জাকসু নির্বাচনে অবশেষে ভোট গণনা শুরু হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট হলে আজ রাত সোয়া দশটার দিকে ভোট গণনা শুরু হয়।
এর আগে আজ সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল পাঁচটায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। তবে তখনো ভোটের সারিতে থাকা শিক্ষার্থীরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পান।
ভোটগ্রহণ শেষে ২১ টি হল থেকে ব্যালট বাক্সগুলো সিনেট হলে নেওয়া হয়। এরপর ভোটগণনা শুরু হয় রাত সোয়া দশটার দিকে।
এদিকে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ছাত্রদল ছাড়াও আরও চারটি প্যানেলের প্রার্থীরা ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
জাকসু নির্বাচন বর্জনের পর বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে ছাত্রদল। আজ বৃহস্পতিবার রাত সোয়া নয়টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই মিছিল বের হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিলটি ক্যাম্পাসের নতুন কলাভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে জাকসু নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনের সড়ক হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরের দিকে যায়।
এ সময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ‘বয়কট বয়কট, জাকসু বয়কট’, ‘প্রহসনের জাকসু, বয়কট বয়কট’ শ্লোগান দেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদলের বর্তমান ও সাবেক নেতারা মিছিলে অংশ নেন।
জাকসু নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন ও পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের চারটি প্যানেলের প্রার্থীরা।
এই চারটি প্যানেল হলো ‘সম্প্রীতির ঐক্য’, ‘সংশপ্তক পর্ষদ’, ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আংশিক প্যানেল। বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের কথা জানান তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী শরণ এহসান।
লিখিত বক্তব্যে শরণ এহসান বলেন, গতকাল রাতে ব্যালট বাক্স নিয়ে হট্টগোল থেকে শুরু করে রাত দুইটাই পোলিং এজেন্টের ঘোষণা দেওয়া, তার ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট ম্যানেজ করতে না পারা, পোলিং এজেন্টদের কাজ করতে না দেওয়া, নারী হলে পুরুষ প্রার্থী প্রবেশ, ভোটার লিস্টে ছবি না থাকা, আঙুলে কালির দাগ না দেওয়া, ভোটার হওয়ার পরও তালিকায় নাম না থাকা ইত্যাদি অনেক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা আর গাফিলতির কারণে এই নির্বাচনকে ঘিরে অনেক সন্দেহ আর প্রশ্ন ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই দায় কেবল এবং কেবলমাত্র এই ব্যর্থ, অথর্ব এবং পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন আর প্রশাসনের।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই অনিয়মের নির্বাচনকে বয়কট করেছি এবং দ্রুত সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ায় নতুন করে তফসিল ঘোষণাসহ পুননির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’
জাকসু নির্বাচনে ২১টি হল থেকে ব্যালট বাক্সগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে নেওয়া হবে। সেখানে ভোটগণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হবে।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ টি আবাসিক হলের ভোট কেন্দ্রের ব্যালট বক্সগুলো সিনেট হলে আনা হচ্ছে। সিনেট হলেই ভোট গণনা শুরু হবে এবং সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি স্থানে এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে সরাসরি দেখানো হবে। এখানেই ফল ঘোষণা করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। তবে পাঁচটার পরেও ভোটের সারিতে অপেক্ষমান থাকা শিক্ষার্থীরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
জাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণের নির্ধারিত সময় শেষ হলেও চলছে ভোট গ্রহণ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোট দেওয়ার সারিতে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পারবেন। শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হল কেন্দ্রে বিকেল ৫ টা ৪০ মিনিটেও শিক্ষার্থীদের ভোটের সারিতে থাকতে দেখা যায়।
আজ সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় বিকেল ৫টা। তবে এ সময় ভোটের সারিতে থাকা সবাই ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
ভোট শেষ হওয়ার আধঘণ্টা আগে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন তিনজন শিক্ষক। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জাকসু নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে নির্বাচন থেকে সরে আসার কথা জানান তাঁরা।
এই তিন শিক্ষক হলেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম খান। তাঁরা বিএনপিপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত।
নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পর হাতে কালির দাগ না থাকা, অতিরিক্ত ব্যালট প্রিন্ট করাসহ নানা অভিযোগ তুলে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন তাঁরা।
আজ সকাল ৯টায় জাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল পাঁচটায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। তবে পাঁচটার পরও ভোটের সারিতে থাকা শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পারবেন।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। নির্বাচনে বেশ কিছু অসঙ্গতির অভিযোগ তুলেছে এই প্যানেল।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী।
তানজিলা হোসাইন বৈশাখী অভিযোগ করেন, ভোট দেয়ার সময় ১৫ নম্বর ছাত্রী হলে আঙুলে দেওয়া কালি মুছে যাচ্ছিল, একটা ব্যালট পেপার ফ্লোরে পাওয়া গেছে। এসব কারণে এই হলে দুই ঘণ্টা নির্বাচন বন্ধ ছিল।
একটি হলে এই প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। আরও অভিযোগ করা হয়, তাজউদ্দীন আহমদ হলে ভোটার তালিকায় ছবি না থাকায় ভোট বন্ধ ছিল। জামায়াত নেতার প্রতিষ্ঠান থেকে ছাপানো ব্যালটে ভোট হচ্ছে। সব হলে ছাত্রদলের প্যানেলের এজেন্টদের থাকতে দেওয়া হয়নি।
জিএস প্রার্থী আরও অভিযোগ করেন, ‘ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী প্রশ্ন তুলেছে, প্রশাসন কেন শতকরা ১০ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছেপেছে। আমাদের প্রশ্ন, জামায়াত নেতার কোম্পানি থেকে ছাপানো ব্যালটের শতকরা ১০ থেকে ২০ শতাংশ শিবিরকে দেওয়া হয়েছে কিনা?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী ও এজেন্টদের বাধা দিয়ে ওই জাল ব্যালট দিয়ে ভোট কাস্ট করা হচ্ছে কিনা?’
ভোট কেন্দ্রগুলো মনিটর করার জন্য জামায়াত নেতার কোম্পানিকেই সিসিটিভির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করে এই প্যানেল।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের বিজয় ব্যাহত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে এক হয়ে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থা করেছে বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মো. শেখ সাদী হাসানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জাকসু নির্বাচনে ভোট চলাকালে ভোটকেন্দ্র বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে অবস্থান করছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান সোহান। তাঁকে প্রক্টরের কাছে হস্তান্তর করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে মুচলেকা নিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এই হল থেকে গিয়েছি। এর মধ্যে আমরা খবর পেয়েছি আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ছাত্রদলের একজন এই হলে অবস্থান করছেন।’
খবর পাওয়ার পরে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে ওই ছাত্রদল নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীকে প্রক্টরের কাছে হস্তান্তর করেছেন বলে জানান প্রাধ্যক্ষ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ১৮ নম্বর অনুসারে ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তা, কর্মচারী, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তিবর্গ এবং কেবল ভোটাররাই অনুপ্রবেশ করতে পারবেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হলগুলোই ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর বিষয়টি আমি শুনেছি। তাঁর কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।'
জাকসু নির্বাচন বর্জন করছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। নির্বাচনে ভোট গ্রহণে অসঙ্গতিসহ নানা অভিযোগ তুলেছে তাঁরা।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টার দিকে মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী।
এ সময় প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মো. শেখ সাদী হাসানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক অসঙ্গতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট।
এই জোটের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আরিফ উল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা গতকাল থেকে দেখতে পেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আরিফ উল্লাহ।
আরিফ উল্লাহ বলেন, 'সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনারের যে পরিমাণ প্রস্তুতি থাকার কথা, তার একটি প্রস্তুতিও তারা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি।'
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং হলগুলোতে সাবেক ছাত্রদল নেতা–কর্মীদের দেখা গেছে বলে অভিযোগ করেন আরিফ উল্লাহ।
বিভিন্ন হলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল তাঁদের ভোট দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন আরিফ উল্লাহ। ক্যাম্পাসের চারপাশে ছাত্রদলের বহিরাগতদের বেশি আনাগোনা দেখা যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ওএমআর ও ব্যালট পেপার ছাপানোর অভিযোগের বিষয়ে আরিফ উল্লাহ বলেন, এইচআরসফট বিডি নামে যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রোকমুনুর জামান রনি বিএনপি সমর্থক। অথচ এ নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বেলা ২টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি এ কথা বলেন।
মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘এরইমধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার জন্য কিছু সময়ের জন্য ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। আমরা সেসব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দিষ্ট সময়ের পর ভোটার এলে কিছু সময়ের জন্য ভোট নিতে বলেছি।’
এর আগে আজ সকাল ৯টা থেকে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শুরুর দিকে ভোটার উপস্থিতি বেশ কম থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে। ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন, ছাত্র ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন। ২৫টি পদে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হলের নিচতলার করিডরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তরিকুল ইসলাম নাজিম। মুঠোফোনে অপর প্রান্তে কাউকে বলছিলেন, ‘দেখো না কেউ আছে কিনা। একটু তাড়াতাড়ি আসলে ভালো হয়।’
তরিকুল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। জাকসু ও হল সংসদে ভোট দিতে এসে বিপত্তিতে পড়েছেন তরিকুল। তাই সহায়তার জন্য বিশ্বস্ত কাউকে খুঁজছেন। জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। আর এতে বিপত্তিতে পড়েন তরিকুল।
তরিকুল বললেন, গত ২৭ আগস্ট জাকসু নির্বাচন কমিশনের কাছে ডাকসুর মতো নির্বাচনে ব্রেইল পদ্ধতি রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন ক্যাম্পাসের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনারের কাছে একই দাবি আবারও জানানো হয়। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান ব্রেইল পদ্ধতি রাখতে না পারায় দুঃখপ্রকাশ করেন।
ক্যাম্পাসে আমার মতো ৬০ থেকে ৭০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আছেন। সবাইকে ভোট দিতে অন্যের সহায়তা নিতে হবে। কিন্তু বিশ্বস্ত কাউকে পাওয়া না গেলে আমার মতো বিপত্তিতে পড়তে হবে। প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে এমনটা হয়েছে—বলেন তরিকুল।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ নম্বর ছাত্রী হলের ভোট কেন্দ্রে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে এমন খবরকে কেন্দ্র করে এই হট্টগোল হয়।
এতে হলটিতে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী তিনজন শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রশিবির সমর্থকরা এই ছাত্রী হল কেন্দ্রে জাল ভোট দিচ্ছেন এমন গুঞ্জন শুনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান ও তাঁর কয়েকজন অনুসারীরা কেন্দ্রের ভেতরে ঢোকেন।
এ সময় তাঁদের সঙ্গে ফজিলতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ও কয়েকজন সাংবাদিক ছিলেন বলে অভিযোগ করেন ওই প্রত্যক্ষদর্শীরা।
১৫ নম্বর ছাত্রী হলের ফটকে দায়িত্বে থাকা দুজন কর্মচারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘একজন শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রদলের প্রার্থীরা হলে ঢোকেন। আমরা তাদের বাধা দিলেও তারা শোনেননি।’
১৫ নম্বর হলের প্রাধ্যক্ষ শামীমা সুলতানা বলেন, ভোট দেওয়ার পর যে কালি দেওয়া হচ্ছিল সেটি দীর্ঘসময় স্থায়ী হচ্ছিলো না। তখন নতুন কালির জন্য কিছু সময় ভোট বন্ধ ছিল। এ সময় হট্টগোল শুরু হয়। এ বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে ফজিলতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি নির্বাচন মনিটরিং টিমের সদস্য। তাঁর অনুমতির প্রয়োজন নেই। জালভোট দেওয়ার খবর শুনে তিনি হলে গিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কোনো প্রার্থী ছিল না।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম বলেন, 'অনুমতি বাদে প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই।'
এ বিষয়ে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা প্রক্টর স্যারের অনুমতি নিয়ে হলে গিয়েছিলাম। সেখানে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়েছিলাম। তবে কিছু শিক্ষার্থী মব তৈরি করার চেষ্টা করে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আইয়ুব আলী। জন্মের পর থেকে দুই চোখে দেখতে পান না তিনি। আজ বৃহস্পতিবার বন্ধুর হাত ধরে জাকসু ও হল সংসদের ভোট দিতে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ ব্যাচের এই শিক্ষার্থী।
বেলা ১১টার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল কেন্দ্রে ভোট দেন আইয়ুব। ভোট কেন্দ্রের বাইরে তিনি বললেন, ‘আজ আমি জীবনে প্রথম ভোট দিলাম। এর আগে কখনো সুযোগ পাইনি।’
কেমন লাগল—জানতে চাইলে আইয়ুব বলেন, ‘অভিজ্ঞতা অনেক ভালো ছিল। ফ্রেন্ডকে (বন্ধু) নিয়ে এসেছিলাম শ্রুতিলেখক হিসেবে। তো, আমি বলেছি আর সে আমার... টিক দিয়েছে আরকি।’
আইয়ুব আলীর সঙ্গে থাকা তাঁর বন্ধু আরহান রহমান বলেন, ভোট ভালোভাবেই হতে দেখা যাচ্ছে। এটা ভালো লাগছে।
ভোট দেওয়ার পর আঙুলে মার্কার দিয়ে দাগ না দেওয়া এবং ছবিসহ ভোটার তালিকা না থাকার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেছেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের শিক্ষার্থীরা।
এই কেন্দ্রে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল ২৩ মিনিট। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টা থেকে সেখানে আবারও ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
ভোটকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থী বায়োটেকনোলজি বিভাগের সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলসহ কয়েকটি নতুন হলের শিক্ষার্থীদের পুরোনো আইডি কার্ড বাতিল করে নতুন করে আইডি কার্ড বানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত সময় না থাকায় এসব শিক্ষার্থীর হল ইনডেক্স কার্ড দিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এই কার্ডে চাইলে আগের ছবি তুলে আঠা দিয়ে নতুন ছবি বসানো সম্ভব। ভোটার তালিকাতেও হলের অনার্সের শিক্ষার্থীদের নাম ছিল, কিন্তু ছবি ছিল না। এ কারণে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায়।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, বেলা ১১টা ৫২ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ২৩ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। এখন স্বাভাবিক হয়েছে।
আলমগীর কবির আরও বলেন, ছবিসহ ভোটার তালিকা রাখার কোনো নির্দেশনা ছিল না। ইনডেক্স কার্ড ও লাইব্রেরি কার্ড দেখে ভোট দেওয়ার সুযোগের কথা ছিল নির্দেশনায়। তবে শিক্ষার্থীরা ছবিসহ ভোটার তালিকা দেখার দাবি তোলায় তালিকার সফট কপি আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনী আচরণ বিধিমালায় কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
জাকসু নির্বাচনের সেন্ট্রাল মনিটরিং দলের সদস্য সালেহ আহমদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ভোটার তালিকায় ছবি না থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে। এরপর ছবিসহ ভোটার তালিকার সফট কপি পাঠানো হয়েছে। এখন নির্বিঘ্নে ভোট গ্রহণ চলছে।
এটাকে ‘ব্যবস্থাপনাগত সমস্যা’ হিসেবে উল্লেখ করে সালেহ আহমদ খান বলেন, ছবিসহ ভোটার তালিকার সফট কপি আসার আগে ১৫৩টি ভোট পড়েছে। সেগুলো আলাদা রেখে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের ডেকে এনে যাচাই করা হবে।
এর আগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার সময় ভোটারের আঙুলে মার্কার দিয়ে দাগ না দেওয়ার অভিযোগ উঠে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব একেএম রাশিদুল আলম বলেন, সব হলেই ভোটারদের ভোট দেওয়া শেষে আঙুলে কালি দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে অমোচনীয় কালি দেওয়ার জন্য দুটি করে কলম দেওয়া হয়েছে। সব হলেই দেওয়ার কথা। কেন দিচ্ছে না, সেটা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ জানিয়েছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সহ–সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শেখ সাদী হাসান।
ভোট গ্রহণ শুরুর চার ঘণ্টা পরে আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ জানান শেখ সাদী হাসান।
শেখ সাদী হাসান বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপুল সাড়া পেয়ে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল জাকসুতে বিজয়ের আশা করেছে। লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, ‘ভোট গ্রহণের আগের রাতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পাই যে জামায়াতে ইসলামীর কোনো এক অখ্যাত কোম্পানি থেকে যথাযথ ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নির্বাচন কমিশন জাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপার ও ভোট গণনার ওএমআর মেশিন সরবরাহ করেছে।’ নির্বাচনে ছাত্র শিবিরের প্যানেলকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে এমন করা হয়েছে বলে দাবি করেন শেখ সাদী হাসান।
শেখ সাদী হাসান আরও অভিযোগ করেন, ‘আমরা এ নিয়ে ভোট গণনায় কারচুপির শঙ্কা করেছি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু একই কোম্পানির সরবরাহকৃত ব্যালট পেপার দিয়েই আজকের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
ছাত্র শিবির তাদের নিজস্ব কোম্পানি থেকে আলাদা করে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে কারচুপির মাধ্যমে জয়ী হওয়ার জন্য নীল নকশা করে রেখেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন শেখ সাদী হাসান।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশপাশে জামায়াত শিবিরের অনেক নেতা-কর্মী জড়ো হয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন শেখ সাদী হাসান। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতংকিত বলেন তিনি।
শহীদ সালাম-বরকত হল কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বেরিয়ে এলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইফতেখার হোসেন নাফিন। তাঁর বয়স ২০ বছর। ইফতেখার বললেন, এটাই তাঁর জীবনে প্রথমবার ভোট দেওয়া।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে জাকসু ও হল সংসদে ভোট দিয়েছেন ইফতেখার। ইতিহাস বিভাগে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ছেন তিনি।
প্রথমবার ভোট দিয়ে বেশ আনন্দিত ইফতেখার। কেমন লাগছে জানতে চাইলে বললেন, ‘প্রথমবারের মতো কোনো নির্বাচনে ভোট দিলাম। ভোটের মধ্য দিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরার সুযোগ হলো।’
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা পর আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে বৃষ্টি নেমেছে। এর কিছুক্ষণ পর আবাসিক হলগুলোতে বিদ্যুৎ চলে যায়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বেলা সোয়া ১১টা) বিদ্যুৎ আসেনি।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ নম্বর ছাত্র হল, মওলানা ভাসানী হল, শহীদ রফিক-জব্বার হল, ফজিলতুন্নেছা হল, আ ফ ম কামালউদ্দিন হল, প্রীতিলতা হল, বীর প্রতীক তারামন বিবি হলসহ কয়েকটি আবাসিক হলে বিদ্যুৎ নেই।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল ও শেখ রাসেল হলসহ কয়েকটি আবাসিক হলে জেনারেটর চালু করে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ফজিলতুন্নেসা হলের শিক্ষার্থী মারজুকা মাহী বলেন, ‘আমাদের হলে ভোট গ্রহণ হচ্ছে নিচের ফ্লোরের আন্ডারগ্রাউন্ডে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় সেখানে অনেক অন্ধকার ছিল।’
১০ নম্বর ছাত্র হলের প্রাধ্যক্ষ রেজাউল রকিব বলেন, আমরা বিকল্প চার্জার লাইট দিয়ে আলোর ব্যবস্থা করেছি।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয় আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে। ১০ নম্বর ছাত্র হলে প্রথম ১ ঘণ্টা ১০ মিনিটে ভোট দিয়েছেন ৭ জন। এ তথ্য জানিয়ে প্রাধ্যক্ষ রেজাউল রকিব বলেন, অনেকে ভোট দেওয়ার জন্য সারিতে অপেক্ষা করছে। ধীরে ধীরে ভোটারের উপস্থিতি বাড়ছে।
আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে প্রথম এক ঘণ্টায় ভোট দিয়েছেন ২৯ জন। এ হলে মোট ভোটার ৩৩৩ জন। আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা শিবলী নোমান এ তথ্য জানান।
শহীদ সালাম বরকত হলে মোট ভোটার ২৯৯ জন। প্রথম এক ঘণ্টায় ভোট দিয়েছেন ২০ জন। রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম এ মওদুদ আহমেদ এ তথ্য জানান।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এ হলে ১২০টি ভোট পড়েছে। হলটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৯৪৭।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ নম্বর ছাত্রী হলে প্রথম দেড় ঘণ্টায় ভোট দিয়েছেন ১০০ জন। হলটিতে মোট ভোটার ৫৭১ জন। হলের প্রাধ্যক্ষ শামীমা নাছরিন জলি এ তথ্য জানান।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার সময় ভোটারের আঙুলে মার্কার দিয়ে দাগ না দেওয়া অভিযোগ উঠেছে।
এই কেন্দ্রে এসে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হলে ভোট দেওয়ার সময় কোন ভোটারের আঙুলের ওপর মার্কার দিয়ে দাগ দেওয়া হচ্ছে না। শুধু স্বাক্ষর নিয়ে ব্যালট পেপার দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে হলের পোলিং কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার মন্ডল প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে তাঁদের কারও কাছে মার্কার সরবরাহ করা হয়নি।
দেখা গেছে, ডাকসুর মতো এখানে হাতের আঙুলে দাগ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিসিটিভির মাধ্যমে ভোটের নজরদারি করা হচ্ছে।
তবে ২১ নম্বর ছাত্র হলে (সাবেক শেখ রাসেল হল) হাতে মার্কারের দাগ দিয়ে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৭৩৫ জন। বেলা ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৯২টি।
এই কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোসাব্বের হোসেন বলেন, কেন্দ্রে মার্কার ব্যবহারের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা নেই। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মার্কার ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম বলেন, সব হলেই ভোটারদের ভোট দেওয়া শেষে আঙুলে কালি দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে অমোচনীয় কালি দেওয়ার জন্য দুটি করে কলম দেওয়া হয়েছে। সব হলেই দেওয়ার কথা। ওই হলে কেন দেওয়া হচ্ছে না তিনি খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানান।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ফজিলাতুন্নেছা হল কেন্দ্রে দেরিতে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। হলের শিক্ষার্থীরা বলছেন, ৪৫ মিনিট পর ভোট শুরু হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বলছেন, ২৫ মিনিট দেরিতে ভোট শুরু হয়েছে।
ফজিলতুন্নেসা হলে শুরুতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিকেরা। হলের নিরাপত্তাকর্মীর মাধ্যমে খবর পাঠানো হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু সাইফ জানান, পুরুষ সাংবাদিক ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হলে প্রক্টরের অনুমতি লাগবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব একেএম রাশিদুল আলম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
পরে ফজিলতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সাংবাদিকের হলে ঢোকার ক্ষেত্রে বাধা না থাকার কথা জানান।
ফজিলতুন্নেসা হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু সাইফ মুঠোফোনে বলেন, ৪৫ মিনিট নয়, ভোট শুরু করতে ২৫ মিনিটের মতো দেরি হয়েছে। মূলত প্রক্রিয়াগত (প্রস্তুতিমূলক) কাজ শেষ না হওয়ায় এমনটা হয়েছে।
আজ সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা। ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ভুল রয়েছে। কার্যকরী সদস্য পদে তিনজন প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যালটে দেওয়া নির্দেশনায় একজনের নামের পাশে টিকচিহ্ন দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের পোলিং কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার মন্ডল প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের বলে দেওয়া হয়েছে। তারা সদস্য পদে তিনটি করেই টিক চিহ্ন দিচ্ছেন। অর্থাৎ তিনটি করে ভোট দিচ্ছেন।
চারটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল:
ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল
ছাত্রশিবির–সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট
প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের সম্প্রীতির ঐক্য
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ–সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম
তিনটি আংশিক প্যানেল:
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন
স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ
ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের সংশপ্তক পর্ষদ
ভোটার কত
মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন
ছাত্রী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন
ছাত্র ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন
২৫টি পদে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী
কোন পদে কত প্রার্থী
সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী ৯ জন
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী ৮ জন
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে প্রার্থী ৬ জন
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রার্থী ১০ জন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে ১৬ মিনিট পর।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১৬ মিনিটের দিকে সেখানে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ৪৫ মিনিট পর পৌনে ১০টা পর্যন্ত এখানে ভোট পড়েছে ১২টি।
এই হলের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের (৫১ ব্যাচ) শিক্ষার্থী এস এম হামিদ হাসান বলেন, ‘ভোট শুরুর প্রথম দিকেই এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। প্রায় ২০ মিনিট লাইনে দাঁড়ানোর পর ভোট দিতে পেরেছি।’
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের পোলিং কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার মন্ডল প্রথম আলোকে বলেন, এই ভোটকেন্দ্রে ১৬ মিনিট পর ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ৯টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১২টি। তবে এখন ভোটার উপস্থিতি অনেক বেড়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার কিছু পরেই ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
সাংবাদিক ও প্রার্থীদের উপস্থিতিতে ফাঁকা ব্যালট বাক্স দেখিয়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
আবাসিক হলের কেন্দ্রগুলোতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রস্তুতি শেষ করেছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কিছুক্ষণ পর শুরু হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। দীর্ঘ ৩৩ বছর পর এই নির্বাচন হচ্ছে ।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
সকাল আটটার দিকে দেখা যায়, আবাসিক হলের কেন্দ্রগুলোতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সকাল সোয়া আটটার দিকে ক্যাম্পাসের পেছনে গেরুয়া এলাকা সংলগ্ন ফটকে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ লেখা ব্যানার ঝোলানো হয়েছে।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (পিপিএম) আনিসুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো ঝুঁকি নেই। তবে অন্যান্য ফটকের তুলনায় গেরুয়া ফটক দিয়ে বাইরের লোকজন ঢোকার চেষ্টা করবে। এ কারণে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশি রাখা হয়েছে।