প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জমা হওয়া টাকা থেকে গ্রাহক এখন ঋণ নিতে পারছেন। ঋণের আবেদন করতে হয় অনলাইনে। আবেদন মঞ্জুর হলে ঋণের টাকা গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে চলে যায়।
এক মাস আগে থেকে এই সেবা চালু করেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। তখন থেকেই ঋণের জন্য আবেদন জমা পড়া শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার পর্যন্ত আবেদন জমা পড়েছে ৯২টি। নিষ্পত্তি হয়েছে ১১টি। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কী করতে হবে
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ঋণের আবেদনের জন্য চাঁদা পরিশোধ নিয়মিত থাকতে হয়। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হয় দুই বছরে মোট ২৪ কিস্তিতে। শেষ কিস্তির সঙ্গে ২ শতাংশ টাকা কেটে রাখা হয় সেবা মাশুল (সার্ভিস চার্জ), যা আবার পেনশন কর্তৃপক্ষ নেয় না। অর্থাৎ, সেবা মাশুলের টাকা গ্রাহকের হিসাবেই জমা হয়।
জানা গেছে, গ্রাহক তাঁর জমা হওয়া হিসাব থেকে ঋণ নিতে চাইলে তাঁর হিসাবে কমপক্ষে এক লাখ টাকা জমা পড়তে হবে। মোট জমা টাকার ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঋণের আবেদন করার আগের মাস পর্যন্ত নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ বাধ্যতামূলক।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে ( ) লগইন করে ঋণ আবেদন করা যায়। এরপর মেনুবার থেকে ‘ঋণের আবেদন’ বাটনে ক্লিক করলে আবেদন করার পেজ ওপেন হবে। সবার নিচে থাকা ‘আবেদন করুন’ বাটনে ক্লিক করলে আসে ঋণের পরিমাণ। ফেরতের কিস্তি নির্ধারণ করে ‘আবেদন সম্পন্ন করুন’ বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে শেষ হয় আবেদনপ্রক্রিয়া।
পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঋণের সুযোগটি আগে থেকেই ছিল। অনলাইনে আবেদন করা, মঞ্জুর করা ইত্যাদি পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়ার পর এক মাস আগে থেকে সেবাটি চালু করা হয়েছে।’
আবেদনের তুলনায় নিষ্পত্তির হার কম কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম মোস্তফা বলেন, আবেদন আসার পর একজন কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই করেন, আরেকজন অনুমোদন করেন। তাঁরা অল্প কয়েক দিনের জন্য এখন বিদেশে প্রশিক্ষণে আছেন। ফিরে এলেই অনুমোদনপ্রক্রিয়া গতি পাবে।
পেনশনের চার স্কিম
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশনের ৪টি স্কিমে এখন পর্যন্ত গ্রাহক হয়েছেন পৌনে চার লাখ। বর্তমানে চালু থাকা সর্বজনীন পেনশন স্কিমগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাস। এর মাধ্যমে কর্মজীবী, অনিয়মিত আয়ের মানুষ ও প্রবাসীরা পেনশন সুবিধার আওতায় আসার সুযোগ পাচ্ছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখ, যা ২০৪১ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ৩ কোটি ১০ লাখে। তাঁদের কথা ভেবেই ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয় সর্বজনীন পেনশন স্কিম। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ‘ইউপেনশন’ অ্যাপস উদ্বোধন করে গত ১৩ আগস্ট বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রচারের উদ্যোগ বাড়াতে হবে।