বৃষ্টি–বন্যায় রাজশাহীতে সবজির সরবরাহ কম, দাম বাড়তি
রাজশাহীর বাজারে সবজির সরবরাহ ক্রমেই কমছে; এতে দামও বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিভিন্ন জেলায় বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। সবজির দাম বাড়ায় বাজারে এসে ক্রেতারা বিপাকে পড়ছেন। অনেকে অল্প পরিমাণে সবজি কিনে চলে যাচ্ছেন।
বিক্রেতাদের দাবি, বৃষ্টি ও বন্যায় অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। তাঁদের ধারণা, বৃষ্টি কমে গেলে ও বন্যার পানি নেমে গেলে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এবং দামও কমতে পারে। তবে অন্তত এক মাস দাম এমন উচ্চ অবস্থায় থাকতে পারে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত ১৫ দিনে সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। নগরের সাহেববাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে ভোরে পাইকারি এবং পরে খুচরা বিক্রি হয়। গত ১৫ দিনের মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ১৫০ থেকে বেড়ে ২৫০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৫০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে বেড়ে ১০০ টাকা, করলা ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, দেশি লাউ ৫০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, কচুর লতি ৬০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা হয়েছে। তবে ফুলকপির দাম আগের মতোই কেজিপ্রতি ১০০ টাকা। কমেছে শুধু পেঁপের দাম; ৫ টাকা কমে এখন ৩০ টাকা কেজি। আলুর দাম স্থিতিশীল আছে, কেজি ২০ টাকা। তবে পেঁয়াজের কেজি ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে।
নগরের মাস্টারপাড়া বাজারে কথা হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বেগুন ও কাঁচা মরিচ কিনছিলেন। একটু বেশি করে কিনে নিয়ে তিনি অন্য জায়গায় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে আনন্দ নাই, আমাদের মধ্যেও নাই। সবজির দাম বেশি হইলে ক্রেতা কিনতে চায় না। আগে ১৫ টাকা কেজি কিনে ২৫ টাকায় বিক্রি করা যেত। কিন্তু এখন ৭০ টাকায় কিনে ৮০ টাকায় বিক্রি করা যায় না।’
আরেক ব্যবসায়ী সেলিম রেজা বলেন, গত মাসের শেষ দিক থেকে সবজির দাম বাড়ছে। কৃষকের অনেক ফসল বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে, আবার অনেক এলাকায় বন্যায় সবজি পানিতে ডুবে গেছে। রাজশাহীতেও পদ্মার পানি বেড়ে নিচু এলাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
নগরের বিনোদপুর বাজার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সোমবার রাতে একটি ছোট লাউ কিনলেন ৫০ টাকায়। তিনি বলেন, ‘বাজারে দুই-একটি বাদে সব লাউয়ের দাম ৬০ টাকার ওপরে। সবকিছুর দাম বাড়ায় আমরা সবজি কম খাচ্ছি। তবে আলুর দাম কম থাকায় বেশি কিনছি।’
এই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী শাহিন মিয়া বলেন, গত বছর এই সময় আলুর দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এ বছর মাত্র ২০ টাকা। তবে অন্য সবজির দাম আগের বছরের মতোই বাড়তি। ক্রেতারা তাই আলু বেশি কিনছেন, অন্য সবজি কম।