সাবেক স্বামীকে হত্যা করতে কিশোর গ্যাং ভাড়া, অতঃপর...
সাবেক স্বামী ফরহাদ ইসলাম জয়কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করতে কিশোর গ্যাং ভাড়া করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী লাইজু বেগমের বিরুদ্ধে।
পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত লাইজু বেগম, কিশোর গ্যাং সাকিল, রাকিবুল ও অলি হাওলাদারকে গ্রেফতার করেছে।
সোমবার বিকালে পুলিশ তাদের আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করেছে। আদালতের বিচারক মো. ইফতি হাসান ইমরান তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার রাত ৯টার দিকে সাবেক স্ত্রী ফোনে ফরহাদকে ডেকে আমতলী উপজেলার উতসিতলা নামক স্থানে আনেন। সেখানে তাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে আমতলী উপজেলার পূর্ব কুকুয়া গ্রামের লতিফ মুসুল্লির ছেলে ফরহাদ ইসলাম জয়ের সঙ্গে হরিমৃত্যুঞ্জয় গ্রামের মোস্তফা কাজীর মেয়ে লাইজু বেগমের বিয়ে হয়। লাইজু গত ছয় বছর ধরে সৌদি আরব ও ওমানে ছিলেন। তাদের ৮ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
জয়ের অভিযোগ, তার অনুমতি ছাড়া স্ত্রী লাইজু বেগম প্রবাসে যাওয়ায় গত ২৫ জুলাই তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়; কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকেই তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী লাইজু বেগম স্বামী ফরহাদ ইসলাম জয়কে হত্যার পরিকল্পনা করে। রোববার সন্ধ্যায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী লাইজু মোবাইল ফোনে মেয়েকে দেখতে তার দাদার বাড়ি উতসীতলা নামক স্থানে সাবেক স্বামী জয়কে যেতে বলেন।
রাত পৌনে ৯টার দিকে জয় উতসীতলায় পৌঁছামাত্রই ওতপেতে থাকা ৬-৮ জন কিশোর গ্যাং ও তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী লাইজু তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর শুরু করে; কিন্তু স্থানীয় এক ব্যক্তির বাধার মুখে তাকে হত্যা করতে তারা ব্যর্থ হয় বলে জানান জয়। ওই সময় সাকিল নামের এক কিশোর গ্যাংকে জয় জাপটে ধরে। পরে তিনি ঘটনাটি আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসানকে জানান।
গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাং সদস্য সাকিলের দেওয়া তথ্যমতে- ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূলহোতা জয়ের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী লাইজু বেগম ও তার ভাড়াটিয়া কিশোর গ্যাং সদস্য রাকিবুল ও অলি হাওলাদারকে গ্রেফতার করে।
এ ঘটনায় সোমবার সকালে ফরহাদ ইসলাম জয় বাদী হয়ে তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী লাইজুকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।
ফরহাদ ইসলাম জয় বলেন, রোববার রাতে মেয়ে কথা বলবে বলে আমাকে মোবাইল ফোনে তার দাদার বাড়ি উতসীতলা যেতে বলে। আমি সরল বিশ্বাসে ঘটনাস্থলে গেলেই লাইজুর পরিকল্পনা মোতাবেক লাইজু ও তার ভাড়াটিয়া ৬-৮ জন কিশোর গ্যাং আমাকে মারধর শুরু করে; কিন্তু ওই সময় স্থানীয় এক লোক দেখে ফেলায় তারা আমাকে হত্যা করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, তারা আমার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ ১৩ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে।
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, গ্রেফতার চারজনকে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।