বিল গেটসের ‘সফটওয়্যার ফ্যাক্টরি’ ধারণা আর যথেষ্ট নয়
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট, ২০২৫

মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা বলেন, বিল গেটসের দূরদর্শী চিন্তাধারা বহু বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিকে পথ দেখিয়েছে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে সেই ধারণা আর কার্যকর নয়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠার ৫০ বছরের যাত্রা এখনো শেষ হয়নি বলে মনে করেন নাদেলা। কর্মীদের উদ্দেশে পাঠানো এক বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, গেটসের দেওয়া ‘সফটওয়্যার ফ্যাক্টরি’ ধারণা একসময় মাইক্রোসফটকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফটওয়্যার কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করেছিল। কিন্তু বর্তমান প্রযুক্তি বাস্তবতায় সেই দর্শন আর যথেষ্ট নয়।
মাইক্রোসফট এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চ মুনাফা করছে, অথচ একই সঙ্গে কর্মী ছাঁটাইও করছে। নাদেলা এ পরিস্থিতিকে বলেন সাফল্যের বৈপরীত্য। তাঁর ভাষায়, ‘প্রযুক্তি খাতে কোনো প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী একচেটিয়া আধিপত্য নেই। তাই সাফল্যের মধ্যেই পরিবর্তনের চাপ এসে পড়ে।’ নাদেলা লিখেছেন, ‘বিল মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠার সময় শুধু একটি সফটওয়্যার কোম্পানির স্বপ্ন দেখেননি। তাঁর একটি সফটওয়্যার ফ্যাক্টরির ভাবনা ছিল। যা কোনো নির্দিষ্ট পণ্য বা বিভাগে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সেই ভাবনাই আমাদের এত দিন পথ দেখিয়েছে। কিন্তু আজ আর তা যথেষ্ট নয়।’ নতুন বাস্তবতায় মাইক্রোসফটের লক্ষ্য হলো বিশ্বের ৮০০ কোটি মানুষকে এমন সক্ষমতা দেওয়া, যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তাঁরা নিজেদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিজেরাই তৈরি করতে পারেন। নাদেলার মতে, প্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি সব সময় পরিবর্তনশীল, অনেক সময় বৈসাদৃশ্যপূর্ণ, তবে সব সময়ই চাহিদাসম্পন্ন। তাই কোম্পানি যখন সাফল্যের শীর্ষে, তখনো পুনর্গঠন অপরিহার্য হয়ে ওঠে।
নতুন কাঠামোয় মাইক্রোসফট তিনটি বিষয়কে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এগুলো হলো নিরাপত্তা, মান এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রূপান্তর। নাদেলা জানিয়েছেন, অবকাঠামো থেকে শুরু করে অ্যাপ্লিকেশন ও এজেন্ট পর্যন্ত প্রযুক্তির প্রতিটি স্তরকে এআই যুগের জন্য নতুনভাবে সাজানো হবে। তিনি এই মুহূর্তকে তুলনা করেছেন নব্বইয়ের দশকের ব্যক্তিগত কম্পিউটার বিপ্লবের সঙ্গে। সেই সময় যখন ঘরে ঘরে কম্পিউটার পৌঁছে গিয়েছিল। নাদেলা লিখেছেন, ‘যদি বিশ্বের ৮০০ কোটি মানুষ হাতের নাগালে একজন গবেষক, বিশ্লেষক কিংবা কোডিং এজেন্টকে পেতে পারেন, তবে কেমন এক পরিবর্তন ঘটবে?’ নাদেলার মতে, মাইক্রোসফটের বড় শক্তি হবে প্রযুক্তির প্রতিটি স্তরকে একত্র করে ব্যবহারকারীর জন্য সমন্বিত অভিজ্ঞতা তৈরি করা। একই সঙ্গে প্ল্যাটফর্মকেন্দ্রিক অবস্থান বজায় রেখে বৈশ্বিক অংশীদার ও ডেভেলপারদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করা।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া
আরও পড়ুন