Advertisement

মহাকাশে বিস্ফোরণেও বেঁচে ফেরা নভোচারী লাভেল ৯৭ বছর বয়সে মারা গেছেন

জনকণ্ঠ

প্রকাশ: ১০ আগস্ট, ২০২৫

মহাকাশ অভিযানের অন্যতম সফল নভোচারী ও অ্যাপোলো ১৩ মিশনের কমান্ডার জিম লাভেল ৯৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। ইলিনয়েসের লেক ফরেস্টে নিজ বাসভবনে মৃত্যু হয় তার। জিম লাভেলের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। শনিবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

অলৌকিভাবে বেঁচে ফেরেন মহাকাশ থেকে

১৯৭০ সালে চাঁদে নাসার তৃতীয় মানববাহী অভিযান ছিল অ্যাপোলো ১৩। জিম লাভেলের নেতৃত্বে তিন নভোচারীর দলটি চাঁদের দিকে যাত্রা করেছিল। কিন্তু পৃথিবী থেকে প্রায় ২ লক্ষ মাইল দূরে মহাকাশযানে একটি অক্সিজেন ট্যাংকে মারাত্মক বিস্ফোরণ ঘটে। এক মুহূর্তে মিশনটি ঝুঁকির মুখে পড়ে। এই ভয়াবহ সংকটের মুহূর্তে লাভেল গ্রাউন্ড কন্ট্রোলকে বলেছিলেন “আমাদের একটি সমস্যা হয়েছে।” তার এ উক্তিটি পরবর্তীতে ইতিহাসের অংশ হয়ে যায়।

অ্যাপোলো ১৩ মিশনটি চাঁদে অবতরণ করতে না পারলেও, লাভেলের অসাধারণ নেতৃত্ব ও দলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় নভোচারীরা নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। এই ঘটনাটি "সফল ব্যর্থতা" হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং এটি প্রমাণ করে যে চরম বিপর্যয়ের মুখেও মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তি, বুদ্ধিমত্তা এবং দলগত প্রচেষ্টা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তীতে, তাদের এই দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে ১৯৯৫ সালে টম হ্যাঙ্কস অভিনীত বিখ্যাত চলচ্চিত্র 'অ্যাপোলো ১৩' নির্মিত হয়, যা লাভেলকে সারা বিশ্বে পরিচিত করে তোলে। এই ছবিতে লাভেল নিজেও একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

নাসা এক বিবৃতিতে জিম লাভেলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। নাসার প্রশাসক শন ডাফি বলেছেন, "জিমের দৃঢ় চরিত্র এবং অবিচল সাহস আমাদের জাতিকে চাঁদে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে এবং একটি সম্ভাব্য ট্র্যাজেডিকে এমন এক সাফল্যে পরিণত করেছে, যা থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি।"

এদিকে নিজের জীবনে চারটি মহাকাশ মিশনে অংশ নেন জিম লাভেল। তিনি সবমিলিয়ে মহাকাশে প্রায় ৭১৫ ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন। তিনি চাঁদের কক্ষপথে ভ্রমণকারী প্রথম নভোচারীদের একজন ছিলেন। যদিও তিনি কখনো চাঁদের বুকে হাঁটতে পারেননি, তবুও তার নাম ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।

আরও পড়ুন

Lading . . .