Advertisement

মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে সচেতন হোন

কালবেলা

প্রকাশ: ১০ আগস্ট, ২০২৫

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

বর্তমান ডিজিটাল যুগে বাংলাদেশের আর্থিক খাতে মোবাইল ব্যাংকিং একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনে দিয়েছে। নগদ, বিকাশ, রকেট, উপায়সহ নানা সেবা মানুষের হাতের মুঠোয় ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে। গ্রামে-গঞ্জে, শহর-বন্দরে এখন টাকা লেনদেন, বিল পরিশোধ, বেতন প্রদান এমনকি ব্যবসা-বাণিজ্যের বড় অংশই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।

তবে এই আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়ছে, এর সঙ্গে বাড়ছে প্রতারণার আশঙ্কাও। তাই মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে আমাদের সকলেরই সচেতন হওয়া জরুরি।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা

১. সহজ ও দ্রুত লেনদেন – ব্যাংকে না গিয়েই মুহূর্তের মধ্যে টাকা পাঠানো বা গ্রহণ করা যায়।

২. ২৪/৭ সেবা – যে কোনো সময় যে কোনো স্থান থেকে সেবাগ্রহণের সুবিধা।

৩. দৈনন্দিন বিল পরিশোধ – বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেট, স্কুল ফি ইত্যাদি বিল পরিশোধ করা যায় ঘরে বসে।

৪. নগদহীন লেনদেন – নগদ টাকা বহনের ঝুঁকি কমে যায়।

সম্ভাব্য ঝুঁকি ও প্রতারণার কৌশল

মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে কিছু অসাধু ব্যক্তি ও চক্র নানা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। নিচে কিছু সাধারণ প্রতারণার ধরন তুলে ধরা হলো:

১. ভুয়া ফোন কল বা মেসেজ – ‘আপনার বিকাশ একাউন্ট ব্লক হয়ে গেছে’, ‘লটারিতে ১ লাখ টাকা জিতেছেন’, ইত্যাদি বলে গোপন তথ্য চাওয়া হয়।

২. ফিশিং লিংক – এসএমএস বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পাঠানো হয় এমন লিংক, যেখানে ক্লিক করলে একাউন্ট হ্যাক হয়ে যেতে পারে।

৩. এজেন্টদের জালিয়াতি – ভুলভাবে টাকা ট্রান্সফার করে বা অতিরিক্ত চার্জ কেটে নেয় কেউ কেউ।

৪. সিম সোয়াপ প্রতারণা – সিম ক্লোন করে অ্যাকাউন্টে ঢুকে টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

সচেতনতা ও নিরাপদ ব্যবহারের উপায়

১. গোপন তথ্য গোপন রাখুন – আপনার পিন, পাসওয়ার্ড বা OTP (one-time password) কাউকে বলবেন না, এমনকি কাস্টমার কেয়ার পরিচয় দিলেও নয়।

২. অফিশিয়াল অ্যাপ ব্যবহার করুন – মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নির্ভরযোগ্য অ্যাপ ও ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন।

৩. অজানা লিংকে ক্লিক করবেন না – সন্দেহজনক লিংক এড়িয়ে চলুন।

৪. লেনদেনের রসিদ সংগ্রহ করুন – টাকা পাঠানোর সময় রশিদ বা এসএমএস নিশ্চিত করুন।

৫. কাস্টমার কেয়ারে অভিযোগ করুন – প্রতারণার শিকার হলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করুন।

৬. PIN কোড পরিবর্তন করুন নিয়মিত – বিশেষ করে যদি মনে হয় আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য ঝুঁকিতে পড়েছে।

মোবাইল ব্যাংকিং আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে যেমন সহজ করেছে, তেমনি কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণও করেছে। তাই সুবিধার পাশাপাশি ঝুঁকিগুলো মাথায় রেখে সচেতনতার সঙ্গে এর ব্যবহার করা জরুরি। প্রযুক্তি ব্যবহারে যত বেশি সাবধান থাকব, ততই নিরাপদ থাকবে আমাদের অর্থনৈতিক লেনদেন। আসুন, সকলে মিলে সচেতন হই এবং অন্যদেরকেও সচেতন করি – মোবাইল ব্যাংকিং হোক নিরাপদ, বিশ্বাসযোগ্য ও উপকারী।

সচেতন নাগরিক হিসেবে প্রতিটি লেনদেনে সচেতনতা অবলম্বন করুন, প্রতারণা থেকে নিজেকে ও অন্যকে রক্ষা করুন।

Lading . . .