Advertisement

শরতের এই স্নিগ্ধ দিনে

যুগান্তর

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট, ২০২৫

24obnd

ঝুম বর্ষা বিদায় নিয়েছে। প্রকৃতিতে এখন শরতের রাজত্ব। বর্ষার পর শরতে চারদিকে থই থই পানি, থাকে স্বচ্ছ ও চকচকে একটা বছরের সেই সময়, যখন আকাশের দিকে তাকালেই মন ভালো হয়ে যায়। স্বচ্ছ নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ায়। আকাশের দিকে তাকালে অজান্তেই মুগ্ধতায় ভরে ওঠে মন। আবার কখন কী খেয়াল হয়, হুটহাট এক পশলা বৃষ্টিও ঝরিয়ে যায়। তাতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। শরতের বৃষ্টি তো আর বর্ষার মতো দিনভর ঝরে না। শরৎকাল মানেই বাঙালির জন্য বাড়তি ভালোলাগার সময়। বিশেষ করে এ সময়ের সাজ-পোশাকেও এক ধরনের কমনীয়তা উঠে আসে। শরতের আকাশ ও প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে নীল-সাদা রঙের প্রাধান্য চোখে পড়ে। নকশায়ও উঠে আসে শরতের প্রকৃতি।

সব ঋতুতে একইভাবে সাজ মানানসই নয়। এটা সত্যি শরতের ক্ষেত্রেও। এ সময় প্রকৃতি এত বেশি স্নিগ্ধ থাকে যে, আপনাকে খুব বেশি না সাজলেও চলবে। এ সময় নদীর দুধারে সারি সারি কাশফুলের দেখা মেলে। তবে বঞ্চিত থাকে না শহরের মানুষজনও। এখানে নদী না থাকলেও কাশবনের দেখা মেলে কোথাও কোথাও। সেখানে ঘুরতে গিয়ে মন ভরে প্রকৃতির ছোঁয়া অনুভব করেন অনেকেই। নীল পাড়ের একটা সাদা শাড়ি পরে কাশবনে গিয়ে মনের মতো একটা ছবি তোলার ইচ্ছা প্রায় সব নারীরই থাকে। এ শরতে আপনার সাজ-পোশাক হালকা রাখার চেষ্টা করুন। এতে যেমন আরাম পাবেন, তেমনই নিজেকে প্রকৃতির অংশ বলেই মনে হবে।

শরতে ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। অন্তত দিনের বেলা তো নয়ই। রাতের কোনো দাওয়াত থাকলে সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কয়েকটি কাচের চুড়ি পরতে পারেন। নীল বা সবুজ রঙের হলে বেশি মানানসই হয়। ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিকের বদলে হালকা কোনো রং বেছে নিন। যেন আলাদা করে চোখে না লাগে। চুল এ সময় খোলা না রাখাই ভালো। কারণ আবহাওয়া কখনো কখনো কিছুটা গুমোট হয়ে যাচ্ছে। চুল খোলা রাখলে ঘেমে যাওয়ার ভয় থাকে। এর বদলে বেণি করে নিতে পারেন অথবা খোঁপা। তবে ছোট চুল হলে খোলাও রাখতে পারেন, তাতে মন্দ লাগবে না। চুলে চাইলে দুই-একটা ফুলও গুঁজে দিতে পারেন।

শুধু সাজলেই হবে না, এ সময় নিতে হবে ত্বকের সঠিক যত্নও। কারণ ঋতু পরিবর্তনের সময় আমাদের শরীরে তার প্রভাব পড়েই। ত্বক ও চুলের যত্নে তাই এ সময় সচেতন হতে হবে। যদি দিনের বেলা মেকআপ করে থাকেন তাহলে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই মেকআপ তুলে নেবেন ভালো করে। আপনার ত্বকের জন্য মানানসই কোনো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নেবেন। এ ছাড়া বাইরে থেকে বাসায় ফিরলে প্রতিবার ভালো করে মুখ-হাত পরিষ্কার করে নেবেন। সপ্তাহে একবার স্ক্রাব ব্যবহার করবেন। এতে ত্বকে জমে থাকা ময়লা ও মৃত কোষ সহজেই দূর হয়ে যাবে। শুধু বাইরে থেকে যত্ন নেওয়াই যথেষ্ট নয়, শরতে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে খাবারের দিকেও। কারণ সঠিক খাবারই পারে শরীরে সঠিক পুষ্টি পৌঁছে দিতে। তাই এ সময় সবজি ও মৌসুমি ফলমূল খেতে হবে বেশি করে। সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত পানি তো পান করবেনই। এতে ত্বক অনেক সতেজ থাকবে।

বর্ষা চলে গেলেও যেহেতু হুটহাট বৃষ্টির দেখা মিলছে তাই এ সময় বাড়তি সচেতনতা প্রয়োজন। অনেক সময় দিনে তাপমাত্রা বেশি থাকলেও রাতে কমে যাচ্ছে। তাই এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গরম-ঠান্ডার এ সময় হুট করে ঠান্ডা লেগে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়তি নজর দিতে হবে। এ ছাড়া পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সচেতন হোন। হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও যেন দ্রুত শুকিয়ে যায় এমন কাপড়ের পোশাক পরতে হবে। এ সময় খুব বেশি ভারী পোশাক পরবেন না। দিনের বেলা অনেক সময় কড়া রোদের দেখা মিলছে। তাই বাইরে বের হলে সানগ্লাস সঙ্গে রাখুন। সম্ভব হলে ছাতা ও পানির বোতলও রাখুন আপনার ব্যাগে। শরতের দিনগুলো সুন্দর রাখতে চাইলে সুস্থতা সবার আগে জরুরি। তাই নিজের যত্ন নিন। প্রকৃতিকে ভালোবেসে আপনিও হয়ে উঠুন প্রকৃতির অংশ।

আরও পড়ুন

Lading . . .