মানিকগঞ্জের নদ-নদীতে চলছে শত বছরের ঐতিহ্য নৌকা বাইচ
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার হেলাচিয়া ইছামতী নদীতে হয়ে গেল জাঁকজমকপূর্ণ নৌকা বাইচ। এতে দেখা যায় নদীর দু’ধারের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শুধু মানুষ আর মানুষের মিলনমেলা। আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্য এই নৌকা বাইচকে ঘিরে কয়েকদিন আগে থেকেই এলাকায় বিরাজ করছিল উৎসবের আমেজ। রোববার বিকালে নিজ জেলার পাশাপাশি বাইরের জেলা থেকেও বেশ কয়েকটি নৌকা এই বাইচে অংশ নেয়। শুধু ইছামতী নদীতেই নয় চলতি সপ্তাহে কান্তাবতী নদী এবং বেউথা কালীগঙ্গা নদীতেও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য নৌকা বাইচ। সরজমিন দেখা যায়, গ্রামীণ ঐতিহ্য নৌকা বাইচ উপভোগ করতে হাজার হাজার মানুষের ঢল। ইছামতী নদীর দুই ধারে যতদূর চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষের মিলনমেলা। জানা যায়, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর প্রাণ ফিরে পেয়েছে আড়াইশ’ বছরের এখানকার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ। গাজী হাবিব হাসান রিন্টুর উদ্যোগের সঙ্গে এলাকার যুবক-তরুণসহ নানান বয়সের ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজনের যৌথ আয়োজনে দীর্ঘদিন পর নৌকা বাইচের খবরে এলাকায় বইতে থাকে উৎসবের আমেজ। টাঙ্গাইল থেকে আসা কাতার তরী নৌকার মালিক ছামিনুর বলেন, আমার বাবা প্রায় ৩০ বছর কাতার থাকার কারণেই বাইচের নৌকার নাম দেয়া হয়েছে কাতার তরী। কাতারের চাকরির টাকা দিয়েই মূলত নৌকাটি তৈরি করা হয়। গজারি কাঠ দিয়ে তৈরি এ নৌকা তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭ লাখ টাকা। কোনো কিছুর বিনিময় নয়। শখের বশে এবং মানুষজনকে আনন্দ দেয়ার জন্যই আমরা দেশের বিভিন্ন জেলায় আমন্ত্রণ পেলেই ছুটে যাই নৌকা নিয়ে। নৌকা বাইচ উদ্যাপন কমিটির সভাপতি গাজী হাবিব হাসান রিন্টু বলেন, এলাকা ও আশপাশের মানুষের বিনোদনের অন্যতম খোরাক ছিল এই নৌকা বাইচ। বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে নৌকা বাইচের আয়োজন করতে দেয়া হয়নি। এ কারণে এতদিন এলাকার ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলতে পারিনি। এলাকার উদ্যমী মানুষজনদের নিয়ে শুরু করেছি ইনশাআল্লাহ আমাদের ঐতিহ্য নৌকা বাইচকে টিকিয়ে রাখবো।
এদিকে, আগামী ২৩শে আগস্ট মানিকগঞ্জের সবচেয়ে বড় নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মানিকগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বেউথার কালীগঙ্গা নদীতে। রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষজনের সঙ্গে সমন্বয় করে গত এক মাস ধরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া সোমবার কলতাবতী নদীতেও হয়ে গেল সেখানকার ২০০ বছরের ঐতিহ্য নৌকা বাইচ।