানান্তর হলে আমিই তা করি। অতিরিক্ত লোক লাগে না। টিনের বাসায় থাকার সময় বেড়ার বা ঘরে কোথাও কিছু খুলে গেলে বাবা সেটা মেরামত করতেন। আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করতাম। আমি ছোট থেকেই এমন, তবে লিফটার হব ভাবিনি।
মাবিয়া: বাসায় ফার্নিচার বদল বা স্থানান্তর হলে আমিই তা করি। অতিরিক্ত লোক লাগে না। টিনের বাসায় থাকার সময় বেড়ার বা ঘরে কোথাও কিছু খুলে গেলে বাবা সেটা মেরামত করতেন। আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করতাম। আমি ছোট থেকেই এমন, তবে লিফটার হব ভাবিনি।
প্রথম আলো :তাহলে লিফটার কীভাবে হলেন?
তাহলে লিফটার কীভাবে হলেন?
মাবিয়া: একদিন আমার মা আমাকে বেদম মেরেছে। কারণ হলো, আমি পড়াশোনায় মনোযোগী না, আমি নাকি একটা গবেট। আমার মার খাওয়া দেখে আমার বোনও কাঁদছিল। তখন মামা আসছিল বাসায়। তিনি বক্সিংয়ের কোচ শাহাদাত কাজী। উনি এসে দেখেন আমি হাত–পা ছড়িয়ে কাঁদছি। একটা বাচ্চা মানুষ, দেখাও যায় না কালো। তখন মামা আম্মাকে বলে ওকে মারলে কেন?
মাবিয়া: একদিন আমার মা আমাকে বেদম মেরেছে। কারণ হলো, আমি পড়াশোনায় মনোযোগী না, আমি নাকি একটা গবেট। আমার মার খাওয়া দেখে আমার বোনও কাঁদছিল। তখন মামা আসছিল বাসায়। তিনি বক্সিংয়ের কোচ শাহাদাত কাজী। উনি এসে দেখেন আমি হাত–পা ছড়িয়ে কাঁদছি। একটা বাচ্চা মানুষ, দেখাও যায় না কালো। তখন মামা আম্মাকে বলে ওকে মারলে কেন?
প্রথম আলো :তারপর?
তারপর?
মাবিয়া: আম্মা বলেন পড়াশোনা করে না ঠিকমতো। ওকে কেউ বিয়ে করবে না। মানুষের বাসায় কাজ করতে হবে। এসব বলতে বলতে মা কাঁদছে। মামা বলেন, কালকে ওকে রেডি করে দিস এক জায়গায় নিয়ে যাব। মামা পরদিন তাঁর ভেসপার পেছনে বসিয়ে আমাকে নিয়ে গেছেন ঢাকা স্টেডিয়ামে। তখন ২০১০ সালে, এসএ গেমসের ক্যাম্প চলছে। আমার জীবনে সেদিনই প্রথম ওয়েটলিফটিং নাম শোনা, দেখাও। আস্তে আস্তে ভারোত্তোলন আমার জীবনটাই বদলে দিয়েছে।
মাবিয়া: আম্মা বলেন পড়াশোনা করে না ঠিকমতো। ওকে কেউ বিয়ে করবে না। মানুষের বাসায় কাজ করতে হবে। এসব বলতে বলতে মা কাঁদছে। মামা বলেন, কালকে ওকে রেডি করে দিস এক জায়গায় নিয়ে যাব। মামা পরদিন তাঁর ভেসপার পেছনে বসিয়ে আমাকে নিয়ে গেছেন ঢাকা স্টেডিয়ামে। তখন ২০১০ সালে, এসএ গেমসের ক্যাম্প চলছে। আমার জীবনে সেদিনই প্রথম ওয়েটলিফটিং নাম শোনা, দেখাও। আস্তে আস্তে ভারোত্তোলন আমার জীবনটাই বদলে দিয়েছে।
প্রথম আলো :ভারোত্তোলন–জীবনে কার অবদান সব সময় স্মরণ করেন?
ভারোত্তোলন–জীবনে কার অবদান সব সময় স্মরণ করেন?
মাবিয়া: আমার মামা, মহিউদ্দিন স্যার, আমার সংস্থা আনসার, আমার পরিবার এবং কোচ। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অবদানও অনেক। আপনাদের কারণেই প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফ্ল্যাট দিয়েছেন।
মাবিয়া: আমার মামা, মহিউদ্দিন স্যার, আমার সংস্থা আনসার, আমার পরিবার এবং কোচ। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অবদানও অনেক। আপনাদের কারণেই প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফ্ল্যাট দিয়েছেন।
প্রথম আলো :ভারোত্তোলন–জীবনে প্রথম প্রাপ্তি কী?
ভারোত্তোলন–জীবনে প্রথম প্রাপ্তি কী?
মাবিয়া: আমি প্রথম যে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যাই, সেটিতে আমার যাওয়ার কথা ছিল না। মহিউদ্দিন স্যার (বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সভাপতি) বললেন, তোমার জন্য গিফট আছে। তিনি শাড়ি আর ব্লেজার দিয়ে বলেন, দুই দিন পর তোমার ফ্লাইট।
মাবিয়া: আমি প্রথম যে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যাই, সেটিতে আমার যাওয়ার কথা ছিল না। মহিউদ্দিন স্যার (বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সভাপতি) বললেন, তোমার জন্য গিফট আছে। তিনি শাড়ি আর ব্লেজার দিয়ে বলেন, দুই দিন পর তোমার ফ্লাইট।
প্রথম আলো :সেই সফরটা ছিল কোথায়, কত সালে?
সেই সফরটা ছিল কোথায়, কত সালে?
মাবিয়া: ২০১২ সালে নেপালে। দক্ষিণ এশিয়ান ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে ৫৩ কেজিতে ব্রোঞ্জ পাই।
মাবিয়া: ২০১২ সালে নেপালে। দক্ষিণ এশিয়ান ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে ৫৩ কেজিতে ব্রোঞ্জ পাই।
প্রথম আলো :প্রতিযোগিতার সময় চাপ কমানোর জন্য কোনো মজার কৌশল ব্যবহার করেন?
প্রতিযোগিতার সময় চাপ কমানোর জন্য কোনো মজার কৌশল ব্যবহার করেন?
মাবিয়া: একা একা হাসি। লিফট করেও হাসি। আমি মনে করি, হাসিখুশি থাকলে লিফট ভালো হয়।
মাবিয়া: একা একা হাসি। লিফট করেও হাসি। আমি মনে করি, হাসিখুশি থাকলে লিফট ভালো হয়।
প্রথম আলো :ভারোত্তোলন না করলে মাবিয়ার জীবনটা কেমন হতো?
ভারোত্তোলন না করলে মাবিয়ার জীবনটা কেমন হতো?
মাবিয়া: ভারোত্তোলন না করলে এমন ভালো একজন জীবনসঙ্গী পেতাম না। ভালো জীবন পেতাম না। বাংলাদেশ আনসারে চাকরি পেতাম না। হয়তো ছোটখাটো কোনো কাজ করে জীবন যাপন করতে হতো। সমাজ আড়চোখে দেখত। ভারোত্তোলনে এসে ভালো জীবন পেয়েছি। বিদেশ সফর পেয়েছি। এটা নতুন প্রজন্মের জানা উচিত।
মাবিয়া: ভারোত্তোলন না করলে এমন ভালো একজন জীবনসঙ্গী পেতাম না। ভালো জীবন পেতাম না। বাংলাদেশ আনসারে চাকরি পেতাম না। হয়তো ছোটখাটো কোনো কাজ করে জীবন যাপন করতে হতো। সমাজ আড়চোখে দেখত। ভারোত্তোলনে এসে ভালো জীবন পেয়েছি। বিদেশ সফর পেয়েছি। এটা নতুন প্রজন্মের জানা উচিত।
প্রথম আলো :সন্তান হলে তাকে ভারোত্তোলনেই আনবেন?
সন্তান হলে তাকে ভারোত্তোলনেই আনবেন?
মাবিয়া: ইচ্ছা আছে আনার। তবে যদি সংকট, সমস্যাগুলো থেকেই যায়, তাহলে আনব না।
মাবিয়া: ইচ্ছা আছে আনার। তবে যদি সংকট, সমস্যাগুলো থেকেই যায়, তাহলে আনব না।
প্রথম আলো :অবসর কাটে কীভাবে?
অবসর কাটে কীভাবে?
মাবিয়া: পরিবার, স্বামীকে সময় দিই। বাসায় বাড়তি রান্নাবান্না হয়। আম্মুর হাতের ভুনা খিচুড়ি আর গরুর মাংস অনেক ভালো লাগে। বোন চায়নিজ আইটেম রান্না করলে সেটা খাই। আমার ভাবি, বাংলা খাবার খুব ভালো রান্না করতে পারে।
মাবিয়া: পরিবার, স্বামীকে সময় দিই। বাসায় বাড়তি রান্নাবান্না হয়। আম্মুর হাতের ভুনা খিচুড়ি আর গরুর মাংস অনেক ভালো লাগে। বোন চায়নিজ আইটেম রান্না করলে সেটা খাই। আমার ভাবি, বাংলা খাবার খুব ভালো রান্না করতে পারে।
প্রথম আলো :জীবনে কোনো অতৃপ্তি আছে?
জীবনে কোনো অতৃপ্তি আছে?
মাবিয়া: অলিম্পিকে যেতে না পারা। ২০২১ সালে টোকিও অলিম্পিকের আক্রিডিটেশন কার্ড আসে আমার নামে। কদিন পর বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন জানায় আমি যেতে পারব না। কারণটা বলেনি। অলিম্পিক ৪ বছরের বৃত্তি দেয় খেলোয়াড়দের। আমাকে চূড়ান্ত করেও শেষ পর্যন্ত তা দেওয়া হয়নি। এটা খুব হতাশার।
মাবিয়া: অলিম্পিকে যেতে না পারা। ২০২১ সালে টোকিও অলিম্পিকের আক্রিডিটেশন কার্ড আসে আমার নামে। কদিন পর বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন জানায় আমি যেতে পারব না। কারণটা বলেনি। অলিম্পিক ৪ বছরের বৃত্তি দেয় খেলোয়াড়দের। আমাকে চূড়ান্ত করেও শেষ পর্যন্ত তা দেওয়া হয়নি। এটা খুব হতাশার।
প্রথম আলো :প্রতিযোগিতার আগে কোনো বিশেষ কুসংস্কার আছে কী?
প্রতিযোগিতার আগে কোনো বিশেষ কুসংস্কার আছে কী?
মাবিয়া: এসএ গেমসে দুটি সোনা জিতেছি আলাদা দুটি টি–শার্ট পরে। ওই দুটি টি–শার্ট আমি এখনো মাঝেমধ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পরি। আর কালো পোশাক পরলে মনে হয় ভাগ্য বেশি সহায় হয়।
মাবিয়া: এসএ গেমসে দুটি সোনা জিতেছি আলাদা দুটি টি–শার্ট পরে। ওই দুটি টি–শার্ট আমি এখনো মাঝেমধ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পরি। আর কালো পোশাক পরলে মনে হয় ভাগ্য বেশি সহায় হয়।
প্রথম আলো :ভারোত্তোলনের বাইরেও অন্য কোনো গোপন প্রতিভা আছে?
ভারোত্তোলনের বাইরেও অন্য কোনো গোপন প্রতিভা আছে?
মাবিয়া: না, ভারোত্তোলন ছাড়া আর কিছু পারি না (হাসি)। আমার জীবনে ভারোত্তোলন করতে পারাই সবচেয়ে বড় প্রতিভা।
মাবিয়া: না, ভারোত্তোলন ছাড়া আর কিছু পারি না (হাসি)। আমার জীবনে ভারোত্তোলন করতে পারাই সবচেয়ে বড় প্রতিভা।
প্রথম আলো :খেলায় হারলে কী করেন?
খেলায় হারলে কী করেন?
মাবিয়া: নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি। নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করি। কোথায় ভুল ছিল খোঁজার চেষ্টা করি। কারও সঙ্গে চিৎকার–চেঁচামেচি বা কারও সঙ্গে আলোচনায় যাই না।
মাবিয়া: নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি। নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করি। কোথায় ভুল ছিল খোঁজার চেষ্টা করি। কারও সঙ্গে চিৎকার–চেঁচামেচি বা কারও সঙ্গে আলোচনায় যাই না।
প্রথম আলো :রোমান সানা-দিয়া সিদ্দিকীসহ অনেক তারকা খেলোয়াড় বিদেশে চলে গেছেন উন্নত জীবনের আসায়। আপনি কি তেমন কিছু ভেবেছেন?
রোমান সানা-দিয়া সিদ্দিকীসহ অনেক তারকা খেলোয়াড় বিদেশে চলে গেছেন উন্নত জীবনের আসায়। আপনি কি তেমন কিছু ভেবেছেন?
মাবিয়া: হতাশায় মাঝেমধ্যে মনে হয় বিদেশের সুইপারের কাজ করলেও বেশি আয় করতে পারব। কিন্তু দেশ আমাকে যেটা দিয়েছে, সম্মান, পরিচিতি, একটা ছাদ...এ–ও তো কম না। ফলে এত তাড়াতাড়ি দেশ ছাড়ার ইচ্ছা নেই। যদিও কখনো খুব প্রয়োজন হলে যাব, কিন্তু কোনো অভিযোগ করে যাব না। এই দেশই আমাকে মাবিয়া বানিয়েছে।
মাবিয়া: হতাশায় মাঝেমধ্যে মনে হয় বিদেশের সুইপারের কাজ করলেও বেশি আয় করতে পারব। কিন্তু দেশ আমাকে যেটা দিয়েছে, সম্মান, পরিচিতি, একটা ছাদ...এ–ও তো কম না। ফলে এত তাড়াতাড়ি দেশ ছাড়ার ইচ্ছা নেই। যদিও কখনো খুব প্রয়োজন হলে যাব, কিন্তু কোনো অভিযোগ করে যাব না। এই দেশই আমাকে মাবিয়া বানিয়েছে।
প্রথম আলো :পেছনের কোনো কষ্টের কথাগুলো বেশি মনে পড়ে?
পেছনের কোনো কষ্টের কথাগুলো বেশি মনে পড়ে?
মাবিয়া: বাবার সঙ্গে যে সবজি বিক্রি করেছি, এ কথা আগে কখনো বলিনি, আজ আপনাকে বললাম। এমনও হয়েছে ঈদ বা অন্য ফেস্টিভ্যাল, পয়লা বৈশাখে আম্মা আমাদের বাসার দরজা লাগিয়ে রাখত। কারণ, তখন একটা ভালো ড্রেস, ভালো খাবার...এগুলো আমরা এফোর্ট করতে পারতাম না। আমি প্রচণ্ড খেতে ভালোবাসতাম। কিন্তু আম্মা আমাদের আটকে রেখে দিতেন বাসায়। এখন প্রতিটা ফেস্টিভ্যালে কান্না করি, পুরোনো দিনগুলো মনে পড়ে। অতীত ভুলতে পারি না।
মাবিয়া: বাবার সঙ্গে যে সবজি বিক্রি করেছি, এ কথা আগে কখনো বলিনি, আজ আপনাকে বললাম। এমনও হয়েছে ঈদ বা অন্য ফেস্টিভ্যাল, পয়লা বৈশাখে আম্মা আমাদের বাসার দরজা লাগিয়ে রাখত। কারণ, তখন একটা ভালো ড্রেস, ভালো খাবার...এগুলো আমরা এফোর্ট করতে পারতাম না। আমি প্রচণ্ড খেতে ভালোবাসতাম। কিন্তু আম্মা আমাদের আটকে রেখে দিতেন বাসায়। এখন প্রতিটা ফেস্টিভ্যালে কান্না করি, পুরোনো দিনগুলো মনে পড়ে। অতীত ভুলতে পারি না।
প্রথম আলো :দারিদ্র্যই আসলে আপনার শক্তি এবং গর্ব?
দারিদ্র্যই আসলে আপনার শক্তি এবং গর্ব?
মাবিয়া: অবশ্যই। প্রায়ই অনেকে বলে প্লিজ মাবিয়া এগুলো বলো না। তোমার ইমেজ নষ্ট হবে। আমি মনে করি, এটাই আমার ইমেজ তৈরি করেছে। আমি আমার স্বামীকে আমার অতীত নিয়ে বলার পর সে বলে এটা কিছু না। ওই অতীত ছিল বলেই তুমি আজ এখানে। ইদানীং কিছু কিছু মানুষ বলে তুমি তো নন-গ্র্যাজুয়েট। শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই।
মাবিয়া: অবশ্যই। প্রায়ই অনেকে বলে প্লিজ মাবিয়া এগুলো বলো না। তোমার ইমেজ নষ্ট হবে। আমি মনে করি, এটাই আমার ইমেজ তৈরি করেছে। আমি আমার স্বামীকে আমার অতীত নিয়ে বলার পর সে বলে এটা কিছু না। ওই অতীত ছিল বলেই তুমি আজ এখানে। ইদানীং কিছু কিছু মানুষ বলে তুমি তো নন-গ্র্যাজুয়েট। শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই।
প্রথম আলো :পড়াশোনা কত দূর করেছেন?
পড়াশোনা কত দূর করেছেন?
মাবিয়া: আমি নন-এসএসসি। ম্যাট্রিক করিনি। তখন তো আমাদের খাবার জোগাড়ই কঠিন ছিল। শিক্ষা কীভাবে পাব? এটা সম্ভব না। যখন প্রেক্ষাপট বদল হয়েছে, তখন আমার জীবনে শুধু ভারোত্তোলন। এখন এসে মনে হয়, জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল ছিল পড়াশোনা না করা। এখন চার বছর ধরে নিজেকে ট্রেনিং করাই। ওয়েটলিফটিংয়ে কোর্স করেছি। সার্টিফিকেটের শিক্ষা নয়, ভারোত্তোলনে শিক্ষিত হয়েছি। যখন পড়ালেখার সামর্থ্য হয়, তখন তো ভারোত্তোলনেই বুঁদ হয়ে ছিলাম।
মাবিয়া: আমি নন-এসএসসি। ম্যাট্রিক করিনি। তখন তো আমাদের খাবার জোগাড়ই কঠিন ছিল। শিক্ষা কীভাবে পাব? এটা সম্ভব না। যখন প্রেক্ষাপট বদল হয়েছে, তখন আমার জীবনে শুধু ভারোত্তোলন। এখন এসে মনে হয়, জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল ছিল পড়াশোনা না করা। এখন চার বছর ধরে নিজেকে ট্রেনিং করাই। ওয়েটলিফটিংয়ে কোর্স করেছি। সার্টিফিকেটের শিক্ষা নয়, ভারোত্তোলনে শিক্ষিত হয়েছি। যখন পড়ালেখার সামর্থ্য হয়, তখন তো ভারোত্তোলনেই বুঁদ হয়ে ছিলাম।
প্রথম আলো :আপনার আদর্শ কারা?
আপনার আদর্শ কারা?
মাবিয়া: ভারোত্তোলনে সিনিয়র খেলোয়াড়েরা।
মাবিয়া: ভারোত্তোলনে সিনিয়র খেলোয়াড়েরা।
প্রথম আলো :আপনার প্রিয় খাবার কী?
আপনার প্রিয় খাবার কী?
মাবিয়া: যা খাই সেটা ক্রীড়াসুলভ না (হাসি)। বাসায় এসে পেট ভরে খাওয়া—ভাত, মাছ, মাংস...বাসায় যা থাকে তা–ই।
মাবিয়া: যা খাই সেটা ক্রীড়াসুলভ না (হাসি)। বাসায় এসে পেট ভরে খাওয়া—ভাত, মাছ, মাংস...বাসায় যা থাকে তা–ই।
প্রথম আলো :গান শোনেন? কোন গানটা সবচেয়ে ভালো লাগে?
গান শোনেন? কোন গানটা সবচেয়ে ভালো লাগে?
মাবিয়া: নির্দিষ্ট কোনো গান নেই। তবে অনুশীলনের সময় কানে ইয়ার ফোন থাকে। ছয়-সাত বছর ধরে এই অভ্যাসটা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের গান শুনি। আইটেম সং ধরনের গান ভালো লাগে বেশি। মিউজিক বেশি থাকে, এমন গানই বেশি শোনা হয়। সফট গান শুধু অবসরে শোনা হয়। অনেক সময় বাংলা ছবির গানও শুনি।
মাবিয়া: নির্দিষ্ট কোনো গান নেই। তবে অনুশীলনের সময় কানে ইয়ার ফোন থাকে। ছয়-সাত বছর ধরে এই অভ্যাসটা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের গান শুনি। আইটেম সং ধরনের গান ভালো লাগে বেশি। মিউজিক বেশি থাকে, এমন গানই বেশি শোনা হয়। সফট গান শুধু অবসরে শোনা হয়। অনেক সময় বাংলা ছবির গানও শুনি।
প্রথম আলো :মাবিয়া কোনো কনসার্টে গেলে কোন ধরনের গান শুনতে পছন্দ করবে?
মাবিয়া কোনো কনসার্টে গেলে কোন ধরনের গান শুনতে পছন্দ করবে?
মাবিয়া: যেসব গানে নাচা যায় (হাসি)। আনন্দ অনুভব হয়, নাচানাচি করা যায়, এ রকম গান শুনতে চাইতাম।
মাবিয়া: যেসব গানে নাচা যায় (হাসি)। আনন্দ অনুভব হয়, নাচানাচি করা যায়, এ রকম গান শুনতে চাইতাম।
প্রথম আলো :ছুটির দিনে কী করেন?
ছুটির দিনে কী করেন?
মাবিয়া: সপ্তাহে একটা দিন পাই, পুরোপুরি বিশ্রামে থাকতে চাই। কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না তেমন। খাওয়া আর বিছানায় গিয়ে শুয়ে থাকা।
মাবিয়া: সপ্তাহে একটা দিন পাই, পুরোপুরি বিশ্রামে থাকতে চাই। কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না তেমন। খাওয়া আর বিছানায় গিয়ে শুয়ে থাকা।
প্রথম আলো :বড় ছুটি পেলে কোথায় যেতে চান?
বড় ছুটি পেলে কোথায় যেতে চান?
মাবিয়া: এমন একটা জায়গায় যেতে চাই, যেখানে আমাকে কেউ চিনবে না। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করব না। একা একা নিরিবিলি থাকব। স্বামীও যাবে না সঙ্গে! এটা হবে পুরোপুরি নিজস্ব একটা সময়। নিজেকে জানা-বোঝার জন্য একা যাব।
মাবিয়া: এমন একটা জায়গায় যেতে চাই, যেখানে আমাকে কেউ চিনবে না। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করব না। একা একা নিরিবিলি থাকব। স্বামীও যাবে না সঙ্গে! এটা হবে পুরোপুরি নিজস্ব একটা সময়। নিজেকে জানা-বোঝার জন্য একা যাব।
প্রথম আলো :খেলার বাইরে শখ কী?
খেলার বাইরে শখ কী?
মাবিয়া: একটু-আধটু রান্না করতে ভালো লাগে। কোভিডের সময় প্রচুর রান্না করেছি। তখন অনেক হাতের কাজও শিখেছি।
মাবিয়া: একটু-আধটু রান্না করতে ভালো লাগে। কোভিডের সময় প্রচুর রান্না করেছি। তখন অনেক হাতের কাজও শিখেছি।
প্রথম আলো :কী রকম?
কী রকম?
মাবিয়া: যেকোনো ড্রেসে সুতার কাজ করা বা ব্লকের কাজ করা। এখন অবসরে প্রায়ই এই কাজগুলো করি।
মাবিয়া: যেকোনো ড্রেসে সুতার কাজ করা বা ব্লকের কাজ করা। এখন অবসরে প্রায়ই এই কাজগুলো করি।
প্রথম আলো :নাটক, সিনেমা, বই...কী ভালো লাগে?
নাটক, সিনেমা, বই...কী ভালো লাগে?
মাবিয়া: আমি শুধু ভারোত্তোলনই করেছি আর ভারোত্তোলন নিয়েই ভেবেছি। তার জন্যই হয়তোবা আজ আপনারা আমাকে এই অবস্থায় দেখছেন। উঠতে–বসতে কিছু চোখের সামনে পড়লে হয়তো দেখি। ১৫ বছর আমি টিভি দেখারই সময় পাইনি। নাটক, সিনেমা খুব বেশি দেখিনি।
মাবিয়া: আমি শুধু ভারোত্তোলনই করেছি আর ভারোত্তোলন নিয়েই ভেবেছি। তার জন্যই হয়তোবা আজ আপনারা আমাকে এই অবস্থায় দেখছেন। উঠতে–বসতে কিছু চোখের সামনে পড়লে হয়তো দেখি। ১৫ বছর আমি টিভি দেখারই সময় পাইনি। নাটক, সিনেমা খুব বেশি দেখিনি।
প্রথম আলো :যা দেখেছেন, তার মধ্যে পছন্দের সিনেমা?
যা দেখেছেন, তার মধ্যে পছন্দের সিনেমা?
মাবিয়া: হিন্দি সিনেমা কুচ কুচ হোতা হ্যায় আর হাম সাত সাত হ্যায়।
মাবিয়া: হিন্দি সিনেমা কুচ কুচ হোতা হ্যায় আর হাম সাত সাত হ্যায়।
প্রথম আলো :পছন্দের রং?
পছন্দের রং?
মাবিয়া: কালো।
মাবিয়া: কালো।
প্রথম আলো :কেন?
কেন?
মাবিয়া: আমি কালো তাই।
মাবিয়া: আমি কালো তাই।
প্রথম আলো :সকালে উঠে প্রথম কাজ কী করেন?
সকালে উঠে প্রথম কাজ কী করেন?
মাবিয়া: ফোনে সময় দেখা। সময় দেখে দিনের সূচিটা চট করে ভেবে নিই।
মাবিয়া: ফোনে সময় দেখা। সময় দেখে দিনের সূচিটা চট করে ভেবে নিই।
প্রথম আলো :পছন্দের ফুল কী?
পছন্দের ফুল কী?
মাবিয়া: স্বামীর দেওয়া যেকোনো ফুল।
মাবিয়া: স্বামীর দেওয়া যেকোনো ফুল।