Advertisement

‘রাজার অতিথি’ হওয়ার সুযোগ কমনওয়েলথ স্কলারশিপে, আবেদন কীভাবে

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করতে পারবেন যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়ছবি: সংগৃহীত
কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করতে পারবেন যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়ছবি: সংগৃহীত

অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল হক; শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও বর্তমানে মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি শাবিপ্রবিতে ‘চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল’ ও ‘ভাইস চ্যান্সেলর’ মেডেল পান। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মেরিট স্কলারশিপও পেয়েছেন। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ পেয়েছেন দুবার। ২০০৯ সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপে ইংল্যান্ডের লিডস মেটের স্কুল অব অ্যাপ্লায়েড গ্লোবাল এথিকস থেকে পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে মেরিটসহ মাস্টার্স এবং ২০১২ সালে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের (সোয়াস) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এ বছর ব্রিটিশ কাউন্সিলের দেওয়া সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ক্যাটাগরিতে ‘স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ড’–এর ফাইনালিস্ট হন। তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কমনওয়েলথ স্কলার অ্যান্ড ফেলোর আজীবন সদস্য।

২০২৬ সালের কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য ইউজিসি ( ) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে আবেদন জমা দিতে হবে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তি নিয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করতে পারবেন যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়। মোহাম্মদ জহিরুল হক প্রথম আলোর সঙ্গে কমনওয়েলথ স্কলারশিপে আবেদনের যোগ্যতা, ভর্তিপ্রক্রিয়া ও আবেদনসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছেন।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

কমনওয়েলথ স্কলারশিপ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কিছু বলুন।

মোহাম্মদ জহিরুল হক : কমনওয়েলথ স্কলারশিপ হচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকারের দেওয়া বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বৃত্তিগুলোর একটি। যুক্তরাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের অংশ হিসেবে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো থেকে অসামান্য প্রতিভাবান মেধাবী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য এ বৃত্তি দেওয়া হয়। ১৯৬০ সালে ১৭৫ জন শিক্ষার্থী ও গবেষককে এ বৃত্তি দেওয়ার মাধ্যমে ‘কমনওয়েলথ স্কলারশিপ’-এর যাত্রা শুরু হয়। গত বছর (২০২৪ সাল) পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এ বৃত্তির আওতায় যুক্তরাজ্য থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়ন ও জ্ঞান–বিজ্ঞানের বিকাশে বিশেষ অবদান রাখছেন।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

কমনওয়েলথ স্কলারশিপে আবেদন ও নির্বাচনপ্রক্রিয়া কী?

মোহাম্মদ জহিরুল হক : যুক্তরাজ্যের লন্ডনের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন (সিএসসি) এ স্কলারশিপের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে। সিএসসির ওয়েবসাইটে ( ) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা রয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক কাজ করে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর নির্ধারিত এজেন্সি। বাংলাদেশের মনোনীত এজেন্সি ইউজিসি প্রাথমিক আবেদন আহ্বান, প্রার্থী বাছাই করে অনলাইন আবেদন পূরণ করার নির্দেশনা দিয়ে থাকে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনলাইন আবেদন ফরম ইউজিসি মনোনয়ন করার পর তা সরাসরি চলে যাবে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের সিএসসিতে। সিএসসির উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন নৈর্ব্যক্তিকভাবে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, ইংরেজিতে দক্ষতা (আইইএলটিএস স্কোর), শিক্ষাসংশ্লিষ্ট যোগ্যতা (কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস), গবেষণা প্রস্তাবনার মান, এসওপি ( স্টেটমেন্ট অব পারপাস), কাঙ্ক্ষিত ডিগ্রি অর্জন শেষে প্রত্যাশিত বৃত্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা, সেই ডিগ্রির অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশ এবং যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কীভাবে অবদান রাখবেন, ডিগ্রি অর্জন শেষে স্কলাররা তাঁদের দেশ ও বৈশ্বিক উন্নয়নে কীভাবে ভূমিকা পালন করবেন—এসব বিষয়ে ওপর ভিত্তি করে মনোনয়ন দিয়ে আবেদনপত্র প্রার্থীর কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঙ্ক্ষিত বিভাগ বা ডিসিপ্লিনে পাঠিয়ে দেয়।

পছন্দনীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্লেসমেন্ট হওয়ার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রার্থীদের ফরম পাঠানো হয়। পরে চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থীদের ‘অ্যাওয়ার্ড লেটার’ পাঠানো হয়। স্থানীয় ব্রিটিশ কাউন্সিল সিএসসির পক্ষে পরবর্তী কার্যক্রম যেমন অ্যাওয়ার্ড লেটারপ্রাপ্ত ও তাঁদের পরিবারের ভিসার ব্যাপারে সহায়তা, বিমান টিকিটের ব্যবস্থা করা, যুক্তরাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা, আইন-কানুন, আবহাওয়া ও জীবনযাপন সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য কর্মশালার আয়োজনসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে এক বছরের বেশি সময় লেগে যায়। অর্থাৎ এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে যাঁরা আবেদন করছেন, তাঁদের কোর্স শুরু হবে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।

সিএসসির অগ্রাধিকার দেওয়া ছয়টি ক্ষেত্র হলো—১. সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফর ডেভেলপমেন্ট; ২. স্ট্রেনদেনিং হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড ক্যাপাসিটি; ৩. প্রমোটিং গ্লোবাল প্রসপারিটি; ৪. স্ট্রেনদেনিং গ্লোবাল পিস, সিকিউরিটি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স; ৫. স্ট্রেনদেনিং রিজেলিয়েন্স অ্যান্ড রেসপন্স টু ক্রাইসিস; ৬. অ্যাকসেস, ইনক্লুশন অ্যান্ড অপরচুনিটি।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

কমনওয়েলথ স্কলারশিপে কী কী বিষয়ে আবেদন করা যাবে?

মোহাম্মদ জহিরুল হক: কী বিষয়ে মাস্টার্স বা পিএইচডির জন্য আবেদন করা যাবে বা কোন ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন, এটা নির্দিষ্ট করে বলা নেই। বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বিষয়ে অনার্স/মাস্টার্স ডিগ্রি থাকলে যুক্তরাজ্যের নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বিষয়ে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তির আবেদন করতে পারবেন। তবে তা সিএসসির উন্নয়ন অগ্রাধিকার দেওয়া ছয়টি ক্ষেত্রের অধীনে থাকতে হবে। ক্ষেত্রগুলো হলো:

১. সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফর ডেভেলপমেন্ট;

২. স্ট্রেনদেনিং হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড ক্যাপাসিটি;

৩. প্রমোটিং গ্লোবাল প্রসপারিটি;

৪. স্ট্রেনদেনিং গ্লোবাল পিস, সিকিউরিটি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স;

৫. স্ট্রেনদেনিং রিজেলিয়েন্স অ্যান্ড রেসপন্স টু ক্রাইসিস;

৬. অ্যাকসেস, ইনক্লুশন অ্যান্ড অপরচুনিটি।

মাস্টার্সের জন্য আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা অনার্সের বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি ক্ষেত্র নির্বাচন করবেন। অপর দিকে পিএইচডি প্রোগ্রামের আবেদনকারীরা অনার্স বা মাস্টার্সের ডিসিপ্লিন ও প্রস্তাবিত গবেষণার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি ক্ষেত্র নির্বাচন করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, আমার পিএইচডি গবেষণার শিরোনাম ছিল ‘এনভায়রনমেন্টাল ডিগ্রেডেশন অ্যান্ড মার্জিনালাইজেশন: আ কেস অব খাসি পিপল ইন বাংলাদেশ’। অনার্স ও মাস্টার্স করেছি পলিটিক্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বিষয়ে এবং অপর মাস্টার্স পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে। আমার আবেদনের ক্ষেত্র ছিল: স্ট্রেনদেনিং রিজেলিয়েন্স অ্যান্ড রেসপন্স টু ক্রাইসিস। আবেদিত বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের ক্রম ছিল: ১. স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের (সোয়াস) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ; ২. ডারহাম ইউনিভার্সিটির অ্যানথ্রোপোলজি বিভাগ; ৩. লিডস মেটের স্কুল অব অ্যাপ্লায়েড গ্লোবাল এথিকস। তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনজন প্রস্তাবিত সুপারভাইজরও ছিলেন। যাঁরা সবাই আমার জন্য লেটার অব রিকমেন্ডেশন দিয়েছেন। আমিও প্রস্তাবিত সুপারভাইজারদের আগেই অবহিত করেছি যে সিএসসি আমাকে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্বাচিত করবে, আমাকে সেখানেই পড়াশোনা করতে হবে। তবে যুক্তরাজ্যের বেশির ভাগ অধ্যাপক কমনওয়েলথ স্কলারশিপের নির্বাচনপ্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত। তাই ‘গবেষণা প্রস্তাবনা’ পছন্দনীয় হলে সুপারভাইজার ও তাঁদের সুপারিশ পেতে সমস্যা হয় না। তাই আগের ডিগ্রি কোন বিষয়ে আর এখন কোন বিষয়ে পড়তে ইচ্ছুক, সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ছয়টি উন্নয়ন অগ্রাধিকার ক্ষেত্রের কোনটির অন্তর্ভুক্ত। এমনকি বাংলা বা সংস্কৃত বা ইসলামি শিক্ষা বা ইসলামের ইতিহাস বা নাট্যকলা ও সংগীত থেকেও যদি কেউ পাস করেন আর তিনি ওই অগ্রাধিকার বিষয়ের যেকোনো একটি বিষয়ের জন্য নিজের উচ্চতর ডিগ্রির জন্য বিবেচনা করেন, তাহলে তিনিও আবেদন করতে পারেন। এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীরা ‘স্ট্রেনদেনিং হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড ক্যাপাসিটি’ ক্যাটাগরিতে প্রকৌশল ও ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা ‘সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফর ডেভেলপমেন্ট’ ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন তাঁদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আবেদনের যোগ্যতা কী?

মোহাম্মদ জহিরুল হক : মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য অনার্সে উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণি আর পিএইচডির জন্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ থাকতে হবে। দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এ স্কলারশিপের জন্য বাংলাদেশ থেকেই কয়েক হাজার আবেদন জমা হয়। পরে ইউজিসি প্রার্থীদের মাস্টার্স কোর্সের জন্য পূর্ববর্তী পরীক্ষাগুলোর সিজিপিএ, আইইএলটিএস বা টোফেলের স্কোর এবং পিএইচডির জন্য আবেদনকারীদের পূর্ববর্তী পরীক্ষাগুলোর সিজিপিএ, আইইএলটিএস বা টোফেলের স্কোরের পাশাপাশি গবেষণা ও প্রকাশনার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ডিসিপ্লিন অনুযায়ী শর্ট লিস্ট করে।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

কীভাবে আবেদন করতে হবে?

মোহাম্মদ জহিরুল হক : ইউজিসির ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে তা পূরণ করে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, প্রকাশনার কপি, ইংরেজিতে দক্ষতার সনদ, যুক্তরাজ্যের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অফার লেটার সংযুক্ত করে তা ইউজিসির অভ্যর্থনাকক্ষে রাখা বাক্সে সরাসরি জমা দিতে হবে। খামের ওপর বৃত্তির নাম, পর্যায় (মাস্টার্স বা পিএইচডি) ও ক্ষেত্র উল্লেখ করতে হবে। চাকরি করা প্রার্থীদের অবশ্যই যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা অক্টোবরের শুরুতে শর্ট লিস্টেড আবেদনকারীদের তালিকা ইউজিসি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রাথমিক নির্বাচিত প্রার্থীদের তারিখ ও সময় উল্লেখ করে সাক্ষাত্কারের জন্য ডাকা হবে। ইউজিসির চেয়ারম্যান, সদস্য, দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের নিয়ে গঠিত নির্বাচনী বোর্ড প্রতিটি সাবজেক্ট গ্রুপ থেকে পিএইচডি ও মাস্টার্সের জন্য এক থেকে দুজন (বা এর চেয়ে বেশি) করে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে সাক্ষাৎকারের দিনই বিকেলে ওয়েবসাইটে ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচিত প্রার্থীদের সিএসসির ওয়েবসাইটের নির্ধারিত লিংকে অনলাইন আবেদনপত্র পূরণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে দুজন শিক্ষাবিদের দেওয়া লেটার অব রিকমেন্ডশন, পিএইচডির ক্ষেত্রে দুজন শিক্ষাবিদের দেওয়া লেটার অব রিকোমেন্ডশনের সঙ্গে প্রস্তাবিত সুপারভাইজার থেকে লেটার অব রিকমেন্ডেশন, চাকরি করা প্রার্থীদের নিয়োগকর্তা থেকে এনডোর্সমেন্ট লেটার নিজ নিজ ব্যক্তিরা প্রাপ্ত লিংকে অনলাইনে (কনফিডেনশিয়াল) জমা দেবেন। সাধারণত ২০২৬ সালের মে বা জুন মাসে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ইউজিসির মনোনীত অনেকেই সিএসসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েন।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জনকারীরা কি আবেদন করতে পারবেন?

মোহাম্মদ জহিরুল হক: অবশ্যই পারবেন। এমনকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়–অধিভুক্ত কলেজ থেকে যাঁরা ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন। বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জনকারী বাংলাদেশি নাগরিকেরাও এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কি আবেদন করতে পারবেন?

মোহাম্মদ জহিরুল হক : মাস্টার্স ও পিএইচডি ওপেন ক্যাটাগরিতে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ যেকোনো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারবেন। যাঁরা কোনো চাকরিতে নেই, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন। এমনকি অনার্স সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরাও মাস্টার্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। একাডেমিক স্টাফ স্কলারশিপের জন্য কেবল পাবলিক ইউনিভার্সিটির মনোনীত শিক্ষকেরা আবেদন করতে পারবেন। তবে সব চাকরিজীবীকেই যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

আইইএলটিএস না থাকলে কি আবেদন করা যাবে?

মোহাম্মদ জহিরুল হক : এটি নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামে ভর্তির ন্যূনতম আইইএলটিএস স্কোরের ওপর। উদাহরণ হিসেবে কোনো প্রার্থী যদি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে চান, তাহলে তাঁর আইইএলটিএস স্কোর ৭–এর ওপর থাকতে হবে। আবার কোনো প্রার্থী যদি সোয়াসে পিএইচডি করতে চান, তাহলে আইইএলটিএস ন্যূনতম স্কোর ৭ দশমিক ৫ থাকতে হবে। তবে সিএসসির তালিকাভুক্ত যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে আইইএলটিএস স্কোর অবশ্যই ৬ দশমিক ৫ (ইনডিভিজুয়্যাল) থাকতে হবে।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

আবেদনের ভর্তির অফার লেটার কি থাকতে হবে?

মোহাম্মদ জহিরুল হক: অবশ্যই ‘আনকন্ডিশনাল অফার লেটার’ থাকতে হবে। কেবল টিউশন ফি বা ইংরেজি ভাষায় দক্ষতাসংক্রান্ত বিষয় উল্লেখিত ‘কন্ডিশনাল অফার লেটার’ দিয়েও আবেদন করা যাবে। তবে ইউজিসিতে সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারিত আইইএলটিএস স্কোর দেখাতে হবে।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

স্কলারশিপের জন্য চূড়ান্ত নির্বাচিত প্রার্থীরা কী কী সুবিধা পেয়ে থাকেন?

মোহাম্মদ জহিরুল হক : কমনওয়েলথ স্কলারশিপ বিশ্বের সম্মানজনক বৃত্তিগুলোর একটি। আর কমনওয়েলথের প্রধান হচ্ছেন ব্রিটিশ রাজা। যাঁরা এ বৃত্তি পান, তাঁরা ‘রাজার অতিথি’ হিসেবে যুক্তরাজ্যে গমন করবেন। সে সম্মান তো অর্থ দিয়ে মূল্যায়িত করা যায় না। তারপরও কমনওয়েলথ স্কলারশিপের আর্থিক সুবিধা বিশ্বের অন্য যেকোনো সম্মানজনক বৃত্তির চেয়ে বেশি। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন নির্বাচিত স্কলারদের যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদয় টিউশন ফি, ইউকে ভিসা ফি, মেডিকেল ফি, বাংলাদেশের প্রার্থীর নিকটবর্তী বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী বিমানবন্দর পর্যন্ত রিটার্ন এয়ার টিকিট, লন্ডনে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্কলারদের জন্য তুলনামূলক বেশি ভাতা, স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য ভাতা, উষ্ণ পোশাকের জন্য এককালীন গ্রান্ট, স্টাডি ট্রাভেল গ্রান্ট, ফিল্ড ওয়ার্ক গ্রান্ট, থিসিস গ্রান্ট, কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশনের আয়োজিত যেকোনো প্রশিক্ষণ, স্বল্পমেয়াদি কোর্স, ওয়েলকাম ইভেন্ট ও আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগদানের জন্য টিএ বা ডিএ প্রভৃতি। এ ছাড়া পিএইচডির স্কলারদের ফিল্ড ওয়ার্কের জন্য যাওয়া–আসার বিমান টিকিটও মেলে। তবে প্রতিবছরই নতুন নতুন সুবিধা যুক্ত হয় এবং মুদ্রাস্ফীতি ও জীবনধারণের ব্যয় বৃদ্ধি অনুযায়ী বৃত্তির আর্থিক পরিমাণ বেড়ে থাকে। এ ছাড়া ফুলটাইম স্টুডেন্ট হিসেবে বাসার কাউন্সিল ট্যাক্স মওকুফ ও বিশেষ ছাড়ে ট্রেন বা বাসের সিজনাল টিকিট সুবিধা।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

মোহাম্মদ জহিরুল হক : আপনাকেও ধন্যবাদ। কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য আবেদনকারীদের জন্য শুভ কামনা।

Lading . . .