Advertisement

বিস্তীর্ণ সাতলা বিলের শাপলা দেখতে অসংখ্য দর্শনার্থীর ভিড়

নয়াদিগন্ত

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট, ২০২৫

সাতলা বিলের শাপলা ফুলের মনোহরী দৃশ্য |ছবি : নয়া দিগন্ত
সাতলা বিলের শাপলা ফুলের মনোহরী দৃশ্য |ছবি : নয়া দিগন্ত

বরিশালের উজিরপুরের বিস্তীর্ণ সাতলা বিলের নান্দনিক শাপলা দেখার জন্য প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী ভিড় জমাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) উপজেলার সাতলা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বর্ণিল শাপলার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

প্রতিদিন বিস্তীর্ণ বিলে ফুটে থাকে লাল, সাদা আর নীল শাপলা। ভরা মৌসুমে প্রাণ ফিরে পেয়েছে উজিরপুরের এই বিলটি।

তবে, বিলে নৌকাভাড়া বৃদ্ধি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। এখানে থাকা-খাওয়ারও ভালো ব্যবস্থা নেই। এমনকি পর্যাপ্ত ও মানসম্মত বাথরুম-টয়লেটেরও ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন এখানে ঘুরতে আসা মানুষেরা।

Lotus flower of Satla Beel 1

বরিশাল বিভাগীয় সদর থেকে সড়ক পথে ৬৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে প্রত্যন্ত সাতলা বিল। বরিশাল জেলা সদর কিংবা উজিরপুর উপজেলা সদর থেকে সড়ক পথে সাতলা বাজারে যেতে সড়কের দুই পাশে চোখে পড়বে বিল আর বিল। হরতা বাজারের পর থেকে সাতলা যেতে দুই দিকে বিলের বুকে ৩ থেকে চার ফুট পানির ওপরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে নান্দনিক ও বর্ণিল শাপলা ফুল।

আষাঢ়ের শুরুতে প্রকৃতিগতভাবে বিলে ফুটতে শুরু করে শাপলা। তবে শ্রাবণ থেকে বিলের পর বিল জুড়ে চোখে পড়বে লাল, সাদা আর নীল শাপলা। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় পুরো বিল।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মৌসুমের শুরুতে দর্শনার্থী কিছুটা কম। তারপরও প্রতিদিনই ভিড় করছেন হাজারো পর্যটক। তারা নৌকায় বিলের পানিতে ঘুরে ঘুরে শাপলা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন। কেউ সেলফি তোলেন। কেউ আবার শাপলা তুলে নিয়ে যান।

সরকারি ছুটির দিনে জমজমাট হয়ে ওঠে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি শাপলার বিল। রাতে ফুটে থাকা শাপলা ফুল রোদ ওঠার পর ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। এ কারণে শাপলা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে সূর্যের আলো তীব্র হওয়ার আগে পৌঁছাতে হবে এখানে।

শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম মিঠু বলেন, লাল-নীল আর সাদা শাপলায় পুরো এলাকাকে নয়নাভিরাম করেছে। অনন্য দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে এই বিল। কিন্তু নৌকা ভাড়া এক ঘণ্টায় ২ হাজার টাকা নেয়ার কারণে সেই আনন্দ অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়। নৌকা সিন্ডিকেটের কারণে ইচ্ছে থাকলেও এখানে আসতে ভয় পান দর্শনার্থীরা।

Lotus flower of Satla Beel

দর্শনার্থী মিজান বিশ্বাস বলেন, বরিশাল জেলায় এত সুন্দর শাপলার বিল আছে, এখানে না আসলে তা বুঝতে পারতাম না। তবে নৌকা ভাড়া কমালে মানুষ সানন্দে উপভোগ করতে পারত।

বেড়াতে আসা তরুণী সানজিদা জানান, পরিবারের সাথে বেড়াতে শাপলার বিল এসে মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। শাপলার অসাধারণ নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে অভিভূত। শাপলা বিলের শান্ত পরিবেশে এসে প্রশান্তিতে ভরে গেছে তার দেহ-মন। এক কথায় মুগ্ধ সানজিদা।

ব্যবসায়ী আজাদ হোসেন বাশার জানান, শাপলার বিল দেখে তারা আনন্দ পেয়েছেন। কিন্তু নারীদের নিয়ে এখানে এসে তারা বিপদে পড়েছেন। এখানে ওয়াশ রুম, টয়লেট, বাথরুমসহ থাকা খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।

দর্শনার্থী নাঈম মোল্লা বলেন, শাপলার বিল ঘিরে বৃহৎ পর্যটন কেন্দ্র এইবিলাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।

উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলী সুজার বলেন, উপজেলার সাতলা-হারতার শাপলার বিল পর্যটনের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। শাপলার বিলকে আরো আকর্ষণীয় ও পর্যটনবান্ধব করে গড়ে তুলতে কাজ করা হচ্ছে।

Lotus flower of Satla Beel 2

নৌকাভাড়া বৃদ্ধির কথা বলা হলে তিনি বলেন, শিগগিরই নৌকা ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হবে।

আরও পড়ুন

Lading . . .