নান্দাইলে নিহত কলেজছাত্রের লাশ নিয়ে মিছিল, খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি
ময়মনসিংহের নান্দাইলে ছুরিকাঘাতে নিহত কলেজছাত্র মুরাদ ভূঁইয়ার (১৭) লাশ নিয়ে মিছিল করেছেন তার মহল্লার লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের পর আজ শনিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মুরাদের লাশ নান্দাইল শহরে নিয়ে আসা হয়। শহরের চণ্ডীপাশা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে মুরাদের লাশ কাঁধে বহন করে হাজারো জনতা ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে।
খুনিদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে মিছিল থেকে স্লোগান দেন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা। এ সময় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মিছিল শেষে মুরাদ ভূঁইয়ার লাশ নান্দাইল পৌরসভার কাকচর মহল্লায় তার বাড়িতে নেওয়া হয়। পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের আহাজারির মধ্যে মুরাদের লাশ তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
চণ্ডীপাশা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় খেলার মাঠে জানাজায় বক্তব্য দেন নান্দাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম (দোয়াত–কলম প্রতীক), এমদাদুল হক ভূঁইয়া (আনারস প্রতীক) ও মো. নাজিমউল্লাহ (মোটরসাইকেল প্রতীক)। এ ছাড়া বক্তব্য দেন সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া, আবদুল মতিন ভূঁইয়া প্রমুখ। বক্তারা বলেন, প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে খুনিরা মুরাদকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। মুরাদের কী দোষ ছিল? এই খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানান তাঁরা।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশের নানা সংস্থা মাঠপর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানিয়েছেন নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মজিদ।
নিহত মুরাদ ভূঁইয়া নান্দাইল পৌরসভার কাকচর মহল্লার মো. তফাজ্জল হোসেনের ছেলে। সে নান্দাইল সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল বলে জানা গেছে। সে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. এমদাদুল হক ভূঁইয়ার (আনারস প্রতীক) কর্মী ছিল। আনারস প্রতীকের লিফলেট বিতরণের সময় গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নান্দাইল পৌর শহরের চণ্ডীপাশা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠের পশ্চিম পাশের সড়কে সে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতের শিকার হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে ছুরিকাঘাতের ঘটনার পর উত্তেজিত কিছু লোক নান্দাইল পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে সালামের কার্যালয় ভাঙচুর করেন।
চতুর্থ ধাপে ৫ জুন চতুর্থ ধাপে নান্দাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।