আবীর কেন, কাউকে নিয়েই ‘ফ্যান্টাসি’ নেই: অনন্যা
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ভারতের ছোট-বড় দুই পর্দারই জনপ্রিয় অভিনেত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিনেমা 'রক্তবীজ ২' আসছে পূজায়। অনন্যার অভিনয়ের বয়স বেশি না। তবে অভিনয়ে তার নেশা হলেও পেশা হিসাবে তিনি বেছে নিয়েছেন সমাজসেবামূলক কাজ। অনন্যা দক্ষিণ কলকাতার একজন কাউন্সিলর। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি জনগণের সেবক হিসাবেও সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন।
অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় বড়পর্দায় প্রথম পা রাখেন দেবের ‘প্রধান’ সিনেমার মাধ্যমে। সেখানেই প্রথম তিনি পুলিশ আধিকারিক হয়েছিলেন। মাঝে ধারাবাহিক ‘মিত্তির বাড়ি’তেও তাকে একই ভূমিকায় দেখা গেছে। ‘রক্তবীজ ২’-এ রাজনীতিবিদ-অভিনেত্রীর অভিনয়ের নেপথ্য কারণ যদিও অভিনব।
২০১২ সালের ঘটনা। তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দিল্লিতে সাক্ষাৎ হয়েছিল। অনেকটা সময় নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবন দেখেছিলেন তিনি। ওর আপ্তসহায়ক নিজে সবটা ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন। তাই ‘রক্তবীজ ২’-এ অভিনয়ের প্রস্তাব আসতেই তিনি সানন্দে রাজি হন। এ ছাড়া নন্দিতা-শিবপ্রসাদের ‘বহুরূপী’র প্রচারেও নানাভাবে ছিলেন তিনি। ওদের সঙ্গে পরিচিতি অনেক দিনের। এবার কাজের সুযোগ হলো।
এবারের পূজার সিনেমা ‘রক্তবীজ ২’-এ অভিনয় করেছেন অনন্যা। পর্দায় এ নিয়ে তৃতীয়বার পুলিশ অফিসারের চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় অনন্যা গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট। জনপ্রিয় অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায় তার ‘বস’। অভিনীত চরিত্রের নাম ‘রিয়া’। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে ‘রক্তবীজ ২’ সিনেমা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন অভিনেত্রী।
এ সিনেমায় অভিনয়ের প্রসঙ্গে অনন্যা বলেন, আমার মধ্যে পরিচালকরা পুলিশ অফিসারের ছায়া দেখতে পান। কেন পান? নিজেই বুঝি না।
এর মধ্যে টালিউডে গুঞ্জন— তাকে অভিনয়ে নিলে নাকি নন্দনে সেই সিনেমা জায়গা পাবেই। সত্যিই কি এ রকম কিছু ঘটছে? —এমন প্রশ্নে হাসিমুখে পাল্টা প্রশ্নও তুললেন অভিনেত্রী—তা-ই যদি হবে, তাহলে আমার অভিনয়ে আসার আগের ছবিগুলো কী করে নন্দনে দেখানো হয়েছে? তিনি বলেন, এ রকম কিছুই নয়; নন্দনে সিনেমা দেখানো হবে কিনা, সেটি সিনেমার মানের ওপরে নির্ভর করে।
প্রায় সব নায়িকা যাকে বিপরীতে পেতে চান, সেই আবীরকে কেমন দেখলেন? এ প্রসঙ্গে অনন্যা বলেন, আবীরকে ঘিরে আমার ‘ফ্যান্টাসি’ আছে কিনা জানতে চাইছেন? রাজনীতি করায় এত কাছ থেকে বাস্তব দেখেছি যে, কাউকে নিয়েই আর ওই বিশেষ অনুভূতি নেই।
তার থেকেও তিনি নজর করেছিলেন, ইউনিটের বাকিদের সঙ্গে নায়কের ব্যবহার কেমন। কিংবা তার শট একবারে ‘ওকে’ হয় কিনা। এ দুই বিষয়ে তার কী পর্যবেক্ষণ? অভিনেত্রী বলেন, নায়কের কোনো তারকাসুলভ আচরণ নেই। সবার সঙ্গে সমানভাবে মেশেন। যে কোনো ব্যাপারে সহযোগিতার চেষ্টাও করেন।
হাসতে হাসতে তিনি বলেন, আবীর আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা। শুটিংয়ের ফাঁকে জানতে চেয়েছি, ভোটটা আমাকেই দেন তো? শুনে জোরে হেসে দেন তিনি।
অনন্যা বরাবর নিজের শরীর নিয়ে সচেতন। যাতে বাড়তি মেদ না জমে, তার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। পর্দায় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসার হতে গিয়ে বিস্তর কসরত করতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। খাওয়াদাওয়াতেও সংযম করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, 'রিয়া' হয়ে উঠতে গিয়ে দেখলাম, শুধুই শরীরচর্চা যথেষ্ট নয়। পরিচালকরা জানিয়েছিলেন— প্রচুর দৌড়ঝাঁপ করতে হবে। অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করতে হবে। তার জন্য ফিটনেস দরকার। সেটি ট্রেডমিলে দৌড়ে হয় না। এর জন্য তিনি অন্যধারার শরীরচর্চা করেছেন। এমনও দৃশ্য ছিল— ধোপাদের কাপড় কাচার জায়গায় দৌড়াতে হবে। লম্বা লাফ দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে সাবানপানিতে পা পিছলে পড়ে গেলে, সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়াতেও হবে।
এ সিনেমায় অনন্যা কি শট দিতে গিয়ে আছাড় খেয়েছিলেন? উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, তিনি প্রত্যেকটা পরীক্ষায় পাশ। নন্দিতাদির থেকে শিবু বেশি খুঁতখুঁতে। আবীর তার থেকেও বেশি। একবারে শট ‘ওকে’ হলেও হয়তো নিখুঁত শটের কারণে একাধিকবার শট দিতে হয়েছে। আমি প্রত্যেকবার সেগুলো করতে পেরেছি।
অনন্যা বলেন, শুটিং করতে করতে তিনি দেখেছেন নন্দিতাদির দাপট। ইন্ডাস্ট্রিতে নারী পরিচালকের সংখ্যা তুলনায় কম। সেখানে নন্দিতাদি নিজের মতো করে কাজ করে চলেছেন, যা দেখে শেখার মতো।